দেড় মাসের মাথায় প্রধানমন্ত্রীত্ব হারানোর শঙ্কায় লিজ ট্রাস 

লিজ ট্রাস
লিজ ট্রাস   © সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের দেড় মাসের কম সময়ের মাথায় প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন লিজ ট্রাস। নিজের গদি বাঁচানোর জন্য ঘনিষ্ট মিত্র ও অর্থমন্ত্রী কাওয়াসি কোয়ারতেংকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছেন তিনি। এতেও পার পাচ্ছেন না ট্রাস। নিজ দলের ভেতরেই তাঁর পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছেন বেশিরভাগ এমপি।

যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ডেইলি মেইল এই সংবাদ সামনে এনেছে। সোমবার (১৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডাউনিং স্ট্রিটের সতর্কতা সত্ত্বেও ব্রিটিশ আইনপ্রণেতারা এই সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করবেন বলে ডেইলি মেইল ​​জানিয়েছে। এর ফলে ফের সাধারণ নির্বাচনের দিকে যেতে পারে ইউরোপের প্রভাবশালী এই দেশটি।

আরও পড়ুন: আগামী বছরের এইচএসসি পরীক্ষা হতে পারে জুনে

অজ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে ডেইলি মেইল ​​জানিয়েছে, ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ১০০ জনেরও বেশি পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) লিজ ট্রাসের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে চিঠি জমা দিতে প্রস্তুত। এই চিঠি তারা কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব প্রতিযোগিতার আয়োজনকারী কমিটির প্রধান গ্রাহাম ব্র্যাডির কাছে জমা দেবেন।

কর ছাড়ের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে নির্বাচনের আগে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছিলেন ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। করপোরেট কর বাড়ানোর পদক্ষেপ বাতিলের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তিনি। সেই লক্ষ্যেই দেশের সর্বোচ্চ করদাতাদের উপর থেকে করের পরিমাণ ৪৫ শতাংশ কমিয়ে দেয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু মাত্র দশ দিনের মধ্যে সেই সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেন তিনি।

ইতোমধ্যে ট্যাক্স ইস্যুকে কেন্দ্র করে টানাপোড়েন তৈরি হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস শুক্রবার অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে কোয়াসি কোয়ার্টেংকে সরিয়ে দিয়েছেন। তার স্থলাভিষিক্ত হন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট।

রয়টার্স বলছে, কর কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত মাসে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের দৌঁড়ে জয়ী হন লিজ ট্রাস। তবে সেসব প্রোগ্রামের মূল অংশগুলোকে বাদ দেওয়ার পর এখন নিজের রাজনৈতিক জীবন বাঁচিয়ে রাখার জন্য কার্যত লড়াই করছেন তিনি।

দেশে–বিদেশে সমালোচনার মুখে গত রোববার ট্রাস ডেইলি সান–এ একটি নিবন্ধ লিখেছেন। এতে তিনি বলেছেন, ‘বাজারের ওপর আস্থা না রেখে আমরা কর ছাড়, উচ্চ প্রবৃদ্ধির অর্থনীতির পথে এগোতে পারি না।’ তাঁর এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন, ট্রাস এখন দুটি বিষয়ের মধ্যে ভারসাম্য ধরে রাখার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রথমটি, বাজারের আস্থা ধরে রাখা। দ্বিতীয়টি, নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের পতন ঠেকানো। এখন সময়ই বলে দেবে দিন শেষে ট্রাস কোনটি রক্ষা করতে পারেন।

 


সর্বশেষ সংবাদ