৩০ বছর ধরে এলাকার মুসলিমদের ‘ইফতার’ করান ভদ্রেশ্বর পরিবার

নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করছেন পরিবারের সদস্যরা
নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করছেন পরিবারের সদস্যরা  © সংগৃহীত

ত্রিশ বছর আগে ইফতারের আয়োজন শুরু করেছিলেন ভদ্রেশ্বর কোলের মা প্রয়াত আঙুরবালা। এক মুসলিম ফেরিওয়ালাকে বাতাসা, ভেজানো ছোলা-গুড় খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে শুরু করেন তার এই ইফতার আয়োজন। তবে তার মৃত্যুর ত্রিশ বছর পরও সেই আয়োজন চালু রেখেছে তার পরিবারের সদস্যরা। 

প্রায় ত্রিশ বছর ধরে রোজা চলাকালীন একটি দিন আশপাশের মুসলিম তাদের ইফতার সারেন ভদ্রেশ্বর বাড়িতে। সন্ধ্যার নমাজ শেষে এ বাড়িতেই রোজা ভাঙ্গেন আব্দুল আলিম, আরিফ কুরেশিরা।

বাড়ির বর্তমান সদস্যেরা জানান, সে সময়ে পাশের গ্রাম কোলড়ার বাসিন্দা এক মুসলিম ফেরিওয়ালা ঘুরে ঘুরে জামাকাপড় বিক্রি করতেন। তিনি প্রতি সন্ধ্যায় মালপত্র রেখে যেতেন ভদ্রেশ্বরের বাড়িতে। সকালে আবার ফেরি করতে বের হতেন। রমজান মাসের সন্ধ্যায় যখন ওই ফেরিওয়ালা ভদ্রেশ্বরের বাড়িতে আসতেন, তখন ইফতারের সময়। বাড়ির মালিক আঙুরবালা তাকে ইফতার করাতেন। আঙুরবালার মৃত্যুর পরে কয়েক বছর এ কাজ চালিয়ে যান ভদ্রেশ্বর। ২০০৬ সালে তার মৃত্যুর পরে তিন ছেলে চন্দ্রনাথ, উদয়শঙ্কর এবং অলোক বড় পরিসরে ইফতারের আয়োজন শুরু করেন।

আরও পড়ুন: পরিবারের সান্নিধ্যে কেমন কাটছে পবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ঈদ ছুটি?

এই এলাকার বিভিন্ন কল-কারখানায় অনেক শ্রমিক কাজ করেন। অলোক বলেন, এই সব মুসলমান শ্রমিকেরা তাদের পরিবার থেকে দূরে থাকেন। ইফতারের সময়ে পরিবারের সাথে থাকতে পারেন না। সে কারণে রমজান মাসের একটা দিন আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে ইফতারের আয়োজন করি। শ্রমিকদের একটা পারিবারিক পরিবেশ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

পরিবারের সদস্যেরা জানান, ইফতারের খরচ তিন ছেলে মিলে করেন। বাড়ির বউয়েরা নিজ হাতে রান্না করে খাবার পরিবেশন করেন। পরিবারের নবীন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরাও কাজে হাত লাগায়। কিছু প্রতিবেশীও আসেন।

ইফতারে যোগ দেয়া আরিফ বলেন, আয়োজন এবং আন্তরিকতা দেখে মনেই হয়নি অন্য ধর্মের পরিবারে বসে ইফতার করছি। মনে হল, নিজেরই সব আত্মীয়-স্বজন। এটাই তো আমার দেশ, যেখানে সব মানুষ এক।

সূত্র: আনন্দবাজার


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence