হাবিপ্রবি ছাত্রদল নেতার ‘চাঁদা’ দাবি, অডিও ফাঁস

ফরহাদ ইসলাম ও ছাত্রদলের লোগো
ফরহাদ ইসলাম ও ছাত্রদলের লোগো  © টিডিসি সম্পাদিত

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) এক সেকশন অফিসারের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের এক নেতার চাঁদা চাওয়ার একটি রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সোমবার (২১শে জুলাই) দিবাগত রাত ২ টা থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের  বিভিন্ন গ্রুপে ২ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি অডিও ক্লিপ ভেসে বেড়াচ্ছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২ মিনিট ১০ সেকেন্ডের সেই অডিও ক্লিপে চাঁদা চাওয়া ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ফরহাদ ইসলাম আর সেকশন অফিসার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শাহ আলম। 

অডিও ক্লিপে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ফরহাদ ইসলামকে বলতে শোনা গেছে, ‘এখন লিয়ন ভাই যে আমাকে গালাগালি করতেছে। নাহ নাহ না ভাইয়ের সঙ্গে কোনো কথা না, ভাই এখন আর আমার কোনো কথাই শুনতেছে না বুঝছিস। তুই আমাকে দে, তুই কথা বল৷ আবেহ আমার কথা শোন, আমি বাঁশেরহাটেই আছি। তুই ওই টাকাটার ব্যবস্থা করতে পারবি? তুই লিয়ন ভাইয়ের নাম্বারে এখন ৫ হাজার টাকা দিতে পারবি?’

উত্তরে শাহ আলম একদিন পর টাকা দিতে চাইলে ফরহাদ বলেন, ‘তুই এখনই দিবি। এখন তোকে আজকে শেষ কথা বলি দিলাম, তুই লিয়ন ভাইয়ের নাম্বারে টাকাটা পাঠে দিস। আর আমার ছোট ভাই সামনে দাঁড়াই আছে তোকে নেয়ার জন্য। তোকে আমি সারাদিন ধরি বেড়াইলাম আমার কি কোনো দায়ভার নাই। তুই বলে আমার এই করি দিবি সেই করি দিবি। কাল সকাল বেলা তুই কাউকে দেইস তো, এখন ব্যবস্থা করতো ব্যবস্থা কর। এখন আমি কি লিয়ন ভাইয়ের কথা শুনতে পারবো বল, বালের কথা বলতেছিস৷ এখন তোর কথা শুনতে গিয়ে লিয়ন ভাইয়ের কথা শুনতে পারবো না। আমি এখন কথা শুনতে পারবো নাহ।’

এসময় শাহ আলম তাকে সরাসরি দেখা করতে বললে ফরহাদ বলেন,‘দেখা করবো তো তুই লিয়ন ভাইয়ের নাম্বারে আগে টাকা ঢুকা। বললাম তো ভাই, তুই টাকাটা আগে লিয়ন ভাইয়ের নাম্বারে ঢুকা, তারপর টাকা লাগলে মোর কাছে আসি নিয়ে যাইস। যেভাবে ছাত্রলীগ করছিলি,সেভাবেই টাকা দিবি।’

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ফরহাদ ইসলাম বলেন, ‘এবিষয়টা হচ্ছে শাহ আলম ছাত্রলীগ করতো। ও আমার ব্যাচমেট কিন্তু আমি সেকেন্ড টাইম দেয়ায় ওর জুনিয়র হয়ে গেছি। সেকেন্ড টাইম দিয়ে ভর্তি হওয়ার পর যখন আমি জিয়া হলে উঠতে যায়। তখন শাহ আলম বলে, বন্ধু এমনি তো উঠা যায় না। এই কথা বলে আমার কাছে ৮ হাজার টাকা ধার নেয়।’

তার এই কথার পর সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করে রেকর্ডটা ভাইরাল হয়েছে ওইটাতে তো আপনি ধার বা পাওনার কথা বলেননি। আর সেখানে আপনি লিয়ন নামে কাউকে টাকা দিতে বলছিলেন এমনটা কেনো? তখন তিনি বলেন, ‘লিয়ন ভাইয়ের সাথে আমার তেমন কোনো সম্পর্ক নাই, তাকে সেইভাবে চিনিও না। আর একজনের মাধ্যমে জানতে পারি যে, লিয়ন ভাইয়ের সাথে শাহ আলমের সম্পর্ক অনেক ভালো। তাই তার মাধ্যমে টাকাটা উদ্ধার করে দেয়ার জন্য তাকে বলি। যার ফলে আমি বারবার লিয়ন ভাইকে টাকা দেয়ার কথা বলেছি ৷ আর লিয়ন ভাই ২০১০-১১ সালের দিলে ছাত্রদলের ব্যানারে কাজ করেছিলো।

এখন শুনতেছি উনি নাকি তাঁতি লীগ করতো। এই বিষয়টা আমি অবগত ছিলাম না। আর এই রেকর্ড ১ বছর আগের এই রেকর্ডটা হয়তো আমাদের ছাত্রদলের যে বডিটা আছে তাদের বেশিরভাগই কিন্তু কোনো না কোনোভাবে বিতর্কিত হয়ে আছে তারাই আমাকে বিতর্কিত করার জন্য এই রেকর্ডটা সেন্ট্রালে পাঠিয়েছে৷ আমার ইমেজ তো ক্লিয়ার তাই কেউ হয়তো আমার আমাকে কালার করতে চাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শাহ আলম তো ভুক্তভোগী ও তো কোথাও অভিযোগ দেয়নি৷ সে এইটাও বলছে এটা চাঁদাবাজি না। তার রেকর্ড আমার কাছে আছে।’

ভুক্তভোগী সেকশন অফিসার শাহ আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত সকল নম্বরই বন্ধ পাওয়া গেছে। তার অফিসে গেলে জানা যায়, সাময়িক অব্যাহতি থাকায় তিনি অফিসে আসেন না৷


সর্বশেষ সংবাদ