বাজেট সংকটে সংস্কার হচ্ছে না ইবির সীমানা প্রাচীর, বাড়ছে নিরাপত্তা ঝুঁকি
- ইবি প্রদায়ক
- প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪৬ PM , আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৫, ০৭:২৩ PM
নিরাপত্তার স্বার্থে সন্ধ্যায় বন্ধ হয় মেয়েদের হল। বিকাল ৪টার পরে প্রধান ফটকে থাকে কড়া পাহারা, যেন ঢুকতে না পারে বহিরাগতরা। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সর্বদাই সোচ্চার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রশাসন। অথচ সীমানা প্রাচীরের বেহাল দশা।
প্রাচীরের উপরে নেই কাঁটাতার, একাধিক জায়গায় ভাঙ্গা ও জরাজীর্ণ। অবাধেই প্রবেশ করতে পারে বহিরাগতরা। এতে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে নিরাপত্তা শঙ্কা; দাবি উঠেছে প্রাচীর মেরামতের। তবে দীর্ঘদিন ধরে প্রাচীরের এমন ভঙ্গুর দশা হলেও প্রশাসনের কোনো মাথাব্যথা নেই বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এদিকে পর্যাপ্ত বাজেট না থাকায় সীমানা প্রাচীর সংস্কার হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
সবুজে ঘেরা ১৭৫ একরের ক্যাম্পাসের সীমানাপ্রাচীর তুলনামূলক নিচু ও ভাঙ্গা হওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ মনে করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও নিরাপত্তাকর্মীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন আর অবহেলার ফল আজকের এই জরাজীর্ণ নিরাপত্তা প্রাচীর।
সরেজমিনে দেখা যায়, কিছু অংশের সীমানা প্রাচীর একেবারেই নিচু। চাইলেই যে কেউ ঢুকে পড়ছে খুব সহজে। কোথাও গ্রিল নেই, তো কোথাও দেয়ালের অর্ধেক নেই। আবার কোথাও কোথাও ধসে পড়েছে পুরো সীমানাপ্রাচীর।
শাহ আজিজুর রহমান হল পকেট গেটের পূর্বপাশে প্রাচীরের একটা বড় অংশ ধসে পড়েছে পুকুরে। মীর মুগ্ধ সরোবরের পুরো দেয়ালটা তুলনামূলক নিচু, আবার এক জায়গায় একেবারেই নেই। হরহামেশাই ঢুকে পড়ছে বাইরের লোকজন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকেই এসব এলাকাকে নিজেদের জন্য অনিরাপদ বলে অভিযোগ করেছেন। বিশেষত নারী শিক্ষার্থীরা নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
শঙ্কা প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রাচীর ভাঙ্গা থাকার কারণে খুব সহজেই চোর প্রবেশ করতে পারে। যার ফলে মাঝে মাঝেই এ ক্যাম্পাসে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ছাড়াও অবাধে বহিরাগতরা চলাফেরা করে, যা আমাদের নিজেদের কাছে বিরক্তিকর লাগে। তাই প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, অতিদ্রুত সীমানা প্রাচীর মেরামত করে ক্যাম্পাস জুড়ে নিরাপত্তা আরও জোরদার করে।
এ বিষয়ে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা জানান, আমাদের কাজ গেটে নিরাপত্তা দেওয়া। আমরা যথেষ্ট নিষ্ঠার সাথে আমাদের দায়িত্ব পালন করি। তবে প্রাচীরের ভাঙা অংশ দিয়ে কে, কখন, কীভাবে প্রবেশ করে সেটা আমাদের সবসময় নজর রাখতে কষ্ট হয়ে যায়। আমরা চাই, প্রশাসন এ বিষয়ে নজর দিয়ে যেন দ্রুত এর সমাধান দেয়।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, শাহ আজিজুর রহমান হলের পূর্বপাশে জলাশয় থাকার কারণে বারবার প্রাচীর ধসে যায়। উপাচার্য নিজে বিষয়টি সরেজমিনে দেখছেন। নতুন বাজেট হলে সীমানা প্রাচীর সংস্কার করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম শরীফ উদ্দীন বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের কাছে সীমানা প্রাচীর মেরামতের জন্য আবেদন জানিয়েছি। পর্যাপ্ত বাজেট না থাকায় কাজ শুরু হয়নি। পরবর্তীতে প্রশাসন বাজেট দিলে আমরা সীমানা প্রাচীর মেরামতের কাজ শুরু করব।’
এ বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এই অর্থবছর শেষ হওয়ায় সীমানা প্রাচীর মেরামতের জন্য বাজেট নেই। নতুন অর্থবছরে নতুন করে বাজেট পাশ হলে ধসে যাওয়া ও নিচু প্রাচীরের কাজ শুরু করব। নতুন বছরে এটিকে আমরা মেগা প্রকল্প হিসেবে নিব।’