চতুর্থ হয়েও ঢাবিতে মাস্টার্স করার সুযোগ পাননি হিজবুল্লাহ, পুলিশে দেওয়ার কথা বলেছিলেন সাদেকা হালিম

আরেফিন মুহাম্মদ হিজবুল্লাহ ও সাদেকা হালিম
আরেফিন মুহাম্মদ হিজবুল্লাহ ও সাদেকা হালিম  © টিডিসি সম্পাদিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল পলিসিতে মাস্টার্স করার জন্য ৭৫টি আসনের বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষায় চতুর্থ হয়েছিলেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থী ও ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের সদস্য সচিব আরেফিন মুহাম্মদ হিজবুল্লাহ। তবে ভাইভাতে ভর্তির সুপারিশ না করে পুলিশে দিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন ভাইভা বোর্ডে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।

বুধবার (২১ মে) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এমন তথ্য জানান।

তিনি লিখেন, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সোশ্যাল পলিসিতে মাস্টার্স করার জন্য আমি অ্যাপ্লাই করেছিলাম। ৭৫টি সিটের বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষায় আমার মেধাক্রম ছিল ০৪। কিন্তু আমার গ্রাজুয়েশন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে থাকায় ভাইভা বোর্ডে সাদেকা হালিম আমাকে জিজ্ঞেস করেন, দেশে চলমান জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সময়ে আমি কোথায় ছিলাম। এবং আমাকে পুলিশে দিয়ে দেওয়ার কথাও বলেন।"

ওই স্ট্যাটাসে তিনি দাবি করেন, পরে তিনি চূড়ান্ত তালিকায় আর স্থান পাননি। ফলে সোশ্যাল পলিসিতে তার মাস্টার্স করা হয়নি।

এছাড়াও সম্প্রতি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরির অফার পেয়েও নিয়োগপত্র বাতিল করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন তিনি। তিনি লিখেন, "দুই দিন আগে ফেসবুকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে একজনকে ফ্যাকাল্টি হিসেবে নিয়োগপত্র দিয়েও ব্যাকগ্রাউন্ড চেকের নামে বাদ দিয়ে দেওয়ার ঘটনাটা দেখে নিজের সাথে ঘটা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আমলের কথা মনে পড়ে গেলো। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের ভূতগুলো এখনো আমাদের উপরে সওয়ার করেই আছে।"

"ফ্যাসিবাদের সময়ে যেই সর্বগ্রাসী ধর্মবিদ্বেষ ও ইসলামোফোবিয়া আমাদের উপরে চেপে বসেছিল, তার থেকে আমাদের এখনো মুক্তি মেলে নাই," তিনি যোগ করেন।

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার আগে মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করেন বলেও তিনি জানান তার ওই স্ট্যাটাসে। তিনি লিখেন, "দেশের কয়েকটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করা বন্ধুদের কাছ থেকে জানলাম, এইসব প্রতিষ্ঠানে ব্যাকগ্রাউন্ড চেক বলতে মূলত মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করা হয়। এসএসসি, এইচএসসির কোন একটি যদি মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে হয়, যেটা কিনা দাখিল বা আলিম নামে পরিচিত, তাহলে পরবর্তীতে অ্যাকাডেমিক ডিগ্রি যা-ই হোক না কেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদেরকে আর বিবেচনা করা হয় না।"

"আমি জানি না, অক্সফোর্ডের চাকরি ছেড়ে বাংলাদেশে পড়াতে আসতে চাওয়া আলোচিত ভদ্রলোকের স্কুল, কলেজ লেভেলে মাদ্রাসা আছে কিনা এবং এই ব্যাকগ্রাউন্ড চেকের কারণেই তাকে বাদ দেওয়া হলো কিনা। যদি তা হয়ে থাকে, তাহলে বলতে হবে, জুলাইয়ের মধ্য দিয়েও কিছুই বদলায় নাই এখনো। এমনকি UCL এর ডিগ্রি এবং অক্সফোর্ডে পড়ানোর প্রফেশনাল এক্সপেরিয়েন্সও চাপায়া যাইতে পারতেছে না স্কুল, কলেজ লেভেলে মাদ্রাসায় পড়ার ঘটনাকে।"

স্ট্রেইট ইসলামোফোবিয়ার অবসান হওয়া জরুরি উল্লেখ করে তিনি লিখেন, "জুলাইয়ের মধ্য দিয়ে এই চাপিয়ে দেওয়া বৈষম্য, স্ট্রেইট ইসলামোফোবিয়ার অবসান হওয়া জরুরি। এই অচলায়তন আমাদেরকে ভাঙতে হবে। আমরা ভাঙবো ইনশাআল্লাহ।"


সর্বশেষ সংবাদ