শহীদদের রক্তের প্রতি বেইমানি করা যাবে না: জামায়াতের আমির
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৭ PM , আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৫ PM
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শহীদদের রক্তের প্রতি বেইমানি করা যাবে না। চাঁদাবাজ-দখলদার হওয়া যাবে না। এটা যারা করবেন, তারা ঘৃণিত হবেন।
আজ শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে যশোর ঈদগাহ ময়দানে জেলা জামায়াতের কর্মী সভায় তিনি এ কথা বলেন।
দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে জামায়াতে আমির বলেন, একদল চাঁদাবাজি করে চলে গেছে। আরেক দল এসে করুক, আমরা চাই না। দেশে কি চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে? হাতবদল হয়েছে। এ জন্য তো এতে মানুষ শহীদ হননি। ফুটপাত, হাটঘাট, বালুমহাল, জলমহাল দখল, চাঁদাবাজিতে কোনো নেতাকর্মী পা দেবেন না।
তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজ ও দুঃশাসন মুক্ত, বৈষম্যহীন দেশ গড়তে জনগণ জামায়াতের দিকে তাকিয়ে আছে। ক্ষমতা নয়, সুশাসনের জন্য দেশবাসীর ভালোবাসা ও সমর্থন চাই। আমরা ন্যায় ও ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে চাই।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল
কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, গত ১৫ বছরে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। জামায়াত এমন শিক্ষা চায় যেখানে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া শেষ করে শুধু সার্টিফিকেট নয়, একটা চাকরি নিয়ে বের হবে।
আমির বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে আর কত চেতনা বিক্রি করবেন আপনারা। ৫৩ বছর জাতিকে দাসে পরিণত করেছেন। আমরা আর কারও দাসে পরিণত হব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী দেশবাসীর সেবা করা সুযোগ পেলে এদেশে চাঁদাবাজির অস্তিত্ব থাকবে না। দখলদারের অস্তিত্ব থাকবে না। ঘুষ থাকবে না। আমরা ফ্যাসিবাদ, সাম্রাজ্যবাদের প্রশ্রয় দেবে না- এমন জাতি গড়তে চাই।’
জামায়াত ইসলামীর আমির বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে দেশ দুঃশাসনে পরিপূর্ণ ছিল। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখন দুঃশাসন জুলুম করেছে। বিগত সাড়ে ১৫ বছর আওয়ামী লীগের দুঃশাসন, জুলুমের কষ্ট বেশি ছিল। বাংলাদেশ ও বিশ্বের মানুষ কল্পনা করতে পারেনি ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট রেজিমের পতন হবে। ফ্যাসিস্ট পতনের এই অর্জনের নেতৃত্ব আমাদের সন্তানদের। ফ্যাসিস্ট সরকার হাতুড়ি, হেলমেট বাহিনী, গুলি চালিয়ে তাদের কোটা আন্দোলনকে দমাতে চেয়েছিল। আমাদের বীর সন্তানরা বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। তাদের এই গৌরব, অভিভাবক হিসেবে আমাদেরও।’
আরও পড়ুন: ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতের তালিকায় আ.লীগ নেতার নাম, পেলেন আর্থিক অনুদান
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা যাদের চোর, ডাকাত হিসেবে চিনি, তাদের সক্ষমতা কতটুকু? কিন্তু কলমের খোঁচায় যারা যারা হাজার হাজার কোটি টাকা ডাকাতি করেছে, তারা বড় চোর-ডাকাত। আওয়ামী লীগ ও তার দোসরা ডাকাতি করে ব্যাংকগুলোকে ফোকলা করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলো ব্যবসায়ীদের পুঁজি দিতে পারছে না। অন্তর্বতী সরকার অর্থনীতিকে সচল করার চেষ্টা করছে। আমরা চাই অর্থনীতি আরও গতিশীল হোক। বাজারে সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার আরও উদ্যোগী হোক।’
দেশের সব মানুষের সমান অধিকার উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘দেশে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু বলে কিছু নেই। সবাই সাংবিধানিকভাবে সমান। ধর্ম-বর্ণ মিলেমিশে আমরা বসবাস করি। কেউ যদি আপনাদের সংখ্যালঘু বলে, চিৎকার করে বলবেন, আমরা রাষ্টের নাগরিক, সবার অধিকার সমান।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ দেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। তারাই সবচেয়ে বেশি নির্যাতন করেছে। ২০১৩ সালে জাতিসংঘে চিঠি লিখে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছিলাম। এখনো বলছি তদন্ত করুন। দোষী প্রমাণিত হলে নিজের বিচার দাবি করছি ‘
আরও পড়ুন: গান পাউডার ব্যবহার হয়েছে কি না—দেখতে ‘বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ’
যশোর জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক গোলাম রসুলের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন, মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, মাওলানা আজিজুর রহমান, ঝিনাইদহ জেলা আমির অধ্যাপক আলী আযম, সাতক্ষীরা জেলা আমির শহিদুল ইসলাম মুকুল, মাগুরা জেলা আমির এম বি বাকের, নড়াইল জেলা আমির আতাউর রহমান বাচ্চু, শহিদ আবদুল্লাহর পিতা আবদুল জব্বার, যশোর জেলা নায়েবে আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, যশোর পূর্ব জেলার সাবেক ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা আবদুল আজিজ প্রমুখ।