মডারেশনে অবহেলা, এসএসসি প্রশ্নপত্রে ভুলের ছড়াছড়ি

এসএসসি পরীক্ষার্থী
এসএসসি পরীক্ষার্থী  © সংগৃহীত

দেশে বোর্ড পরীক্ষাগুলির মধ্যে অন্যতম একটি পরীক্ষা হচ্ছে এসএসসি। সকল বোর্ড পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র থেকে শুরু করে খাতা মূল্যায়ন সবগুলো ধাপ পালন করা হয় অত্যন্ত সতর্ক তার সাথে। তবে গত কয়েক বছর বছর ধরে এসব দায়িত্বে অবহেলা করছেন দায়িত্বরত শিক্ষকরা। যার ফলে প্রশ্নপত্রে ভুল পাওয়া যাচ্ছে অহরহ। এমনকি খাতা মূল্যায়নেও হচ্ছে ভুল।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর সারাদেশে একযোগে শুরু হয় এসএসসি পরীক্ষা। প্রথমদিন বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নপত্রে অনেক বানানই ভুল ছিল। ওই দিন ভুলে ভরা এ প্রশ্নেই পরীক্ষা দিয়েছে ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ পরীক্ষার্থী।

এবার ৪ নম্বর সেটের প্রশ্নে বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা নেওয়া হয়। প্রশ্নে দেখা গেছে, প্যারালিম্পিক বানানকে 'প্যরালিম্পিক', পাড়া-প্রতিবেশীকে 'পাড়াপ্রতিবেশী', বন্ধু-বান্ধবের বানান 'বন্ধুবান্ধবের', সংক্রমণকে 'সংক্রামন'; রবে না বানান 'রবেনা', রেজাল্ট হাতে বানানকে 'রেজালট হতে', কম বানান 'মম', ফ্যান্টাস্টিক বানান 'ফ্যাণ্টাস্টিক', হান্ড্রেড বানানকে 'হানড্রেট', মতো বানানকে 'মতে', অঙ্গ বানানকে অংঙ্গ, লাগে না বানান 'লাগেনা', সন্ধ্যা বানান 'সন্ধা', মহব্বত বানান 'মহববত', জানতাম না বানান 'জানতামনা' এবং কাকতাড়ূয়া বানান 'কাকতাড়ূয়া' লেখা হয়েছে।

এগুলো ছাড়াও, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর লালসালু উপন্যাসের ক্ষেত্রে ঔপন্যাসিকের নাম ওয়ালী উল্লাহ এবং উপন্যাসের নাম লাল সালু লেখা হয়েছে। একটি প্রশ্নের উদ্দীপকে আক্কাস আলীর নাম একবার 'আলি' লিখে পরের লাইনেই আবার 'আলী' লেখা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় পাবলিক পরীক্ষার বিভিন্ন দায়িত্ব পালনে শিক্ষকদের চরম গাফিলতি ও গুরুতর অনিয়মের ঘটনা বারবার ঘটছে।

রাজধানীর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধিক বাংলা শিক্ষক জানান, গত বছরও বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নপত্রে ভুল ছিল। কারও কোনও শাস্তির উদাহরণ না থাকায় বছরের পর বছর ভুলে ভরা প্রশ্ন পরীক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন: প্রেমের বিয়ে না মানায় আত্মহত্যা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের!

তারা আরও জানান, শুধু প্রশ্নপত্র প্রণয়ন বা মডারেশন নয়, পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনেও একশ্রেণীর শিক্ষক গাফিলতি করছেন। তারা ভুল প্রশ্ন বিতরণ করছেন, আবার কেউ দেরিতে প্রশ্নপত্র দিচ্ছেন। কোনও নিয়মনীতিই তারা মানতে চাইছেন না।

জানা গেছে, শিক্ষা বোর্ডগুলোর তালিকাভুক্ত মুখচেনা কিছু শিক্ষকই সব সময় প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও মডারেশন করার দায়িত্ব পান। ভুল করার পরও তাঁদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ২০১৯ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ইংরেজি প্রথম পত্রের নৈর্ব্যক্তিক অংশে সরাসরি একটি গাইড বই থেকে দুটি প্রশ্ন তুলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল।

গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষায় শিক্ষকদের দায়িত্ব অবহেলা ও গাফিলতি সম্পর্কে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সভাপতি ও ঢাকা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, পাবলিক পরীক্ষার দায়িত্ব পালনে কারও অবহেলা কিংবা শৈথিল্য দেখানোর সুযোগ নেই। প্রত্যেককেই তার কাজের দায়ভার নিতে হবে। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে বিধিমোতাবেক শাস্তি হবে। এ ক্ষেত্রে কোনও ছাড় নেই।


সর্বশেষ সংবাদ