২৫তম সমাবর্তন

২০ জনকে স্বর্ণপদক, ৮০১৯ গ্র্যাজুয়েটকে ডিগ্রি দিল নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি

  © টিডিসি ফটো

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) ২৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ৮ হাজার ১৯ জন শিক্ষার্থীকে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ২০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়েছে।

আজ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ঢাকার পূর্বাচলে চীন-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে দুপুরে এ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের পক্ষে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। 

পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করেন সমাবর্তন মার্শাল এবং গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. মামুন মোল্লা। 

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা ও সমাবর্তনের সভাপতি অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ২০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক ও ভাইস চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক প্রদান করেন। স্বর্ণপদক প্রাপ্তদের মধ্যে ২০২২ এবং ২০২৩ সালের স্নাতক ব্যাচের ভ্যালেডিক্টোরিয়ানদ্বয় তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। পরে শিক্ষা উপদেষ্টা অনুমোদনক্রমে উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী সমাবর্তন কার্যক্রম শুরু করেন। 

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা ও ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়া নির্ভর করছে আপনাদের উপর। আগামী প্রজন্মকে আশা, সম্মান এবং সাম্যের আলোকবর্তিকা হিসাবে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব আপনাদের।

উদ্বোধনী বক্তব্যে এনএসইউ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের কৃতিত্বের জন্য অভিনন্দন জানান এবং তাদের কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা এবং দৃঢ়তার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, গ্রাজুয়েটদের জীবনে আজ অনেক দিনের স্বপ্ন সফল হওয়ার দিন। তাদের কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের ফসল এই দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে আমরা সমবেত হয়েছি। আজ আমাদের সকলের জন্য গর্ব ও আনন্দের দিন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এনএসইউ উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী। উপাচার্য বলেন, একটি টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে আমাদের অভিন্ন দায়িত্বের কথা আমি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। এই ডিগ্রি নিয়ে, আপনারা কেবল স্নাতক নন, পরিবর্তনের এজেন্ট, শ্রেষ্ঠত্বের দূত এবং এনএসইউর মিশনের মশাল বহনকারী।

অনুষ্ঠানে স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্সের ডিন অধ্যাপক এ কে এম ওয়ারেসুল করিম, স্কুল অব হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেসের ডিন অধ্যাপক মো. রিজওয়ানুল ইসলাম, স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্সেসের ডিন অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন এবং স্কুল অব হেলথ অ্যান্ড লাইফ সায়েন্সেসের ডিন অধ্যাপক দীপক কুমার মিত্র ডিগ্রি প্রার্থীদের তথ্য মাননীয় শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টার হাতে তুলে দেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সরকার দেশকে একটি গণতান্ত্রিক শাসনের শান্তিপূর্ণ রূপান্তর করার চেষ্টা করছে। আমরা মনে করি ছাত্রজনতার এই অভ্যুত্থান সফল হবে যদি আমরা একটি সুন্দর আদর্শ গণতান্ত্রিক দেশে রূপান্তরিত হতে পারি। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় এবং এ দেশের সমগ্র শাসন ব্যবস্থায় মেধাতন্ত্রকে বহু বছর ধরে সবচেয়ে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। একই সময়ে আমরা আমাদের সাধারণ নৈতিকতার মানকেও অধঃপতিত করেছি। এই পরিস্থিতিতে আপনাদের বিশেষ অভিনন্দন প্রাপ্য, কারণ আপনারা সমস্ত প্রতিকূলতা অতিক্রম করে দেশের অন্যতম প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রি নেয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সাফল্য কামনা করে উপদেষ্টা অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের পাশাপাশি এনএসইউ’র বোর্ড সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তবে আইনি জটিলতায় এনএসইউ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চার জ্যেষ্ঠ সদস্য সমাবর্তনে উপস্থিত ছিলেন না। তারা হলেন- জনাব এম.এ কাশেম, রেহানা রহমান, বেনজীর আহমেদ ও মোহাম্মদ শাহজাহান।


সর্বশেষ সংবাদ