শ্রমিক মায়ের সংগ্রামে এসিএস পরীক্ষায় ২৪তম বিক্রম

বিক্রম চাষা ও তার মা দীপালিদেবী
বিক্রম চাষা ও তার মা দীপালিদেবী  © সংগৃহীত

প্রথম শ্রেণিতে পড়ার সময় পিতৃহারা হন তিনি। সেই থেকে সংগ্রাম শুরু। তবে সদ্য আসাম সিভিল সার্ভিস পাশ বিক্রম চাষা (৩১) একে নিজের সংগ্রাম বলতে রাজি নন। বললেন, ‘সংগ্রাম করেছেন আমার মা। বাবা বাগানের অ্যাম্বুল্যান্স চালাতেন। একেবারে নিঃস্ব অবস্থায় মারা যান। বাধ্য হয়ে মা বাগানের কাজে যোগ দেন।’

দুটি পাতা একটি কুড়ি সংগ্রহ করেই দুই সন্তানকে আজকের জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন ভারতের কাছাড়ের ডলু চা বাগানের দীপালি চাষা। আর্থিক চাপে কত সময় ছেলেরা কাজ খোঁজার কথা ভেবেছেন। চোখ রাঙিয়ে তাঁদের পড়ার টেবিলে বসিয়ে রাখতেন দীপালিদেবী।

এমনকি ২০০৪ সালে মাধ্যমিক দেওয়ার কয়েক মাস আগে এক বার বাগান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দিনে এক বেলা খাবার জুটছিল না। তবু ছেলেদের কাজে নামতে দেননি দীপালিদেবী৷ সেই সুবাদেই বিক্রম অর্থবিদ্যায় এমএ করেন। পরে পিজিডিএম, বিএড।

২০১৩ সালে হাই স্কুলে চাকরি পান। ছাত্রদের পড়ানোর সঙ্গে নিজেও প্রস্তুত হচ্ছিলেন এসিএস পরীক্ষার জন্য। প্রথমবারেই পাশ। গত সপ্তাহে প্রকাশিত আসাম সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ২৪তম স্থান লাভ করেছেন তিনি।

বিক্রম বলেন, ‘দরিদ্র আর দুঃখকষ্টকে সঙ্গী করেই বড় হয়েছি। তাই যখনই যে দায়িত্ব পাব, সরকারি প্রকল্পকে তৃণমূল স্তরে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করব।”

এসিএস প্রত্যাশীদের কাছে তাঁর পরামর্শ, নিয়মিত পত্রপত্রিকা পড়তে হবে। বিশেষ করে, সম্পাদকীয় পাতা খুঁটিয়ে পড়া চাই। সাধারণ জ্ঞানের ৫০ শতাংশ ওখানেই উঠে যাবে। খুব বেশি বইপত্র কিনে পড়ার সুযোগ ছিল না বিক্রমের। বললেন, “নিয়মিত খবরের কাগজ পড়ে বেশ উপকার পেয়েছি।”


সর্বশেষ সংবাদ