স্মার্টফোনে ডার্ক মোড: চোখের উপকার নাকি লুকানো বিপদ?
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৫, ০৩:৩৮ PM , আপডেট: ১৪ জুন ২০২৫, ১০:৫৪ AM

স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে ডার্ক মোড এখন দারুণ জনপ্রিয়। রাতের অন্ধকারে ফোন ব্যবহার সহজ করতে অনেকেই এই ফিচার ব্যবহার করেন। চোখের আরাম, ব্যাটারি সাশ্রয় এবং স্টাইলিশ লুক সব মিলিয়ে ডার্ক মোড যেন প্রযুক্তিপ্রেমীদের নতুন সঙ্গী। কিন্তু এই আরামের আড়ালে কি লুকিয়ে আছে চোখ ও শরীরের ক্ষতির ঝুঁকি?
ডার্ক মোড কী এবং কেন জনপ্রিয়
মূলত, ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ড কালো করে দেওয়া হয় ডার্ক মোডে, যাতে লেখা বা কনটেন্ট হালকা রঙে দেখা যায়। অনেকেই বিশ্বাস করেন, এতে চোখে কম আলো পড়ে এবং চোখের ওপর চাপ কম পড়ে। সেই সঙ্গে অ্যামোলেড ডিসপ্লের ফোনে এটি ব্যাটারি সাশ্রয়েও সাহায্য করে।
ডার্ক মোডের সম্ভাব্য উপকারিতা
চোখে কম আলো পড়ে বলে সাময়িক আরাম পাওয়া যায়। কিছু ব্যবহারকারীর চোখে শুষ্কভাব কমে। ব্যাটারির আয়ু বাড়ে, চার্জ দীর্ঘস্থায়ী হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডার্ক মোডের সুবিধার পাশাপাশি রয়েছে কিছু গোপন ক্ষতি:
ঘুমের সমস্যা ও নিদ্রাহীনতা
চোখ থেকে মস্তিষ্কে যে সিগন্যাল যায়, তা আলো ও অন্ধকারের ওপর নির্ভর করে। নিয়মিত ডার্ক মোড ব্যবহারে মস্তিষ্ক বুঝতে পারে না কখন রাত, কখন দিন। ফলে মেলাটোনিন হরমোনের নিঃসরণে সমস্যা দেখা দেয়, ঘুমের রুটিন বিঘ্নিত হয় এবং নিদ্রাহীনতা দেখা দিতে পারে।
সার্কাডিয়ান রিদমের ব্যাঘাত
শরীরের প্রাকৃতিক দেহঘড়ি বা ‘সার্কাডিয়ান রিদম’ লঙ্ঘিত হলে শারীরিক ও মানসিক নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। কম ঘুমের কারণে দেখা দিতে পারে ক্লান্তি, হতাশা ও মনোযোগের অভাব।
আরও পড়ুন: ২০৩০ সালের আগেই যেসব চাকরি দখল করবে এআই
গ্লুকোমা বা ছানি হওয়ার ঝুঁকি
দীর্ঘসময় অন্ধকারে স্মার্টফোন ব্যবহারে চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়ে। এতে গ্লুকোমা বা ছানির মতো সমস্যার ঝুঁকি তৈরি হয়, এমনকি কম বয়সেই।
বিষমদৃষ্টি ও দৃষ্টিভ্রম
যাদের অ্যাস্টিগম্যাটিজম রয়েছে, তাদের জন্য ডার্ক মোড হতে পারে সমস্যার কারণ। চোখে অতিরিক্ত চাপ পড়ে, তৈরি হতে পারে দৃষ্টিভ্রম।
আইরিশের প্রদাহ
ডার্ক ব্যাকগ্রাউন্ডে হালকা লেখা পড়তে গিয়ে চোখের আইরিশ পেশির ওপর চাপ পড়ে, যা প্রদাহের কারণ হতে পারে।
করণীয় কী?
দীর্ঘসময় ডার্ক মোডে কাজ না করে মাঝে মাঝে লাইট মোডে ফিরে আসুন। চোখে অস্বস্তি হলে ডার্ক মোড বন্ধ করুন। ফোনে ‘নাইট শিফট’বা ‘ব্লু লাইট ফিল্টার’চালু রাখুন। ঘুমানোর অন্তত ১ ঘণ্টা আগে ফোন ব্যবহার বন্ধ রাখার চেষ্টা করুন।
প্রযুক্তির সুবিধা অবশ্যই গ্রহণীয়, তবে সব কিছুরই একটি মাত্রা থাকা দরকার। ডার্ক মোড যেমন সুবিধাজনক, তেমনই অতিরিক্ত ব্যবহারে হয়ে উঠতে পারে স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ। তাই প্রযুক্তিকে নিজের উপকারে লাগাতে হলে সচেতন ব্যবহারই সেরা পথ।