বায়ুদূষণ রোধে ‘আউটডোর এয়ার পিউরিফায়ার’ কোনো সমাধান নয়: স্মার্ট এয়ারের প্রতিষ্ঠাতা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪৭ PM , আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫, ১২:২৭ PM
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, রাজধানীর বায়ুদূষণ কমাতে অন্তত ৫০টি স্থানে বাতাস বিশুদ্ধকারী যন্ত্র বা ‘এয়ার পিউরিফায়ার’ স্থাপন করা হবে। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের স্মার্ট এয়ারের প্রতিষ্ঠাতা বাউদেউইজন স্টার্ক বলেছেন, বাংলাদেশে ‘আউটডোর এয়ার পিউরিফায়ার’ কোনো সমাধান হতে পারে না।
আজ মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে নিজের প্রোফাইলে এ কথা বলেন তিনি।
পোস্টে স্টার্ক বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) বায়ুদূষণ রোধে শহরের বিভিন্ন স্থানে ৫০টি তথাকথিত “স্মগ টাওয়ার” (এয়ার পিউরিফায়ার) বসানোর পরিকল্পনা করছে। এ উদ্যোগটির পেছনে উদ্দেশ্যকে আমি প্রশংসা করি। ঢাকার বায়ুদূষণ একটি গুরুতর সমস্যা, এবং আমাদের তা মোকাবেলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু এয়ার পিউরিফায়ার স্থাপন করা কোনো সমাধান নয়।
এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, এই যন্ত্রগুলো মূলত ঘরের ভেতরে কাজ করে। কারণ ঘরের ভিতরের আবদ্ধ বাতাস বারবার ফিল্টার করা যায়। কিন্তু বাইরের বাতাসে প্রতি মুহূর্তে মিশে যাচ্ছে ধুলাবালি, যানবাহনের ধোঁয়া এবং তা বিস্তৃত হচ্ছে ব্যাপকভাবে।
তিনি আরও বলেন, খোলা রাস্তায় একটি এয়ার পিউরিফায়ার বসানো মানে, যেন ঢাকার মাঝখানে একটা এসি বসিয়ে শহর ঠান্ডা করার আশা করা। এটা বাস্তবে কাজ করবে না। এর প্রভাব শুধু যন্ত্রের কয়েক ফুট চারপাশে সীমিত থাকে।
স্টার্ক জানান, এই যন্ত্র চালাতে বিশাল অঙ্কের বিদ্যুৎ খরচ হবে, অথচ বাতাসের গুণমানের ওপর প্রভাব থাকবে প্রায় শূন্যের কাছাকাছি। এটা শুধু তাত্ত্বিক কথা নয়—ভারত চেষ্টা করেছে, চীনও চেষ্টা করেছে।
খোলা রাস্তায় এই যন্ত্রের কার্যকারিতা সম্পর্কে তিনি দিল্লির উদাহরণ দিয়ে বলেন, দিল্লিতে বসানো এক বিশাল স্মগ টাওয়ারের হিসাব অনুযায়ী, এটি প্রতি ঘণ্টায় শহরের মোট বাতাসের মাত্র ০.০০০০৭২% বিশুদ্ধ করতে পেরেছিল। এটা সমাধান নয়।
বায়ুদূষণের সমাধান হিসেবে তিনি কিছু বিকল্প উল্লেখ করে বলেন, সত্যিই যদি আমরা জনগণের জন্য ফ্রি এয়ার পিউরিফায়ার বসাতে চাই, তাহলে সেগুলো স্কুল ও হাসপাতালে বসানো উচিত—যেখানে মানুষ বাস্তব উপকার পাবে। আর যদি ঢাকাজুড়ে বায়ুদূষণ কমাতে চাই, তাহলে আমাদের আসল কারণগুলোর দিকে নজর দিতে হবে যেমন— অযোগ্য পুরোনো যানবাহন অপসারণ, ইটভাটা, বর্জ্য পোড়ানো ইত্যাদি।
তিনি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা স্মার্ট এয়ার বাংলাদেশ টিম ২০১৯ সাল থেকে বায়ুদূষণ নিয়ে কাজ করছি। আমরা খুবই আগ্রহী আপনার সঙ্গে বসে কথা বলতে—ডেটা, স্বল্পমূল্যের সেন্সর, ও প্রমাণভিত্তিক কার্যকর কৌশল নিয়ে, যেগুলো আসলেই পরিবর্তন আনতে পারে।
উল্লেখ্য, গতকাল (সোমবার) গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটির নগরভবনে ‘দূষণমুক্ত ন্যায্য নগর গঠনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ভূমিকা’ শীর্ষক পলিসি ডায়ালগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ ‘এয়ার পিউরিফায়ার’ বা বাতাস বিশুদ্ধকারী যন্ত্র বসানোর কথা বলেন। এসব যন্ত্র বসাতে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।