বক্তব্য প্রত্যাহার করলেন নুরুল হক নুর, তবে ক্ষমা চাননি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪১ PM , আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪১ PM
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামকে নিয়ে গণ-অধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুরের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ নিয়ে এ নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয় মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও নূরুল হক নূরেরে মধ্যে। এ অবস্থায় নিজের অবস্থান থেকে সরে এসে বক্তব্য প্রত্যার করলেন নূর। তবে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে ক্ষমা চাননি ডাকসুর সাবেক এই নেতা।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে এ তথ্য জানান তিনি।
পোস্টে নুরুল হক নুর লেখেন, ‘গতকাল ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাড. তাজুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে আমার বক্তব্যের তথ্যে বিভ্রাটে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় আমার বক্তব্য প্রত্যাহার করছি। চিফ প্রসিকিউটরের সঙ্গে আলোচনায় বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ায় গণহত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমে আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকব।’
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাসুদ রানার পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামকে নিয়ে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুরের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার সময় গণঅধিকার পরিষদ একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং তার একদল সহযোগী ও বহিরাগত ব্যক্তিদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে উসকানিমূলক ও মানহানিকর স্লোগান দিতে দিতে একটি মিছিল নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মূল প্রবেশ গেট দিয়ে জোরপূর্বক প্রবেশের চেষ্টা করেন। পরে ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বাধার মুখে ট্রাইব্যুনালে ঢুকতে না পেরে নুরুল হক নুর তার দলীয় কর্মীদের নিয়ে ট্রাইব্যুনালের গেটে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন। যেখানে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠকের ভিত্তিহীন, বানোয়াট, অসত্য এবং উসকানিমূলক কিছু অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশ করেন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার আনা এসব মিথ্যা অভিযোগ ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। নুরুল হক নুরের এই বক্তব্যের ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের মর্যাদা ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, নুরুল হক নুর ও তার দলীয় কর্মীদের এমন বেআইনি কার্যকলাপ সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। তার এই হঠকারী কার্যক্রমে জুলাই-আগস্ট গণহত্যার ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া প্রভাবিত ও বাধাগ্রস্ত করার শামিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে নুরুল হক নুর ও তার দলীয় কর্মীদের এই বেআইনি ও ষড়যন্ত্রমূলক কাজের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে অর্জিত নতুন এই বাংলাদেশে দুই সহস্রাধিক হত্যা ও অর্ধলক্ষ ভাইবোনের নির্যাতনের বিচার প্রক্রিয়ার জন্য পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও চিফ প্রসিকিউটর সম্পর্কে ব্যক্তি স্বার্থে এমন কার্যক্রম অনভিপ্রেত ও অগ্রহণযোগ্য। নুরুল হক নুর তার এই ভিত্তিহীন, অসত্য ও দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।