চাকরির কথা বলে পাঠায় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে, বাংলাদেশি নিহত

  © সংগৃহীত

সংসারে সচ্ছলতা আনতে রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন নাটোরের সিংড়ার হুমায়ুন কবির ও তার দুলাভাই রহমত আলী। কিন্তু সেখানে চাকরির নামে অংশ নিতে হয়েছিল ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে। সেখানে ২৬ জানুয়ারি ড্রোন হামলায় মৃত্যু হয় হুমায়ুন কবিরের। আর দুলাভাই রহমত আলী ফিরতে চান দেশে। পরিবারটি জানিয়েছেন, গত বছরের ২৮ অক্টোবর ড্রিম হোম ট্রাভেল অ্যান্ড টুরস লিমিটেড নামের ঢাকার একটি কোম্পানির মাধ্যমে তারা পাড়ি জমিয়েছিলেন রাশিয়ায়।

এদিকে ২৬ জানুয়ারি রাতে ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে পাঁচ দিন ধরে শুধু বিলাপ করে যাচ্ছেন হুমায়ুন কবিরের মা কারিমুন। তিনি বলেন, আমার ছেলে তো মারাই গেছে, এখন জামাইটা যেন ফিরে আসে। ছেলের লাশটা যেন দেশে ফিরে আসে সরকারের কাছে সেই দাবি জানাই। 

রহমত আলীর স্ত্রী বলেন, হাসান নামে এক দালালের মাধ্যমে সাইপ্রাস যাওয়ার কথা হয় আমার স্বামী এবং ভাইয়ের। কিন্তু তিনি সাইপ্রাসের ভিসা না দিয়ে বলেছেন রাশিয়া নিয়ে যাবেন। এর জন্য সৌদি আরবে গিয়ে দুই মাস থাকতে হবে, ওমরা করতে হবে। সেখান থেকে তাদের রাশিয়ার ভিসা দেবেন। আড়াই লাখ টাকার বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু রাশিয়া পৌঁছানোর পর সেখানকার দালাল তাদেরকে বিক্রি করে দেয়। এরপর সেখানে ট্রেনিং করিয়ে জোরপূর্বক যুদ্ধে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যুদ্ধে আমার একমাত্র ভাই মারা গেছে। আমার স্বামীর হাতের ওপর মারা গেছে। আমার স্বামী ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করে বলে, আমাকে বাঁচাও। আমরা এখন কি করব? কার কাছে বলব? 

এখন স্বামীকে হারিয়ে এক বছরের মেয়ে প্রীতিকে নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যত হুমায়ুনের স্ত্রী তারা বেগমের। তিনি বলেন, স্বামীকে হারিয়ে আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার স্বামী স্বর্ণ বিক্রি করে, টাকা পয়সা গুছিয়ে বিদেশ গিয়েছিল। কিন্তু কোনো স্বপ্ন পূরণ হলো না। সঙ্গে আমার ননদের জামাইও গিয়েছিল। সে বাঁচার জন্য বারবার ফোন করে আকুতি জানাচ্ছেন। কিন্তু আমরা দালালদের বললে তারা শুধু আশ্বাসে দিচ্ছেন, কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। আমি সরকারের কাছে দাবি করছি আমার স্বামীর লাশসহ ননদের জামাইকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হোক।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি এক গণমাধ্যম কর্মীর কাছ থেকে আমি জেনেছি। তবে ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ এখন পর্যন্ত আমাকে মৌখিক বা লিখিতভাবে জানায়নি। তারা বিষয়টি জানালে আসল ঘটনা বুঝতে পারব।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence