২১ শিক্ষার্থীর পাইলট হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করছে ইউএস-বাংলা, যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রে

২১ শিক্ষার্থীর পাইলট হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করছে ইউএস-বাংলা
২১ শিক্ষার্থীর পাইলট হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করছে ইউএস-বাংলা  © সংগৃহীত

বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ২১ জনের পাইলট হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করছে। প্রশিক্ষণের জন্য তাদের যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হচ্ছে। এ জন্য যাবতীয় খরচ বহন করবে এয়ারলাইন্সটি। প্রশিক্ষণ শেষে চাকরিতে যোগ দিয়ে ১০ বছর মেয়াদে সেই অর্থ পরিশোধের সুযোগ পাবেন ২১ পাইলট। বাংলাদেশের মধ্যে ইউএস বাংলাই এ ধরনের প্রথম উদ্যোগ নিল।

মঙ্গলবার (২ মে) প্রথম টিমে একমাত্র মেয়ে সারা ও ৯ জন ছেলেসহ মোট ১০ জনের নবিশ পাইলট টিম আমেরিকার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন। 

ইউএস-বাংলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ( সিইও) লুৎফর রহমান বলেন, বিশ্বের প্রায় সব দেশের বিমান সংস্থাগুলো চাহিদার সঙ্গে পাইলট সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে পাইলট তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। অতিরিক্ত পাইলটের চাহিদা পূরণে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ২০২২ সালের শুরুতে স্টুডেন্ট পাইলট নিয়োগের পরিকল্পনা করে। 

এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর হিউম্যান রিসোর্সের বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিয়ে ২০২২ সালের মে থেকে জুলাই মাসে প্রায় ৬ হাজার ৫০০ প্রতিযোগীর মধ্য থেকে ২১ জনকে চূড়ান্তভাবে বাছাই করে কমিটি। ২১ জনের মধ্যে ১০ জন মঙ্গলবার রাতে প্রশিক্ষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন।

dhakapost

লুৎফর রহমান আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লোরিডায় অবস্থিত স্থির্না বিচের এপিক ফ্লাইট একাডেমিতে ১০ মাসের ফ্লাইট ট্রেনিং কোর্স করার জন্য ধারাবাহিকভাবে আগামী জুনে বাকি ১১ প্রশিক্ষণার্থী দেশ ত্যাগ করবেন। তারা ১০ মাস ফ্লোরিডায় থাকবেন এবং সেখানে প্রশিক্ষণ নেবেন। এ জন্য প্রতি পাইলটের প্রশিক্ষণ বাবদ খরচ হবে ৬৪ হাজার ডলার। 

ফ্লাইট ট্রেনিং কোর্স শেষ করার পর ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (এফএএ সিপিএল) প্রাপ্ত হবেন তারা। সফলভাবে ফ্লাইট ট্রেনিং শেষ করার পর ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফটের ট্রেইনি ফার্স্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন।

ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ইউএস বাংলা আজ যে উদ্যোগটা নিয়েছে, এটা আসলে পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই নিয়েছে। ইউএস বাংলা গত ১০ বছর ধরে অপারেশন্সে আছে। ২০১৪ সালে মাত্র দুইটি এয়ারক্রাফট নিয়ে শুরু করে বর্তমানে এর বহরে ১৯টি এয়ারক্রাফট আছে। বর্তমানে আমাদের প্রতিষ্ঠানে প্রায় দুই হাজার ৫০০ জনবল কাজ করছেন। এর মধ্যে ১৯০ জনের অধিক দেশি এবং বিদেশি পাইলট আছে। 

তিনি বলেন, ইউএস-বাংলায় ২ হাজার ৩৫০-এর অধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন, এর মধ্যে ১৯০ জনের অধিক দেশি ও বিদেশি পাইলট রয়েছেন। ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই দুটি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ নিয়ে যাত্রা শুরু করে ইউএস-বাংলা। বর্তমানে ৮টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও ৮টি এটিআর ৭২-৬০০সহ মোট ১৯টি এয়ারক্রাফট আছে বিমানবহরে। চলতি বছর দু'টি এয়ারবাস ৩৩০ এয়ারক্রাফটসহ আরো দু'টি এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

dhakapost

কামরুল ইসলাম আরও বলেন, যেকোনও বিমান সংস্থার বিমানবহরে এয়ারক্রাফট সংযুক্তির সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত পাইলটের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বহরে নতুন এয়ারক্রাফট সংযোজন ও নতুন রুটের ব্যাপ্তি ঘটানোর আগেই পাইলট নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করা এয়ারলাইন্সের পরিকল্পনারই অংশ। বর্তমানে আমাদের ইউএস বাংলার যেভাবে এক্সপানশন হচ্ছে, সেভাবে পাইলটেরও চাহিদা তৈরি হচ্ছে। বর্তমান সময়ে সারাবিশ্বে আমরা পাইলটের ক্রাইসিস দেখতে পাচ্ছি। 

কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আজ আমরা পাইলট দিয়ে শুরু করলেও আগামীতে ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টর থেকেও বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানোর পরিকল্পনা আছে। সবকিছু মিলিয়ে এভিয়েশনটাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স সব ধরনের এক্টিভিটিস নিয়ে কাজ করছে। দক্ষ জনশক্তি ছাড়া এভিয়েশনের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। সেজন্যই আমরা প্রশিক্ষণ নিতে পাইলটদের বিদেশে পাঠিয়েছি।’


সর্বশেষ সংবাদ