লাইভে সার্টিফিকেট ছেঁড়া সেই বাদশা এখন কৃষক

বাদশা মিয়া
বাদশা মিয়া  © সংগৃহীত

চাকরি না পাওয়ায় হতাশায় একাডেমিক সব সনদপত্র ছিঁড়ে ফেলা বাদশা মিয়া এখন পুরাদস্তুর একজন কৃষক। বেকারত্বের জীবন নিয়ে বাঁচার সংগ্রাম করছেন তিনি। সংসারের হাল ধরতে বাদশা শুরু করেছেন কৃষিকাজ। সামান্য আবাদি জমির ফসল দিয়ে কোনোরকমে দিনযাপন করছে তার পরিবার।

মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দর খাতা গ্রামের ধানখেতে দেখা হয় বাদশা মিয়ার সঙ্গে। তীব্র রোদ উপেক্ষা করে নিজের জমির ধান কেটে কাঁধে নিয়ে বাড়ির উঠানে নিয়ে আসছেন ওই যুবক। বৃদ্ধ বাবার সঙ্গে মাঠের কাজে সহযোগিতা করছেন।

এর আগে ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে নিজের শিক্ষা জীবনে অর্জিত সব একাডেমিক সনদপত্র ছিঁড়ে ফেলেন বাদশা। পরে তার ফেসবুক লাইভটি চারদিকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

বাদশা মিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দর খাতা গ্রামের বাসিন্দা মহুবার রহমানের ছেলে। অভাবের সংসারে ছয় ভাই–বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। ২০১৪ সালে তিনি নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তবে অর্থের অভাবে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে পারেননি।

আরও পড়ুন: ‘সার্টিফিকেট জীবনে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে’ বলেই ছিঁড়ে ফেলেন বাদশা

জানা যায়, বাদশা ২০০৭ সালে জিপিএ ৩.৯২ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে দাখিল, ২০০৯ সালে জিপিএ ৪.০৮ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে আলিম এবং ২০১৪ সালে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৪.০০ এর মধ্যে ২.৬৬ জিপিএ নিয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। 

বাদশা মিয়া বলেন, আমার বাবা খেয়ে না খেয়ে আমাকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা ও ছোট ভাইবোনদের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। বর্তমান সমাজে সবচেয়ে অসহায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত ছেলে। এরা না পারে চাকরি জোটাতে, আবার অর্থের অভাবে না পারে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে। তাই চুপিসারে ঢাকা ও বগুড়া শহরে প্রায় সময়ে রিকশা চালিয়ে উপার্জন করেছি।

সার্টিফিকেট ছেড়া নিয়ে তিনি বলেন, সনদ ছিঁড়ে ফেলার পর রোজ নামে একটি কুরিয়ার সার্ভিস আমাকে চাকরি দিয়েছিল। কিন্তু সেখানে তিন মাস চাকরি করার পর এক মাসের বেতন দেওয়ায় চাকরি ছেড়ে চলে এসেছি। অপর দিকে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঢাকায় কনস্ট্রাকশনের কাজে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে শ্রমিক হিসেবে আমাকে দৈনিক হাজিরায় কাজ দেওয়ায় তা ছেড়ে চলে আসি।

বাদশার বাবা মহুবার রহমান বলেন, চাকরির বয়সসীমা শেষ হওয়ায় বেশ কিছুদিন থেকে হতাশায় ভুগছিল বাদশা। দিনে দিনে হতাশা বেড়ে যাওয়ায় সে তার একাডেমিক সার্টিফিকেটগুলো কাউকে না জানিয়ে ছিঁড়ে ফেলেছে। বর্তমানে সংসার চালানো খুবই কষ্টকর। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence