ইবি শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশের সময়সীমার সিদ্ধান্ত ঘিরে সমালোচনার ঝড়

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)  © সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলে প্রবেশের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে হল প্রশাসন। মেয়েদের ক্ষেত্রে মাগরিবের আজান হওয়ার ১৫ মিনিট এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে রাত ১১টার মধ্যে হলে প্রবেশের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। ব্যঙ্গাত্মক, হাস্যরসাত্মক মন্তব্য করে একদিকে সিদ্ধান্তকে নিয়ে ট্রল করছেন নেটিজেনরা অন্যদিকে সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলছেন একাধিক শিক্ষার্থী।

রবিবার (২২ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি ও শহিদ জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শেখ এ.বি.এম জাকির হোসেন প্রভোস্ট কাউন্সিলের ১৪০ তম সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন। তবে, সিদ্ধান্তের বিষয়টি সামনে আসার পরই শুরু হয় সমালোচনা। 

একাধিক শিক্ষার্থী ট্রল করে লিখেছেন, ১১ টা অনেক রাত হয়ে যায়, এশার আজানের ১৫ মিনিটের মধ্যেই ছেলেদের হলও বন্ধ করা হোক। এত সময় দিয়ে লাভ কি? ক্লাস শেষ হওয়ার সাথে সাথে হলে প্রবেশ বাধ্যতামূলক করা হোক। 

সাজ্জাদ হোসেন লিখেছেন, স্কুলের বাচ্চাদের মতো নিয়মকানুন। কলেজ লাইফেও এর থেকে স্বাধীন ছিলাম! বাংলাদেশে এমন নিয়ম কানুনের স্কুল আছে কি?

আসিফা ইশরাত জুই লিখেছেন, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করার যোগ্যতা ইবি প্রশাসনের কোনোদিনই হবেনা। এদের কাজ শুধু মুরগির বাসা বানানো।

নিশাত মনি বলেছেন, এসব সময়সীমা দিয়ে লাভ আছে? বরং মেয়েদের ঘরের বাইরে বের হওয়া নিষিদ্ধ করেন।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তুর্জ বিশ্বাস লিখেছেন, একাডেমিক সময় শেষ হওয়ার পরে তো হলের বাইরে আর কোন কাজ দেখিনা। বিকাল ৫ টায় হল বন্ধের জোরালো আবেদন জানাচ্ছি। একাডেমিক সময়ের বাইরে ছেলে-মেয়েদের হলের বাইরে কি কাজ? হলে বসে পড়াশোনা করুক সবাই। গরু-ছাগল চরানো শেষ হইলে সন্ধ্যার আগেই খোয়াড়ে ঢোকানো উচিত। 

মিফতাহুল জান্নাত লিখেছেন, মেয়েদের সিকিউরিটি নিয়ে প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক। কিন্তু ভয় টা তো ছেলেদের নিয়েই, ওদের আগে হলে প্রবেশ করতে হবে বা একই সাথে প্রবেশ করতে হবে। আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই। বাবা মা কি শুধু মেয়েদের নিয়ে চিন্তা করে? ছেলেদের নিয়েও করে। সিকিউরিটি তাদেরও দরকার আমার ভাইয়ের নিরাপত্তার বিষয়টা বিবেচনা করা হচ্ছে না কেন? প্রশাসন চুপ কেন? 

সাফওয়ান রহমান লিখেছেন, ইবি প্রশাসন যা যা করা উচিত তা করতেছেনা। কোন যুক্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিলো? মেয়েদের নিরাপত্তা ইস্যু আছে তা নিয়ে আমার কিছু বলার নাই। কিন্তু ছেলেদের হল কেন বন্ধ হবে? ইবির হলে ক্যান্টিন নাই, রাত জেগে পড়লে ক্ষুধা লাগতে পারে। এমনকি আমার শেখ রাসেল হলে খাবারের পানিও নাই। পানি আনতে হয় হলের বাইরের চাপকল থেকে। তাছাড়া এক হলের ছাত্র অন্য হলে গিয়ে বা পাশের মেসে গিয়ে পড়তে হতে পারে। এধরণের হাস্যকর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জোর দাবী জানাচ্ছি।

মোহাম্মদ ইউসুফ বলেছেন, হলে কারেন্ট থাকে না, জেনারেটর চালুর ব্যাবস্থা করুন, রিডিংরুমে পর্যাপ্ত পরিমাণ যায়গা থাকে না, রিডিংরুমের পরিধি বাড়ান, ডাইনিংয়ের খাবারের মান পরিবর্তন করেন। সেদিন ভিসি স্যার বললেন ১২ টা পর্যন্ত ক্লাসরুম আর লাইব্রেরি খোলা রাখবে, তারপর কি পোলাপান ডাইনা চত্বরে ঘুমাবে? লেকের নাম পরিবর্তন আর ১১টাই হলের গেট বন্ধ করে যদি মনে করেন অনেক কিছু করে ফেলছি, তাহলে জুলাই বিপ্লব করে লাভ কি হলো ভাই!

শেখ মামুন লিখেছেন, এখন আমার কী হবে! আমি যে রাত ২ টার পরে শেখপাড়া যাই চা খাইতে। প্রোভোস্ট কাউন্সিলের কাছে আরজি পেশ করছি, কোনোভাবে ক্লাসরুম গুলো হলের মধ্যে নিয়ে আসা যায় না! তাহলে কষ্ট করে আর ডিপার্টমেন্টে যাওয়া লাগতো না, ২৪ ঘন্টাই হলে থাকতে পারতাম।


সর্বশেষ সংবাদ