জবি কর্মচারী গোবিন্দ চন্দ্রের দোকানে তালা দিলেন ছাত্রদল নেতা

চায়ের দোকান ও অভিযুক্ত হাসান সজীব
চায়ের দোকান ও অভিযুক্ত হাসান সজীব  © সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর দোকানে তালা দিয়ে দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হাসান সজীব নামে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে। গত এক সপ্তাহ ধরে দোকানটিতে তালা দেওয়ায় দোকান খুলতে পারছেন না ওই কর্মচারী।

দোকানির অভিযোগ, সজিব দোকানটিতে তালা মেরে দখলে নিয়েছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন জানান, দোকানিকে ম্যানেজ করেই অভিযুক্ত দোকানটি নিয়েছে। অন্যদিকে, রনি নামক এক ব্যক্তির কাছ থেকে দোকানটি নেওয়ার দাবি হাসান সজিবের। 

অভিযুক্ত হাসান সজীব বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। 

হাসান সজীব দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘টিএসসির ওই দোকানটি মূলত রনি নামক একজন করত, তার কাছ থেকে জবির ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শফিউল এবং কর্মচারী গোবিন্দ চন্দ্র সরকার চাঁদা নিত। আর আমি রনির কাছ থেকে চাবি নিয়ে ওই দোকানটি নিয়েছি। আর  েগাবিন্দকে কোন ধরণের হুমকি বা নিষেধ করেনি। আর আমি কোন দোকান দখল করেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘৫ আগস্টের জবির টিএসসিতে থাকা কোন দোকানদার কাউকে চাঁদা দিত না। তবে রনির কাছ থেকে প্রতি মাসে ৬ হাজার করে টাকা নিত গোবিন্দ ও শফিউল। আমি সর্বদা চাঁদার বিরুদ্ধে ছিলাম।’  

জানা গেছে, প্রায় ৫ বছর ধরে জবির সামনে থাকা টিএসসি নামক জায়গায় দোকান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী গোবিন্দ চন্দ্র সরকার, যিনি দৈনিক মজুরি ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেন। তবে গত সপ্তাহের শুরুর দিকে চায়ের দোকানটিতে তালা দেয় ছাত্রদল নেতা হাসান সজীব। এমনকি ফোন করে ওই কর্মচারীকে দোকান করতে নিষেধ করে। তবে গতকাল শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাতে দোকানে দেওয়া তালা ভেঙ্গে দোকান খোলেন গোবিন্দ, এরপরই দোকান খোলার খবর পেয়ে ছাত্রদল নেতা সজিব গোবিন্দকে ৫ মিনিটের মধ্যে ক্যাম্পাসে দেখা করতে বলে। কিন্তু সে ছাত্রদল নেতার সাথে দেখা করতে যায়নি। ভয়ে দোকান করছেন না জানান ভুক্তভোগী। 

এ বিষয়ে দোকানি গোবিন্দ চন্দ্র সরকার দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি ২০২১ সাল থেকে দোকানটি করে আসছি। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। দৈনিক মজুরি ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করি। যে টাকা পাই তা দিয়ে দুই বাচ্চা নিয়ে চলতে পারি না। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিউটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গায় থাকা ওই দোকানটিতে আমি চায়ের দোকান করি। এতে আমার সংসার চালাতে সহজ হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘দোকানটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা গত সপ্তাহে আমার দোকানে তালা দিয়েছে। আমাকে দোকানে যেতে এবং দোকান করতে নিষেধ করছে। এতে আমার সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমি আবারও দোকানটি করতে চাই, তাই আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। আমার দুই মেয়ে পড়াশোনা করে। একজন এবার এসএসসি দিচ্ছে। দোকান থেকে যে টাকাটা পেতাম তা দিয়ে বাচ্চা দুটোর পড়াশোনা চলত। এটাও যদি না থাকে তাহলে আমি কিভাবে চলব?।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা (জবি) ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমি যতটুকুন জানি দোকানটি ওই লোককে ম্যানেজ করে  নিয়েছে। আমি হাসান সজীবকে বলেছি দোকান যদি নিতে চাই তাহলে ডিড করে যেন নেয়।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence