দক্ষিণ এশিয়ার সেরা গোলরক্ষকের বাড়ি এটি!

দক্ষিণ এশিয়ার সেরা গোলরক্ষক রুপনা চাকমার বাড়ি এটি
দক্ষিণ এশিয়ার সেরা গোলরক্ষক রুপনা চাকমার বাড়ি এটি  © সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ঘরে তুলেছে বাংলাদেশ। সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানী সরকাররা প্রতিপক্ষের জালে গোল বন্যা বইয়ে দিলেও বাংলাদেশের জাল ছিল সুরক্ষিত। এটা সম্ভব হয়েছে গোলবারের নিচে একজন অতন্দ্র প্রহরী থাকায়।

তিনি রুপনা চাকমা, বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের গোলরক্ষক। উচ্চতা মাত্র ৫ ফুট। কিন্তু এই উচ্চাতা দিয়েই দুর্দান্তভাবে গোল পোস্ট সামলে যাচ্ছেন রুপনা। এবারের সাফে তার হাত ফাঁকি দিয়েছে মাত্র একবার। দারুণ এই কীর্তির স্বীকৃতি হিসেবে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার জিতেছেন রাঙামাটি থেকে উঠে আসা এই ফুটবলার। রুপনার গায়ে এখন দক্ষিণ এশিয়ার সেরা গোলরক্ষকের ট্যাগ। 

তবে তার বাড়ির চিত্র দেখলে বোঝার উপায় নেই যে, সেটি দিক্ষণ এশিয়ার সেরা গোল রক্ষকের বাড়ি। বাঁশ, চাটাই আর টিনের তৈরি বাড়িটি কোনোমতে দাঁড়িয়ে আছে। একটিমাত্র কক্ষে চলে সব কাজ। নিজের বাড়ির এমনি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন রুপনা চাকমা। তবে শিরোপা জয়ের পর বাড়ির ব্যবস্থাওহচ্ছে তার।

রুপনা চাকমা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ রাঙ্গামাটি ডিসি স্যারকে আমাদের বাড়িতে গিয়ে আমার পরিবারের অবস্থা দেখে আসার জন্য। এ ছাড়া বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দকে আমাকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই আনন্দটা হয়তো বলে শেষ করতে পারব না- এখানে আর একটা কথা না বললে নয়, আমি আজ এই পর্যায়ে আসার জন্য যে সমস্ত স্যাররা আমাকে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতিও আমি চির কৃতজ্ঞ।

আজকে যারা আমাকে অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন এবং সাপোর্ট দিচ্ছেন, তাদেরকেও আমি অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আজকের দিনটা আমার জন্য বিশেষ দিন। ডিসি স্যার নিজেই আমার বাড়িতে গিয়ে ১.৫ (দেড়) লাখ টাকা চেক মায়ের হাতে প্রদান করলেন এবং আমার ছোট্ট বেড়ার ঘরটি ভেঙে একটি নতুন পাকা ঘর করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আরও আমাদের গ্রামে বাঁশের ভাঙা ব্রিজটা নতুন করে পাকা ব্রিজ করে দেওয়ার জন্য কথা দিয়েছেন।
 
 
জানি না এসব আমার পাওয়ার যোগ্য কিনা তবে আমি জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনতে চাই। সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের বাংলাদেশকে আমরা রিপ্রেজেন্ট করতে পেরেছি এবং শ্রেষ্ঠ গোলরক্ষক হিসেবে আমি নির্বাচিত হয়েছি। শুধু এখানে নয় আমি আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে চাই এবং বাংলাদেশের নারী ফুটবলকে আরো বড় আকারে রিপ্রেজেন্ট করতে চাই।
 
আশা করি আপনাদের এই রকম সাপোর্ট, অনুপ্রেরণা এবং আর্শিবাদ আমার মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে- আরও দূরে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সাহজ যোগাবে। ডিসি স্যারের সুস্থও সুন্দর জীবন কামনা করি।’

পুরো আসরে শাসন করে খেলা বাংলাদেশ ৫ ম্যাচে গোল দিয়েছে ২৩টি, বিপরীতে গোল হজম করেছে মাত্র একটি। সেটাও ফাইনালে এসে। আগের চার ম্যাচে প্রতিপক্ষকে দমিয়ে বারবার জাল খুঁজে নেওয়া বাংলাদেশের রক্ষণভাগেও হানা পড়েছে, গোলমুখে এসেছে শট। ভরসার গ্লাভসজোড়া দিয়ে সেসব সামলে নিয়েছেন রুপনা।


সর্বশেষ সংবাদ