২০৩০ সালের আগেই যেসব চাকরি দখল করবে এআই

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

এআই মানে শুধু ভবিষ্যৎ নয়, এটি এখনকার বাস্তবতা। এখনই সময় এআই শেখার, সম্প্রতি গুগল ডিপমাইন্ডের সিইও ডেমিস হাসাবিসের এই বক্তব্য যেন সময়ের এক সতর্কবার্তা। একটি নতুন প্রযুক্তি যখন আবির্ভূত হয়, তা যেমন সুযোগ নিয়ে আসে, তেমনি হুমকিও তৈরি করে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এই শতকের সবচেয়ে আলোচিত প্রযুক্তি। তবে এটি শুধু আলোচনায় সীমাবদ্ধ নেই। বাস্তব জীবনে এআই ইতোমধ্যে পাল্টে দিচ্ছে চাকরির ধরন, কাজের গতি এবং প্রয়োজনীয় দক্ষতার মানচিত্র।

চাকরির বাজারে বিপ্লব আনছে এআই
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (WEF) ‘ফিউচার অব জবস রিপোর্ট’ বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবীজুড়ে ১৭০ মিলিয়ন নতুন চাকরি তৈরি হবে। কিন্তু একই সময়ে বিলুপ্ত হবে ৯২ মিলিয়ন চাকরি। অর্থাৎ ৭৮ মিলিয়ন চাকরি যোগ হলেও, তার মানে এই নয় যে সবাই কাজ পাবেন। কারণ কাজের ধরন বদলে যাবে, বদলাবে প্রয়োজনীয় দক্ষতাও।

যেসব চাকরি ঝুঁকিতে আছে
ব্যাংক টেলার, ক্যাশিয়ার, প্রশাসনিক সহকারী, ডেটা এন্ট্রি অপারেটর, পোস্টাল কর্মী, টিকিট ক্লার্ক ইত্যাদি চাকরী ঝুঁকিতে থাকবে। এসব পেশা মূলত নিয়মিত, একঘেয়ে এবং পুনরাবৃত্তিমূলক কাজ নির্ভর। এআই ও অটোমেশন প্রযুক্তি এসব কাজে মানুষের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে দিচ্ছে।

আরও পড়ুন: হঠাৎ ফোনে সিগন্যাল হারিয়ে যাচ্ছে? জেনে নিন কারণ ও সমাধান

যেসব চাকরি বাড়বে
স্বাস্থ্যসেবা (নার্স, কেয়ারগিভার, কাউন্সিলর), প্রযুক্তি (এআই বিশেষজ্ঞ, ডেটা অ্যানালিস্ট, সফটওয়্যার ডেভেলপার), শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, সবুজ শক্তি (পরিবেশ প্রকৌশলী, নবায়নযোগ্য শক্তি বিশেষজ্ঞ), নির্মাণ ও কৃষি খাত, বিক্রয় ও গ্রাহকসেবা ইত্যাদি চাকরী বাড়বে। এই পেশাগুলোতে মানবিক বুদ্ধিমত্তা, সৃজনশীলতা এবং অভিযোজন ক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ। যা এখনো যন্ত্র পুরোপুরি আয়ত্ত করতে পারেনি।

দরকার নতুন ধরনের দক্ষতা
গুগল ডিপমাইন্ডের সিইও ডেমিস হাসাবিসের মতে, এখন থেকেই তরুণদের প্রযুক্তিকে শুধু ব্যবহার নয়, তার যৌক্তিক প্রক্রিয়াও বুঝতে হবে। শুধু জানলেই হবে না যে গুগল কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, বুঝতে হবে গুগল কীভাবে কাজ করে। প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলোর মধ্যে রয়েছে: এআই ও মেশিন লার্নিং জ্ঞান, বিশ্লেষণধর্মী চিন্তাভাবনা, অভিযোজনযোগ্যতা, সৃজনশীলতা, শেখার আগ্রহ, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা। 

তরুণদের কী করা উচিত
ওপেন সোর্স প্রজেক্টে যুক্ত হওয়া, এআই ও ডেটা সায়েন্সের ফ্রি অনলাইন কোর্স করা, প্রোগ্রামিং, STEM ও প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন। বাস্তব জীবনের সমস্যা নিয়ে কাজ করার অভ্যাস গড়া, শুধু সিলেবাস নয়, বাস্তব চর্চায় মনোযোগ দেওয়া। হাসাবিস বলেন, এই সময়টা শেখা, পরীক্ষা করা, ভুল করা আর আবার শেখার জন্য সেরা সময়। যারা এই সুযোগ নেবে, তারাই আগামী দিনে এগিয়ে থাকবে।

আরও পড়ুন: নকল ওষুধে জীবনহানি! জেনে নিন চেনার উপায়

এআইকে ভয় নয়, বোঝো এবং ব্যবহার করো
চাকরির দুনিয়া বদলাচ্ছে, এটা থামানো যাবে না। কিন্তু নিজেদের বদলানো সম্ভব। যারা শিখবে, মানিয়ে নেবে, প্রযুক্তিকে কাজে লাগাবে—তাদের জায়গা থাকবে ভবিষ্যতের দুনিয়ায়। আর যারা থেমে যাবে, পরিবর্তন মেনে নিতে পারবে না তারা পিছিয়ে পড়বে।

এআই কাজ কেড়ে নিচ্ছে না বরং বদলে দিচ্ছে কাজের ধরন। টিকে থাকতে হলে শুধু ডিগ্রি নয়, দরকার উপযুক্ত দক্ষতা ও মানসিক প্রস্তুতি।


সর্বশেষ সংবাদ