স্নাতক শেষে কৃষিতে যুক্ত, স্ট্রবেরি চাষে সফল ইমরান

স্ট্রবেরি ক্ষেতে ইমরান
স্ট্রবেরি ক্ষেতে ইমরান

সিরাজগঞ্জে পল্লীকানন নার্সারীতে স্ট্রবেরি চাষে করে সফল হয়েছেন মো. রেজাউল ইসলাম ইমরান নামের এক যুবক। বেড পদ্ধতিতে সুস্বাদু এবং রসালো স্ট্রবেরি চাষ করে বাম্পার ফলন দেখিয়ে তাক লাগিয়েছে এই যুবক। রাবিটিন জাতের এই স্ট্রবেরির স্বাদ এতটা চমৎকার যেকোনো জাতের স্ট্রবেরিকে হার মানাবে।

সদর উপজেলার রহমতগঞ্জ গ্রামের হাফেজ মো. সাইফুল ইসলামের ছেলে রেজাউল ইসলাম ইমরান। ২০১৭ সালে সিরাজগঞ্জ ইসলামিয়া সরকারি কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করে তিনি কৃষি কাজেযুক্ত হন।

জানা যায়, স্ট্রবেরি একটি বিদেশি ফল হলেও বর্তমানে সিরাজগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ হচ্ছে এই ফলটি। স্থানীয় বাজারসহ বিভিন্ন হাটবাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় প্রতিনিয়ত ফলটি আবাদের প্রতি ঝুঁকছেন চাষিরা। বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে অনেক কৃষক এখন সচ্ছল। এখানকার উৎপাদিত স্ট্রবেরি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

স্ট্রবেরি দেখতে আসা দর্শনার্থী আরিফ, শামিম, ফিরোজসহ অনেকে বলেন, রহমতগঞ্জে এত সুন্দর একটি স্ট্রবেরি বাগানের কথা শুনে দেখতে এসেছি। এছাড়াও স্ট্রবেরি চাষে সফলতার কথা শুনে আশপাশের নতুন উদ্যোক্তারা ও আসছেন।

আরও পড়ুন: জাপানি নামের ব্রান্ডে ঢাবির ছাত্র বাবা-ছেলের বাজিমাত

স্ট্রবেরি কিনতে আসা শহরের পাইকার লাল মিয়া বলেন, আগে অন্য জেলা থেকে স্ট্রবেরি আমদানি করতাম। পরিবহন খরচ দিয়ে দাম বেশী হত। এখন নিজ এলাকাতেই পাওয়া যাচ্ছে। ফলের কোয়ালিটি অনেক ভাল। দাম অনেক কম।

নার্সারির মালিক রেজাউল ইসলাম ইমরান বলেন, দীর্ঘদিন যাবত ফলজ, বনজ ঔষধি চারা বিক্রি করে আসছি। গত দুই বছর হলো স্ট্রবেরি চাষ শুরু করি। গতবার ২ বিঘা জমিতে করলেও এবার ৫ বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি আবাদ করেছি। ৫ বিঘায় ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ফলন ভালো ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ১৫ লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। এই মৌসুমে ৫ লাখ টাকা লাভের আশা করছি। তবে প্রথম পর্যায়ে প্রতি কেজি স্ট্রবেরি পাইকারি বিক্রি হয়েছে ১ হাজার থেকে ১১ শত টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৮ শত টাকা থেকে ৮৫০ টাকায়।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ক্ষেতে ফল কমে যাওয়ায় প্রতিদিন ২৮/৩০ কেজি স্ট্রবেরি বাজারজাত করা হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ক্ষেত থেকেই পাইকাররা নিয়ে যান।

New Project (9)

সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি অফিসার আবু হানিফ জানান, সদর উপজেলার রহমতগঞ্জে পল্লিকানন নার্সারিতে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফলের চারা বিক্রির পাশাপাশি বেড পদ্ধতিতে স্ট্রবেরি চাষ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলন খুব ভালো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জেলায় এর আগে কোনো নার্সারি বা কৃষি জমিতে স্ট্রবেরি চাষ হয়নি। গত ৩ থেকে ৪ বছর হলো স্ট্রবেরি চাষ শুরু হয়েছে। এবছর জেলায় ৯ থেকে ১০ জায়গায় কৃষি জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করা হয়েছে। স্ট্রবেরিতে লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। আগামীতে আরো বেশি স্ট্রবেরি চাষ হবে বলে তিনি আশা করছেন।

কৃষি বিভাগ বলছে, স্ট্রবেরিতে লাভ বেশী হওয়ায় কৃষকদের উৎসাহ করা হচ্ছে। আগামীতে আরও বেশী স্ট্রবেরি চাষ হবে বলে দাবি, কৃষি বিভাগের।


সর্বশেষ সংবাদ