অস্ত্রসহ গ্রেফতার স্কুলের প্রধান শিক্ষক, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
- ভোলা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:১৭ PM , আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:৫২ PM
ভোলায় রাজাপুর শান্তিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফায়েল আহমেদকে কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোন কর্তৃক গ্রেফতারের প্রতিবাদে শিক্ষার্থী ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৯ই ডিসেম্বর) বেলা ১২টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। বিক্ষোভ কর্মসূচির পরে শিক্ষক তোফায়েল আহম্মেদের মুক্তির দাবিতে জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান এর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন তাঁরা।
স্মারকলিপি গ্রহণ করে জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান বলেন, আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
জানা যায়, প্রধান শিক্ষক তোফায়েল আহমেদ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। সরকার পতনের পরও তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। গত ৮ ডিসেম্বর (বুধবার) দিবাগত রাতে ভোলা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড মাস্টারপাড়া ওই শিক্ষকের বাসা থেকে কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোন অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করেন। এ সময় তাঁর থেকে ২টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ২টি তাজা গোলা ও ৪টি হাত বোমাসহ একটি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে বলে প্রেসব্রিফিংয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেন কোস্টগার্ড।
এ সময় শিক্ষক সমিতির নেতারা বলেন, ৫ই আগস্টের পূর্বে গণহারে মিথ্যা মামলা দিয়ে যেরকম নিরীহ মানুষদেরকে গ্রেফতার করা হতো তারই পুনরাবৃত্তি হিসেবে তোফায়েল আহমেদকে গ্রেপ্তার করা। তোফায়েল আহমেদ একজন নম্র, ভদ্র ও আদর্শ শিক্ষক। তিনি সবসময় তার বিদ্যালয়ে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ছাত্র/ছাত্রী ও তার বিদ্যালয়ের সহকর্মীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন শিক্ষক। আমাদের সহকর্মী হিসেবে তাকে সবসময় বিনয়ী ও ভালো মানুষ হিসেবে চিনি। আজকে কোস্টগার্ড তাকে গ্রেপ্তার করে পুরো শিক্ষক সমাজকে বিতর্কিত করেছে। তিনি বেসরকারি শিক্ষক সমিতির উপজেলার সহ-সভাপতি হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তাঁরা আরো বলেন, গভীর রাতে তার বাসা থেকে গ্রেফতারের সময় তার কাছে থেকে একটি মোবাইল ও পাসপোর্ট ছাড়া কিছুই পায়নি। তাকে হয়রানির উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ও হাতবোমাসহ থানায় চালান দেওয় হয়েছে। এরকম সম্মানিত মানুষদের সমাজে অন্যায়ভাবে বিতর্কিত করা হলে ভালো মানুষ সমাজে বেড়ে উঠবে না। আমরা আমাদের সহকর্মী তোফায়েল আহমেদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। অন্যথায় ভোলাসহ সারা দেশে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবো।
শান্তির হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সমাজকর্মের সহকারী শিক্ষক আব্দুল গফফার বলেন, আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ভোলা সদর উপজেলার দুইবার আমীর ও দীর্ঘ বছর সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে আমার উপর অনেক ষড়যন্ত্র করা হয়েছিলো। তোফায়েল আহমেদ স্যারের সহযোগিতা ও তার সততায় আমাকে কেউ কিছু করতে পারেনি। আমার বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকগণ স্যারের নেতৃত্ব শিক্ষকতা করে আসছি। ওই শিক্ষকের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন তিনি।