নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনে যুদ্ধের প্রেক্ষিতে অ্যাম্বাসাডর টক অনুষ্ঠিত

  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ শুরু থেকেই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার সমর্থক এবং ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাস্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। সোমবার (১৩ মে) বাংলাদেশে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতিতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাম্বাসাডর টক ‘গাজায় ইজরায়েলের যুদ্ধ: ফিলিস্তিনীদের চোখে শান্তির সংজ্ঞা’ অনুষ্ঠিত হয়। সাউথ এশিয়ান ইন্সটিটিউট অব পলিসি এন্ড গভারন্যান্স এর সেন্টার ফর পিস স্টাডিস এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।  

সিপিএস মূলত জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শান্তি ও সংঘর্ষ নিয়ে কাজ করে। এর অংশ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধ্যান ধারণা জানার লক্ষে অ্যাম্বাসাডর টক এর আয়োজন করে। গাজায় সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রেক্ষিতে এই আলোচনা ফিলিস্তিনের ভাষ্যমতে তার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং শান্তির বিভিন্ন সম্ভাব্য দিক তুলে ধরেছে। 

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক এবং সিপিএসের সদস্য ড. ইশরাত জাকিয়া সুলতানা এই অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। সিপিএসের সদস্য প্রফেসর ড. নোভা আহমেদ বলেন, ‘আমাদের আওয়াজ তুলে ধরার এখনই সময়। আমাদের আওয়াজ সামান্য মনে হলেও সম্মিলিতভাবে তা অনেক প্রভাব ফেলতে পারবে’।

ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বাংলাদেশীদের এই সমর্থনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘ফিলিস্তানীরা তো তাদের জন্মস্থান নিজেরা নিজেরা নির্ধারণ করেননি, অন্যান্য সাধারণ মানুষদের মত তারা মানুষ হিসেবে জন্ম নিয়েছে। আমাদের মত বাংলাদেশীরাও ১৯৭১ এ সংগ্রাম করেছিলেন, তবে তারা এই সংগ্রামে বিজয়ী হয়েছিলেন এবং আপনারা স্বাধীনতা লাভ করেছিলেন। আমাদের সারাজীবনব্যাপী এই শোষকদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হবে। এটি আমাদের সবার কর্তব্য। আমরা কারো সাথেই কোন ঝামেলায় জড়াতে চাই না। কিন্তু যায়োনিস্টরা আমাদেরকে নিজ আবাস থেকে বের করে দিয়ে আমাদেরকে এই অবস্থায় আসতে বাধ্য করেছে। পশ্চিমা দেশগুলো আমাদেরকে অধিকাংশ সময় মানবাধিকার, স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র নিয়ে শেখানোর প্রচেষ্টা চালায়। তবে  যেখানে তারা বর্ণ বা ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্যের সুযোগ দেয়, সেখানে তাদের এই শেখানোর অধিকার নেই বলে আমার বিশ্বাস। আমেরিকার শিক্ষার্থীরা গাজায় এই চলমান যুদ্ধের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ভিয়েতনাম যুদ্ধের মত গাজার এই সহিংসতা এই শিক্ষার্থীরাই থামাতে পারবে। ফিলিস্তিনিরা দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করে আসছে। তবে অতীতে কোন মিডিয়া না থাকায় তাদের এই দুঃখ দুর্বিষহ অবস্থার কথা কেউ জানতে পারত না, কোন ডকুমেন্ট হিসেবে থাকত না। তবে বর্তমান পরিস্থিতি আলাদা। মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মারফতে এখন সবাই এই গণহত্যা এবং ধ্বংসযজ্ঞের সাক্ষী। পণ্য বয়কট অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এই পণ্যসমূহ থেকে আসা লভ্যাংশ থেকে বুলেট ও অন্যান্য যুদ্ধ সরঞ্জাম ক্রয় করা হয়। তাই আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ এই পণ্যসমূহ বয়কট করার’।

এই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (আইসি) এবং ট্রেজারার প্রফেসর আব্দুর রব খান। তিনি তার বক্তব্যে সবাই যে ফিলিস্তিনিদের সাথে সমব্যাথী তা তুলে ধরে এই অন্যায়ের যোগ্য বিচার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি পদার্থবিজ্ঞানের সাথে তুলনা করে বলেন, ‘গতিবেগের শুরুতে আমরা বিশ্বাস করি কিছু না কিছু এখন ঘটছেই। বলতে গেলে এখন আমরা এই পরিস্থিতির মধ্যেই আছি’।

রাষ্ট্রদূত জানান যে, তিনি ফিলিস্তিনের শিক্ষার্থীদের জন্য ২৫০ টি আসনের আর্জি নিয়ে দেশের ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করার ইচ্ছা করেছিলেন। কিন্ত ইতোমধ্যেই, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় সহ ৯টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ৪০০ টি আসন এবং বৃত্তি ও ভাতার ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। এই ঘটনা ফিলিস্তিনীদের সাথে বাংলাদেশীদের একাত্বতার একটি দৃষ্টান্ত।

 

সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence