ছাত্রলীগের কর্মসূচি ঘোষণার প্রতিবাদে নোবিপ্রবিতে বিক্ষোভ
- নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৪৭ PM , আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৫, ১১:১২ AM
নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মসূচি ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর ১:৩০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে শুরু হয়ে গোল চত্বর প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারের সামনে এসে শেষ হয়। এসময় মিছিলে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্রলীগের গুন্ডারা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর’, ‘ছাত্রলীগের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
মিছিল শেষে প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ, নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা এদেশের মানুষের উপর গণহত্যা চালিয়েছে। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে তারা বিদেশের মাটিতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। অথচ তাদের ন্যূনতম লজ্জাবোধ নেই। এখনো রাজনীতি করার স্বপ্ন দেখে যাচ্ছে।
তারা আরো জানান, বিপ্লবের পর ৬ মাস অতিবাহিত হতে চললেও তাদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি। যার ফলে তাদের স্পর্ধা ও সাহস বেড়ে গিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট আমাদের দাবি অবিলম্বে তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। যেসব লীগের দোসর প্রশাসনে বিভিন্ন জায়গায় এখনো অবস্থান করছে তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুর রহমান বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ দেশে আবারও অরাজকতা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে মাসব্যপী কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে। তাদেরকে বলতে চাই, দিবা স্বপ্ন দেখে লাভ নেই। ৫ই আগস্ট যেভাবে এদেশের ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে তোমাদের পরাজিত করেছে সামনেও অপতৎপরতা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করা হবে।
বক্তব্য দেয়ার সময় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ইসতিয়াক জামিল বলেন, সংগ্রামী ভাইয়েরা আপনারা জানেন, ছাত্রলীগ একটি নিষিদ্ধ সংগঠন। তবুও ছাত্রলীগ বাংলাদেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখে ভেবেছে, তারা আমাদের ছাত্র সমাজের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলবে। ২০২৪-এ বাংলায় আমাদের দু’হাজার ভাই-বোন শহীদ হয়েছেন। তাদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আমরা নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগকে রাজনীতি করতে দিবো না। আমি পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই, তারা এখনো সাবধান না হলে কঠিন ফল ভোগ করতে হবে। বাংলার জমিনে তারা কোনো রাজনীতি করার সুযোগ পাবে না।’
বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের মিশকাত বলেন, ৫ আগস্টেই আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে গেছে। নতুন করে আর তাদের ইতিহাস লেখার সুযোগ নেই। বাংলার মসনদ থেকে বিতাড়িত আওয়ামী লীগ ও স্বৈরাচার হাসিনার ভাগ্য ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে লিখে দিয়েছে। বাংলার জমিনে তাদের রাজনীতি করার অধিকার শেষ হয়ে গেছে। সুশীলতার কারণেই আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দুঃশাসন ১৬ বছর টিকে ছিল। এই ছাত্র-জনতা ৫ আগস্টে হাসিনাকে উৎখাতের মাধ্যমে পুনরায় স্বাধীনতা ফিরিয়ে এনেছে। যারা এ স্বাধীনতাকে নিয়ে পুনরায় টালবাহানা করবে, তাদেরকে কঠোরভাবে মোকাবেলা করব।
উল্লেখ্য, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে লিফলেট ও প্রচারপত্র বিলি, প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ, বিক্ষোভ সমাবেশ, সড়ক-রেল-জল ও বিমানবন্দর অবরোধ কর্মসূচি, দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করবেন তারা।