তিন কারণে প্যানেল সম্ভব নয়— বলছে এনটিআরসিএ

এনটিআরসিএ লোগো ও প্যানেল প্রত্যাশীদের অনশন
এনটিআরসিএ লোগো ও প্যানেল প্রত্যাশীদের অনশন  © টিডিসি ফটো

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্যানেলের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে গত ৭৪ দিন ধরে শাহবাগে অনশন করছেন নিবন্ধনধারীরা। চাকরিপ্রার্থীদের এই দাবি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলোচনাও করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। তবে এখনো কোনো সুরাহা হয়নি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এনটিআরসিএ’র নিবন্ধন সনদ কোনো প্রার্থীকে চাকরির নিশ্চয়তা দেয় না। এটি শিক্ষক হওয়ার জন্য একটি সনদ কেবলমাত্র। ফলে প্যানেল প্রত্যাশীরা যে দাবি করছে সেটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। 

প্যানেল প্রত্যাশীরা বলছেন, এনটিআরসিএ ক্যাসিনো খেলে। তারা একাধিক আবেদনের মাধ্যমে প্রার্থীদের পকেট কাটে। আমরা সেটি বন্ধ করতে চেয়েছি। আমরা চাই একটি মাত্র আবেদনের মাধ্যমে সবার চাকরি হোক। যেখানে প্রথম নিবন্ধনধারীরা প্রাধান্য পাবে। পর্যায়ক্রমে সব নিবন্ধনধারীদের চাকরি হবে।

জানতে চাইলে প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের আন্দোলন চলবে। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ থেকে আমরা সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা না পাই ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

আরও পড়ুন: চলতি মাসে ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে মানববন্ধন

এদিকে এনটিআরসিএ বলছে, কয়েকটি কারণে প্যানেল করে নিয়োগ কখনোই সম্ভব হবে না। এজন্য বিষয়টি নিয়ে তারা সেভাবে ভাবছেন না। এমনকি এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কথাও বলতে চান না তারা। 

এনটিআরসিএ’র একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্যানেল বাস্তবায়ন না হওয়ার অন্যতম তিনটি প্রধান কারণ হলো-আইনগতভাবে প্যানেল সম্ভব নয়; প্যানেল প্রত্যাশীদের বয়স শেষ এবং তারা মেধাতালিকায় অনেক পিছিয়ে।

এই তিনটি কারণ ব্যাখ্যা করেছেন এনটিআরসিএ’র এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তবে তিনি তার নাম প্রকাশ করতে চাননি। ওই কর্মকর্তা জানান, এনটিআরসিএ’র নিয়োগ নীতিমালার কোথাও প্যানেলের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা নেই। ফলে প্যানেল করতে গেলে নতুন করে নীতিমালা তৈরি করতে হবে। সেটির আইনি ব্যাখ্যা দিতে হবে।

দ্বিতীয় কারণের ব্যাখ্যায় ওই কর্মকর্তা জানান, উচ্চ আদালতের সুনির্দিষ্ট রায় রয়েছে; বেসরকারি শিক্ষকদের চাকরি পাওয়ার সর্বোচ্চ বয়স ৩৫ বছর। যারা প্যানেলের দাবি করছেন তাদের সকলেরই বয়স ৩৫ বছরের বেশি। এই অবস্থায় প্যানেল হলে উচ্চ আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে যেতে হবে। যা কখনোই সম্ভব নয়।

তৃতীয় কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, প্যানেলের দাবিতে আন্দোলনরত মেধাক্রমে অনেক পিছিয়ে। সেজন্য তারা ইতোপূর্বে আবেদন করেও চাকরি পাননি। এনটিআরসিএ’র নীতিমালা অনুযায়ী যারা মেধাতালিকায় এগিয়ে থাকবে তাদের সুপারিশ করতে বলা হয়েছে। ফলে প্যানেলে কখনোই সম্ভব হবে না। কেননা মেধাতালিকায় পিছিয়ে থেকেও চাকরি পেলে যারা এগিয়ে রয়েছেন তারা রিট করবেন। তখন এনটিআরসিএ’র সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে।


সর্বশেষ সংবাদ