দুই কারণে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়   © ফাইল ছবি

‘গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আমার প্রথম পছন্দ ছিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। কিন্তু এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর মন হচ্ছে, এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত। শিক্ষার মূল শর্তই যেখানে শিক্ষক, সেখানে আমাদের বিভাগে কোনো নিজস্ব শিক্ষকই নেই। এক বছরে দুই সেমিস্টার শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও এক সেমিস্টার শেষ হয়নি। মনে হচ্ছে নিজ হাতেই নিজের জীবন নষ্ট করেছি।’ কথাগুলো বলছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগের এক শিক্ষার্থী।

২০২১-২২ শিক্ষবর্ষে ৩২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করা এ বিভাগটিতে প্রায় এক বছর পার হলেও এখনও কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। বর্তমানে বিভাগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। এছাড়া বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফৌজিয়া খাতুন এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ এইচ এম নাহিদ দু’টি কোর্স পড়াচ্ছেন।

বিভাগটির শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শিক্ষক সংকটে তাদের ক্লাস পরীক্ষা নিয়মিত হচ্ছে না। ফলে তারা অন্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় পিছিয়ে পড়ছেন। শুধু ক্রীড়া ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগই নয়, শিক্ষক সংকটে ভুগছে বিশ্ববিদ্যালয়টির অন্তত ১২টি বিভাগ। এর মধ্যে সম্প্রতি শিক্ষক সংকটসহ মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা না থাকায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে ফার্মেসি বিভাগে শিক্ষর্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল।

জানা গেছে, বিভাগটিতে বর্তমানে ২৫০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে মাত্র দু’জন শিক্ষক রয়েছেন। বিগত কয়েকমাসে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা একাধিকবার শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন। এছাড়া যেসব বিভাগে শিক্ষক সংখ্যা পাঁচ জন বা তার কম, তাদের মধ্যে রয়েছে ফোকলোর স্টাডিজ, ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ, সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, হিউম্যান রিসোর্চ ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, জিওপ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ফার্মেসি।

আরো পড়ুন: ইবি ছাত্রী নওরিনের মৃত্যুর ঘটনায় অবশেষে হত্যা মামলা

এসব বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষক সংকটে প্রতিটি বিভাগেই মাস থেকে এক বছরের সেশনজট রয়েছে। অনেক সময় পরীক্ষা দেরিতে নেয়া হচ্ছে। আবার কয়েকটি বিভাগে পরীক্ষার ফলাফল দিতে বছর পেরিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সালামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি শিক্ষক সংকটের দু’টি কারণ জানান। উপাচার্য দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমতি ছাড়া শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ নেই। কিন্তু তাদের কাছে যখন শিক্ষকের জন্য বলা হয়, তারা অনেক সময় শিক্ষক নিয়োগের অনুমতি দিতে বছর পার করে ফেলে। ততদিনে আমাদের দুই সেমিস্টার শেষ হয়ে যায়।

আবার দেখা যায় আমাদের অর্গানোগ্রামে শিক্ষকের পদ রয়েছে ১০টি। কিন্তু তারা ফান্ড ছাড় করেছে চারটি পদের। তাই চাইলেই শিক্ষক নিয়োগ দেয় সম্ভব হয় না, যোগ করেন তিনি।

উপাচার্য আরো বলেন, শিক্ষক নিয়োগের আরেকটি বড় বাঁধা হল বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন পরিস্থিতি। যখনই আমরা শিক্ষক নিয়োগের বোর্ড আহ্বান করি, তখনই তারা তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এমন কিছু করে যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। তখন আমরা বোর্ড বাতিল করতে বাধ্য হই।

সম্প্রতি কয়েকজন শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে দাবি করে উপাচার্য বলেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি কিছু্টা স্থিতিশীল থাকায় আমরা বেশকিছু নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন করেছি। এর মধ্যে ফার্মেসি এবং ক্রীড়া ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগের শিক্ষকও রয়েছেন। নিয়োগগুলো সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হলে আমরা অন্তত কয়েকটি বিভাগের শূন্য শিক্ষকের লজ্জা থেকে মুক্তি পাব।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence