জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ বর্ষ পরীক্ষায় কড়া নির্দেশনা
- আরফান আলী
- প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩৯ PM , আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৫, ০২:১৩ PM

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. এনামুল করিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ২০২৩ সালের অনার্স ৪র্থ বর্ষ পরীক্ষায় সংশ্লিষ্ট সকল কেন্দ্রের অধ্যক্ষ, পরীক্ষা কমিটি ও ইনভিজিলেটরদের উদ্দেশ্যে একগুচ্ছ বিশেষ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এতে পরীক্ষা গ্রহণ, প্রশ্নপত্র ব্যবস্থাপনা, উত্তরপত্র প্রেরণ ও নকল দমনে কঠোর নজরদারির কথা বলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রশ্নপত্র আনা, খোলা এবং উত্তরপত্র প্যাকেট তৈরির ক্ষেত্রে একাধিক গাফিলতি ও অনিয়ম ধরা পড়েছে। এর ফলে ফলাফল প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটে এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়।
নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়—
সঠিক প্রশ্নপত্র নিশ্চিত: পরীক্ষার দিন ট্রেজারি থেকে সময়সূচি অনুযায়ী সঠিক প্রশ্নপত্র প্যাকেট সংগ্রহ নিশ্চিত করতে হবে। প্রশ্নপত্র প্যাকেট কাটার আগে কোর্স কোড মিলিয়ে সঠিকতা যাচাই করা বাধ্যতামূলক। ভুল প্রশ্ন খোলা হলে সংশ্লিষ্ট অধ্যক্ষ ও পরীক্ষা কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইনভিজিলেটরের দায়িত্ব: অনেক ইনভিজিলেটর প্রবেশপত্র যাচাই না করে হাজিরাপত্র ও উত্তরপত্রে স্বাক্ষর করেন। এতে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও কোর্স কোডে ভুল থাকে। এসব বিষয়ে নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
উত্তরপত্র বান্ডেল ভুল: বান্ডেলের উপরের বিষয় ও কোর্স কোড অনেক সময় ভেতরের উত্তরপত্রের সঙ্গে না মিললে পরীক্ষকের মূল্যায়নে সমস্যা হয়। বান্ডেল তৈরির সময় সঠিক লেভেল ও কোড মিলিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে।
বহিষ্কৃত পরীক্ষার্থীর রিপোর্ট: বহিষ্কৃত পরীক্ষার্থীর রিপোর্ট ও উত্তরপত্র যথাযথভাবে পূরণ ও প্রেরণ করতে হবে। রিপোর্টে স্পষ্টভাবে কারণ উল্লেখ করতে হবে।
উত্তরপত্র গায়েব রোধ: পরীক্ষার্থীরা উত্তরপত্র লুকিয়ে নিয়ে যেতে বা বাড়িতে লিখে পরে সংযোজন করতে পারে। এজন্য পরীক্ষা শেষে সব উত্তরপত্র না পাওয়া পর্যন্ত পরীক্ষার্থীদের আসনে বসিয়ে রাখতে হবে। কোনো পত্র হারিয়ে গেলে তা ও ওএমআর ফরম আলাদাভাবে সংরক্ষণ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবহিত করতে হবে।
ভুয়া পরীক্ষার্থী ও মোবাইল নিষিদ্ধ: পরীক্ষার্থীরা যেন মূল প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড ছাড়া অংশ নিতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। মোবাইল ফোনসহ কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার শান্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
নকল রোধে প্রশাসনের সহায়তা: নকল প্রতিরোধে প্রয়োজনে জেলা প্রশাসনের সহায়তা নেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। নকল বা শৃঙ্খলা ভঙ্গ সংক্রান্ত অভিযোগ গোপনীয়ভাবে রিপোর্ট আকারে পাঠাতে বলা হয়েছে, যাতে রোল, রেজিস্ট্রেশন ও সেশন স্পষ্ট থাকে।
নির্দেশনায় পরীক্ষার সময় বিভিন্ন অপরাধ চিহ্নিত করে তার জন্য শাস্তির ধরণও নির্ধারণ করা হয়েছে—
পরীক্ষা কক্ষে কথা বলা, চিরকুট বহন, বেঞ্চে লেখা, ভুয়া পরীক্ষার্থী, মোবাইল ব্যবহার, প্রশ্নে উত্তর লেখা, ইনভিজিলেটরের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, উত্তরপত্র ছিঁড়ে ফেলা, প্রবেশপত্র গোপন করা ইত্যাদিকে অপরাধ হিসেবে চিহ্ণিত করা হয়েছে।
শাস্তি হিসেবে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার ফলাফল বাতিল থেকে শুরু করে ১, ২, ৩, ৪, এমনকি ৫ বছর পর্যন্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী পরীক্ষা শৃঙ্খলা কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।
সবশেষে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—পরীক্ষাকেন্দ্রে এসব নির্দেশনা নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দিতে হবে, যাতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তা জানেন এবং প্রয়োজনে প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়।