সেনাবাহিনীর দখলে সুদানের প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৩:০১ PM , আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৩:০১ PM

প্রায় দুই বছর পর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সুদানের নিয়মিত সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সেনারা প্রাসাদের দিকে অগ্রসর হয় এবং শুক্রবার (২১ মার্চ) তা দখলে নেওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে সুদানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও সামরিক সূত্র।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী এখন প্রাসাদের আশপাশে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে এবং আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) সদস্যদের ধাওয়া করছে। তবে এ বিষয়ে আরএসএফের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাজধানী খার্তুমের কিছু এলাকায় এখনো গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
জাতিসংঘ বলছে, দীর্ঘদিন ধরে চলা এই সংঘাত সুদানকে এক ভয়াবহ মানবিক সংকটে ফেলে দিয়েছে। দেশজুড়ে দুর্ভিক্ষ ও রোগব্যাধির প্রকোপ বেড়েছে। উভয় পক্ষের বিরুদ্ধেই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে, তবে আরএসএফের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগও রয়েছে। যদিও উভয় পক্ষই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
২০২৩ সালের এপ্রিলে যুদ্ধ শুরুর পর দ্রুত প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ও রাজধানীর অধিকাংশ এলাকা দখল করেছিল আরএসএফ। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেনাবাহিনী ফের আক্রমণ শুরু করে এবং নীল নদের তীরে প্রাসাদের দিকে এগিয়ে যায়।
বর্তমানে আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে খার্তুম, প্রতিবেশী ওমদুরমান এবং পশ্চিম সুদানের কিছু এলাকা। দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর শেষ শক্ত ঘাঁটি আল-ফাশির দখলের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলে সেনাবাহিনী দ্রুত মধ্য সুদানের দখল নিতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে দেশের পূর্ব ও পশ্চিম অংশের বিভাজন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে। তবে উভয় পক্ষই লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এবং শান্তি আলোচনা এখনো আলোর মুখ দেখেনি।
বেসামরিক শাসনে ফেরার প্রক্রিয়ায় ক্ষমতার লড়াইয়ের জেরে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান ও তার সাবেক ডেপুটি ও আরএসএফ কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান দাগলোর মধ্যে এই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। এতে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং ১ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘাত সুদানকে কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। দেশটির উত্তর ও পূর্বাংশ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দক্ষিণ ও পশ্চিমের বেশির ভাগ এলাকা আরএসএফের দখলে রয়েছে।