২৩ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করতে যাচ্ছে ইউজিসি
- শিহাব উদ্দিন
- প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:৩২ AM , আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:৩২ AM
আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে সম্পূর্ণ শিক্ষা কার্যক্রম স্থানান্তরিত না করলে ২৩টি বেসরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ ঘোষণা করবে তদারকি সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। একই সাথে ক্যাম্পাসগুলো অবৈধ ঘোষণা করা হবে। গত এপ্রিলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছিল।
চিঠি পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব), গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, শান্ত মরিয়ম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, দি মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা, আশা ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চিটাগাং।
ইউজিসি বলছে, ১২ বছর পূর্ণ হলেও এখনও দেশের ২৩টি বিশ্ববিদ্যালয় পুরোপুরিভাবে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হয়নি। কেউ আংশিকভাবে কেউবা নির্মাণাধীন কাজ দেখিয়ে বছরের পর বছর আউটার ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বিগত সময়ে নানাভাবে আলটিমেটাম দিলেও এখনো তারা প্রধান ক্যাম্পাসে যায়নি।
সে কারণে ইউজিসি থেকে এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে শোকজ করা হয়েছে। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ই শোকজের জবাবে নতুন করে আরও সময় বাড়ানোর অনুরোধ জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের পর ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাড়া অস্থায়ী সব ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম অবৈধ বলে বিবেচিত হবে। সেখানে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। এ নির্দেশনা অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এর ৭(২) ধারা অনুযায়ী, অনুমোদন পাওয়ার পর সাত বছর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অস্থায়ী ক্যাম্পাসে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। এই সময়ের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়া সম্ভব না হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আবেদন করে সময় বাড়াতে পারবে। এই সময় পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। তবে ১২ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়ায় শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউজিসি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১২ বছর পার হয়েছে কিন্তু স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি আমরা বারবার তাদের স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছি। তবে চিঠি পাওয়ার পরও এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্থায়ী ক্যাম্পাসে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সেজন্য এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। আমরা এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেব না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকবে। একই সাথে ক্যাম্পাসগুলো অবৈধ ঘোষণা করা হবে।
প্রসঙ্গত, দেশে অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১০৮টি। কিন্তু বর্তমানে ৯৯টির কার্যক্রম চলছে, এর মধ্যে ২০১০ সালের আগের আইনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ৫২টি। এগুলোর মধ্যে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চ আদালতে এক মামলার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে সরকার বন্ধ করে দেয়। অবশিষ্ট ৫১টির মধ্যে ২৮টি স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম শুরু করেছে। বাকি ২৩টি স্থায়ী ক্যাম্পাস বানায়নি। আবার কয়েকটি কোনো ধরনেরই পদক্ষেপ নেয়নি। এমন বাস্তবতায় স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম শুরু করতে ২০১০ সালের পর থেকে সরকার আলটিমেটাম দিয়ে আসছে।