জাতীয় ঐক্যের আহ্বান অবসরপ্রাপ্ত বিসিএস অফিসার্স ফোরামের
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫, ০৯:২৯ PM , আপডেট: ২৫ মে ২০২৫, ০৭:১৭ PM
বিপ্লবোত্তর সময়ে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হলে গণতন্ত্রের পরিবর্তে অগণতান্ত্রিক বা একনায়কতান্ত্রিক শাসন আরোপিত হতে পারে—এমন মন্তব্য করে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছে অবসরপ্রাপ্ত বিসিএস অফিসার্স ফোরাম।
শুক্রবার (২৩ মে) সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম, সহ-সভাপতি ড. খন্দকার রাশেদুল হক এবং মহাসচিব ড. মো. শরিফুল আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেন, ছাত্র-জনতার সম্মিলিত সংগ্রাম ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে ২০২৪ সালের সফল ‘জুলাই বিপ্লব’ সংঘটিত হওয়ার পর থেকে দেশের বিবদমান রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্য সংহত না হয়ে বরং নানা কারণে দুর্বল হয়েছে, যার ফলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আজ ঝুঁকির মুখে। আরব বসন্তের অভিজ্ঞতা আমাদের দেখিয়েছে, বিপ্লবোত্তর সময়ে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হলে গণতন্ত্রের পরিবর্তে অগণতান্ত্রিক বা একনায়কতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা পেতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে তারা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশের সকল রাজনৈতিক শক্তি এবং সাধারণ জনগণের প্রতি দশটি আহ্বান জানান:
১. জুলাই বিপ্লবের মৌলিক লক্ষ্য—ইনসাফ, ন্যায্যতা ও সুশাসন—নিশ্চিত করে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
২. বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোনো আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক আধিপত্যবাদী আগ্রাসনের প্রতিরোধে ছাত্র-জনতাকে সুসংগঠিত ও দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বেসামরিক ও সামরিক প্রশাসনের সদস্যদের জাতীয় স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।
৩. দ্রুততম সময়ে জনতার ঐক্য সুসংহত করার ভিত্তি হিসেবে ‘জুলাই সনদ ২০২৪’ ঘোষণা করতে হবে। এ লক্ষ্যে সকল রাজনৈতিক দলকে কার্যকর ও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে।
৪. বেসামরিক প্রশাসন ও সামরিক বাহিনীর সকল সদস্যকে জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আধিপত্যবাদী বা স্বার্থান্বেষী মহলের উসকানিতে কোনোভাবেই প্রভাবিত হওয়া যাবে না। প্রশাসনিক রীতি ও শৃঙ্খলাকে সম্মানের সঙ্গে মেনে চলতে হবে।
৫. আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী এবং বেসামরিক প্রশাসনকে আরও দৃঢ়, নিরপেক্ষ ও পেশাদার ভূমিকা পালন করতে হবে।
৬. প্রশাসনে বিগত দুঃশাসন-সমর্থিত, পদলেহী ও হঠকারিতায় লিপ্ত কর্মকর্তাদের দ্রুত শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে হবে এবং দেশপ্রেমিক ও সৎ কর্মকর্তাদের উচ্চ পদে নিয়োগ দিতে হবে।
৭. অন্তর্বর্তী সরকারকে মৌলিক সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে একটি সর্বজনস্বীকৃত ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নিতে হবে এবং এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহে অন্তত ন্যূনতম সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে।
৮. আগামীদিনের রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে সংস্কারমুখী করতে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে দ্রুত রাজনৈতিক সংলাপ শুরু করতে হবে।
৯. অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের রাজনৈতিক বিভাজন সৃষ্টি করে এমন কার্যক্রম থেকে সচেতনভাবে বিরত থাকতে হবে।
১০. আধিপত্যবাদী শক্তিগুলো কখনোই একটি গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চায় না। তাই জাতীয় ঐক্য ও সংহতি বজায় রেখে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব ধরনের সংগ্রামে প্রস্তুত থাকতে হবে।