জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনীতে প্রথম খুবির সাবেক ছাত্র বিজন হালদার

জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনীতে প্রথম খুবির সাবেক শিক্ষার্থী বিজন হালদার
জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনীতে প্রথম খুবির সাবেক শিক্ষার্থী বিজন হালদার  © টিডিসি ফটো

‘‘শুরুতেই ছিল নানা প্রতিবন্ধকতা। চারুকলা স্কুলের ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনে পড়াশোনার সিদ্ধান্তটা মোটেও সহজ ছিল না। পরিবার থেকে শুরু করে পরিচিত অনেকেই চেয়েছিলেন অন্য বিষয়ে পড়াশোনা করে সরকারি চাকরি করি। কিন্তু আমার মধ্যে শিল্প, সংস্কৃতির প্রতি ভালবাসা কাজ করতে শুরু করে।

একান্ত নিজের মনের টানে চারুকলায় ভর্তি হওয়ার জন্য খুলনা আর্ট একাডেমিতে কোচিং করা। প্রথমে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েও পরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি বিশেষ টানের কারণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। ভাস্কর্য বিদ্যার প্রতি বিশেষ ভালবাসা ও মনের টানে ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনে ভর্তি হওয়া। এরপরেই আসল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার।শিল্পী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করা খুব সহজ না।

মানুষ জন্ম থেকেই শিল্পী হয় না। দীর্ঘ চর্চা এবং কঠোর পরিশ্রম থেকে থেকে নিজেকে শিল্পী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করার সুযোগ আছে। এই বিশ্বাস থেকে আমার আর্টিস জার্নি শুরু।’’

এভাবেই বলছিলেন প্রথম কোন জাতীয় পর্যায়ের শিল্প প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেই প্রথম স্থান অর্জনকারী শিল্পী বিজন হালদার।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত পঞ্চম জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনী-২০২১ এ জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী শিল্পী বিজন। বিশ্ববিদ্যালয়টির চারুকলা স্কুল প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই পর্যন্ত প্রথম কোন শিক্ষার্থীর জাতীয় পর্যায়ের পুরস্কার অর্জন করেছেন।

সারা দেশের ১৩৫ শিল্পীদের জমাকৃত ২৫৪টি শিল্পকর্ম থেকে বাছাইকৃত ১০৭ শিল্পীর ১১৪টি শিল্পকর্ম দিয়ে সাজানো হয়েছে এ প্রদর্শনী। এদের মধ্যে ১৩ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।

বিজন হালদার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য ডিসিপ্লিন থেকে ২০১৭ সালে স্নাতক ডিগ্রি শেষ করে আইসিসিয়ার স্কলারশিপ নিয়ে মহারাজা সায়াজিরাও ইউনিভার্সিটি অফ বরোদা মত আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়েটিভ ভাস্কর্যের উপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষ করেন। তার বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়ায়।

বিজন হালদার বলেন, এটা ছিলো আমার প্রথম কোন জাতীয় পর্যায় প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ। সবই সম্ভব হয়েছে আমার পরিবার, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মন্ডলী,  বন্ধু-বান্ধব, সহপাঠীসহ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সিনিয়র এবং জুনিয়রদের সহযোগিতায়। তাদের ধন্যবাদ দিয়ে তাদের অবদান ছোট করব না। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য অনুষদে আমার শেখা শুরু, আর সেই শেখার পথকে দীর্ঘ করেছে মহারাজা সায়াজিরাও ইউনিভার্সিটি বরোদা মত আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়।

বিজনের এমন অর্জনে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মো. মনিরুল ইসলাম শিক্ষার্থীর বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় স্কুলের ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের ছাত্র বিজয়ের এরকম একটি সাফল্যে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।

তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা স্কুলটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নবীন। নবীন হলেও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রদর্শনীতে আমাদের ছাত্ররা নানা সাফল্য অর্জন করছে। তাদের ক্রিয়েটিভিটি দেখাতে পারছে, এজন্যে আমি আপ্লুত। বিজয়ী ছাত্রের প্রতি শুভেচ্ছা। আমি চাইবো চারুকলার স্কুলের প্রতিটি ডিসিপ্লিনের ছাত্ররা এরকম করে সাফল্য অর্জন করবে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করবে।


সর্বশেষ সংবাদ