নির্বাচন ভবনের সামনে এনসিপির বিক্ষোভ সমাবেশ সমাপ্ত

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী  © টিডিসি ফটো

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে। বুধবার (২১ মে) দুপুর ২টায় দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেন। এদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন এবং দ্রুত স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে নির্বাচন ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে এনসিপি। 

ঢাকা মহানগর এনসিপির উদ্যোগে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।  সমাবেশের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দলটির কলাবাগান থানা শাখার প্রতিনিধি মাসুম বিল্লাহ। সকাল থেকেই ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে বিক্ষোভস্থলে এসে পৌঁছান। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হয়।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এনসিপির মিরপুর মডেল থানার প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বিষয়ে নির্বাচন কমিশন একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে আমরা এ কমিশনের পদত্যাগ ও পুনর্গঠন দাবি করছি। সারাদেশে স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রতিনিধির অভাবে নাগরিক সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তাই অবিলম্বে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে, যাতে মানুষের ভোগান্তি কমে।

গুলশান থানার প্রতিনিধি নূর ইসলাম জুয়েল বলেন, এক দল ১৭ বছর ধরে লুটপাট করেছে, আরেক দল ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু আমরা ইতোমধ্যে একটি বিপ্লব ঘটিয়েছি। এখন আমাদের প্রয়োজন একটি নতুন সংবিধান। সেই সংবিধানের ভিত্তিতেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন হতে হবে। এর আগে, কোনো জাতীয় নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না। ইসিকে প্রমাণ করতে হবে, তারা সত্যিকার অর্থেই নিরপেক্ষ।”

সমাবেশে বিএনপির উদ্দেশ্যে বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ক্ষমতাকে অবহেলা করেছে, যার ফল তারা পেয়েছে। দিল্লিতে পালিয়েছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা। বিএনপিও একই ভাষায় কথা বলছে। নিজেদের বড় ভেবে বসবেন না—রাস্তায় নামলে বোঝা যাবে, জনগণ কাকে চায়। 

বিএনপি নেতা দুদুকে উদ্দেশ্য করে তারা বলেন, আপনারা গত ১৬ বছরে কী করেছেন? আপনারা কি প্রস্রাব আটকে রেখেছিলেন, যে একটি বালুর ট্রাক পর্যন্ত সরাতে পারেননি। অথচ এখন বড় বড় কথা বলছেন। আপনাদের নেত্রী কিন্তু আমাদের আন্দোলনের কারণেই বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছেন।”

সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা ‘আপস নয় সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদি’, ‘নতুন ফ্যাসিস্টের ঠিকানা—এই বাংলায় হবে না’, ‘নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে’—ইত্যাদি স্লোগানে ইসি প্রাঙ্গণ মুখরিত করে তোলেন।

এদিকে সমাবেশ ঘিরে নির্বাচন কমিশন ভবন এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। সমাবেশ শেষ হলেও মোতায়েন রয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‍্যাব, কোস্ট গার্ড ও আনসার সদস্য। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় তারা সর্বোচ্চ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা। 


সর্বশেষ সংবাদ