বিবিসি বাংলার সমালোচনা করলেন প্রেস সচিব

শফিকুল আলম
শফিকুল আলম  © সংগৃহীত

গত বছর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমচ্যুত হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অপকর্ম প্রতিবেদনে এড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ এনে বিবিসি বাংলার সমালোচনা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে তিনি বিবিসি বাংলার সমালোচনা করে একটি লেখা শেয়ার করেন।

প্রেস সচিব লেখেন, ‘মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক ও গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বিবিসি বাংলা সম্প্রতি এক সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপেক্ষা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয় যে, শেখ হাসিনা ভারতের দিকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তবে এতে তার পলায়ন ও তার শাসনামলে ঘটে যাওয়া অগণিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করা হয়নি।’

সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার শাসনামলে ঘটেছে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড, নির্বিচারে নির্যাতন, শিশু হত্যা, দুর্নীতি, অবৈধ গ্রেপ্তার এবং তিন হাজারের বেশি মানুষের গুম এবং এরই মাঝে তিনি দেশ ত্যাগ করে ভারতের দিকে চলে যান। তবে বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে এই বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই। তাদের ভাষায়, "আ.লীগ সরকার পতনের পর উনি ভারতের দিকে চলে যান’—এটি যেন অনেকটাই একটি সাধারণ বিবৃতি, যা হাসিনার শাসনের অন্ধকার দিকগুলোকে আড়াল করার চেষ্টা।’

শফিকুল আলম লেখেন, ‘গত সপ্তাহে বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ মানবাধিকার সংস্থা 'হিউম্যান রাইটস ওয়াচ' এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শেখ হাসিনা তার ১৫ বছরের শাসনামলে হত্যাকাণ্ড ও গুমের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে এর কোনো উল্লেখ নেই। তারা এটির পরিবর্তে, মনসুন বিপ্লবের (জুলাই বিপ্লব) পর সরকারি বাহিনীর দ্বারা চালানো গণগ্রেপ্তারের কথা আলোচনা করেছে। কিন্তু সত্যিই কি ওই সময়ে কোনো গণগ্রেপ্তার হয়েছে? গত ছয় মাসে কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে? বিশেষত ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ ভেঙে পুলিশ যখন গুলি চালিয়েছিল, তখন অন্তত ২৫,০০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।’

‘মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা শেখ হাসিনাকে একটি ‘আদর্শ প্ল্যাটফর্ম’ দিয়েছে’ উল্লেখ করে প্রেস সচিব লেখেন, ‘গতকাল, এটি একটি সংবাদ প্রচার করে এবং একটি ফটোকার্ড প্রকাশ করে। যেখানে বলা হয়, হাসিনা নয়াদিল্লিতে তার আস্তানা থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবেন।’

প্রকৃতপক্ষে, এটি (বিবিসি বাংলা) বাংলার কসাই শেখ হাসিনার জন্য একটি নিখুঁত প্ল্যাটফর্ম! বলেন তিনি।

বিবিসি বাংলার প্রতি প্রশ্ন রেখে শফিকুল আলম বলেন, ‘বিবিসি বাংলা কি নির্বাসিত বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে কখনো অনুরূপ প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে? হাসিনার স্বৈরাচারের সময় তারেক লন্ডনে কীভাবে সময় কাটাচ্ছিলেন, তা নিয়ে কি লেখা আছে? তার সাক্ষাৎকার নিয়েছে?’


সর্বশেষ সংবাদ