আসলেই কি শিবির লুকিয়ে ও ছাত্রলীগে মিশে ছিল? যে ব্যাখ্যা দিলেন কেন্দ্রীয় সভাপতি

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম  © টিডিসি সম্পাদিত

গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ শাসনামলে প্রকাশ্য রাজনীতি করতে না পারা ছাত্রশিবির ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর শক্তভাবে ক্যাম্পাসগুলোতে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছে। এর আগে জুলাই আন্দোলন চলাকালে নিষিদ্ধও হয়েছিল এই ছাত্রসংগঠনটি। তবে নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হয়ে এই পুরো এক বছর কাজে লাগিয়েছে ছাত্রশিবির। যার প্রমাণ দিল ঢাকাসহ চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে। সবগুলোতেই তারা ভূমিধস জয় পেয়েছে।

তবে ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতারা প্রায়ই ছাত্রশিবিরের লুকিয়ে রাজনীতি ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন, করেন সমালোচনাও। তাদেরকে ‘গুপ্ত সংগঠন’ বলেও আখ্যা দিয়েছে ছাত্রদল। সম্প্রতি চ্যানেল আই-এর এ টক শো’তে অংশ নিয়ে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম খোলামেলা ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছাত্রশিবিরের সাথে ছাত্রলীগের কোনোরকম সম্পর্ক ছিল না। যারা এই কথাগুলো বলেন, আমি মনে করি অতীতে যে জুলুম হয়েছে এরকম এ্যালিগেশন ছাত্রলীগের যে জুলুম তার থেকেও বেশি হয়ে দাঁড়ায় আমাদের জন্য।

আরও পড়ুন: ছাত্রশিবিরের কর্মী-সমর্থক-সাথী কত লাখ, ধারনা দিলেন কেন্দ্রীয় সভাপতি

বিগত সময়ে শিবিরের লুকিয়ে রাজনীতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছর বা তার আগে ছাত্রশিবিরকে একটি হত্যাযজ্ঞ জায়গা থেকে দেখা হতো। আপনি যদি গত ১৫ বছর দেখেন ক্যাম্পাসগুলোতে আমাদের উপর যে নির্যাতন তা হত্যাযজ্ঞের শামিল। শুধু ২টি কেইস দেখলে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়।

প্রথমটি বুয়েটের আবরার ফাহাদ। এখন পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি যে তিনি ছাত্রশিবিরের সাথে অ্যাক্টিভলি ছিলেন। শুধুমাত্র তার কার্যক্রম ছাত্রশিবিরের সাথে মিলে যেতেন, তিনি একটু পরিশীলিত জীবনযাপন করতেন। ধর্মের বিষয়গুলো, ইসলামকে তিনি প্র্যাকটিস করছেন। এরপর তিনি আধিপত্য বিরুদ্ধে তাদের অসংগতি বিষয়গুলোকে নিয়ে কথা বলতেন। জাস্ট এই একটি ইস্যুকে নিয়ে তাকে ছাত্রশিবির বলা হলো এবং সারারাত নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।

দ্বিতীয়টি পুরান ঢাকার দর্জি দোকানের কর্মী বিশ্বজিৎ দাস। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ঘটনাটি জানেন। একটি হরতালের পিকেটিংয়ের সময় বিশ্বজিৎ ঘটনাস্থলে ছিলেন। তখন তাকে শিবির বলা হলো, পরবর্তীতে তিনি যখন বললো, আমি তো বিশ্বজিৎ। আমার নাম তো বিশ্বজিৎ। আমি হিন্দু। কিন্তু বলা হলো যে না তুমি শিবিরের হিন্দু শাখার সদস্য। এটা বলে তাকে প্রকাশ্যে মিডিয়ার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, তো একটি ছাত্রসংগঠন যখন এই রকম নির্যাতনের মুহূর্ত দিয়ে যায়। আপনি বলুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমাদের সম্মেলন করার মতো সুযোগ আছে? সুযোগ তো নেই আসলে। এমনকি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলন কেন, আমরা পাঁচজন কোথাও বসে একটু গল্প করবো একটু চা খাবো একটু আড্ডা দিবো এরকম অসংখ্য জায়গা থেকে গ্রেফতার করেছে। অলমোস্ট কয়েকশত কেইস পাবেন যে বিয়ের অনুষ্ঠানে দাওয়াতে গেছেন আমাদের কোনো ভাই। ইভেন যার বিয়ে তাকে পর্যন্ত গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে। এরকম হিউজ কেইস আপনি পাবেন।

‘তো সে জায়গা থেকে আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে নিয়েছি। এটা আমাদের সাংবিধানিক এবং এটা আমাদের কৃতিত্ব। এটাকে এ্যাপ্রিসিয়েট করা দরকার যে এরকম একটা জুলুম নির্যাতনের মধ্যেও আমরা যে আমাদের সাংবিধানিক বিষয়গুলো গণতান্ত্রিকভাবে ফলো করতে পেরেছি।’


সর্বশেষ সংবাদ