স্বৈরাচার হাসিনার অস্ত্র ছিল সাইবার নিরাপত্তা আইন : ছাত্র ইউনিয়ন

বিক্ষোভ সমাবেশের চিত্র
বিক্ষোভ সমাবেশের চিত্র  © টিডিসি ফটো

সাইবার নিরাপত্তা আইন বাংলাদেশের সাবেক প্রথানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের অস্ত্র ছিল বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) শাহবাগে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যাকারীদের একাধিক ট্রাইব্যুনালে দ্রুততম সময়ে বিচার করা, সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল ও সীমান্তহত্যা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে এমন বক্তব্য দেন সংগঠনটির নেতারা। 

বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে, স্বৈরাচার হাসিনার অস্ত্র ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ সংস্কার নয়, বাতিল করার দাবী জানান তারা। নেতারা বলেন, গণহত্যার বিচার, শহিদের সংখ্যা নির্ধারণ, শহিদ পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করাসহ সীমান্ত হত্যা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনির সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন, ‘একদিকে আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের আলাপ শুনতে পাই, আবার অন্যদিকে তারাই দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক সভা করে চলেছেন। আমরা তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশ বাকশালকে কখনো মানেনি, মানবেও না।’ 

তিনি আরো বলেন, সীমান্তে গত ১৫ বছরে ৬৫০ এর বেশি মানুষকে বিএসএফ-এর গুলিতে প্রাণ হারাতে দেখেছি। সীমান্তে আর একটি প্রাণও যেন না ঝরে, এমন পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের বিকল্প নেই। যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার দুজন মানুষকে নির্যাতন করে মেরে ফেলার ঘটনা আমরা দেখেছি। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, অপরাধীরও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার অধিকার আছে এবং তা যদি বর্তমান সরকার নিশ্চিত না করতে পারে তাহলে বৈষম্য ও শোষণহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম নিশ্চিতভাবেই ব্যর্থ হবে।

সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাগীব নাঈম বলেন, একাত্তরের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান যেমন বাকশাল গঠন করে মানুষের কন্ঠরোধ করেছিলো, তার কন্যাও সেই ধারা অব্যাহত রেখেছে। মাঝখানে বিএনপি এবং স্বৈরাচার এরশাদের সরকারও গণআকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে হেঁটেছে। গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণকারী হিসেবে আমরা যেমন সেই সরকারের প্রতি সহযোগীতার উদ্দেশ্যে এক হাত বাড়িয়ে রেখেছি, তেমনি আমাদের আমাদের দুচোখ সচেতন দৃষ্টি অব্যাহত রেখেছে। 

সরকার গণআকাঙ্ক্ষাকে বিপরীতে গেলে চুপ থাকবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের দেশে ফিরিয়ে এনে প্রয়োজনে একাধিক ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচার করতে হবে। ১৫ বছরে হাসিনা যেসব অস্ত্র ব্যবহার করেছে এদেশের মানুষের কন্ঠরোধ করতে, সে সবের অন্যতম সাইবার নিরাপত্তা আইন। স্বৈরাচারের অস্ত্র সংশোধন না করে তা ছুড়ে ফেলতে হবে, বাতিল করতে হবে।

সমাবেশে গণুভ্যত্থানের সময় আহত শিক্ষার্থীদের সহযোগীতায় এগিয়ে আসা রিক্সা শ্রমিক নাজ্জু শেখ বলেন, ছাত্রদের সাথে আমরাও মাঠে ছিলাম এবং নিজেদের সাধ্যমত তাদের সাহায্য করেছি। তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে স্বরচিত একটি কবিতা আবৃত্তি করেন।


সর্বশেষ সংবাদ