কেন্দুয়ার সাবেরুন্নেছা বালিকা উচ্চ  বিদ্যালয়

বিদ্যালয়ের সামনে নাক চেপে চলতে হয় ছাত্রীদের, দুর্গন্ধে ক্লাসে টেকা দায়

কেন্দুয়ার সাবেরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ময়লার ভাগাড়
কেন্দুয়ার সাবেরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ময়লার ভাগাড়  © টিডিসি ফটো

নেত্রকোনার কেন্দুয়া পৌর শহরে অবস্থান সুপরিচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাবেরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের। তবে প্রতিদিন এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হয় নাক চেপে। বিদ্যালয়টির সামনে থাকা ময়লার ভাগাড় থেকে উৎকট দুর্গন্ধ ছড়ানোয় এ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। মশা-মাছির উপদ্রবসহ দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশও। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে বিদ্যালয়ের ছাত্রীসহ আশপাশের বাসিন্দারা। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। 

১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টিতে এখন ১ হাজার ৩৫০ জন শিক্ষার্থী এবং ২৫ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়টির সামনেই সড়ক ঘেঁষে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দিন যত যাচ্ছে, রাস্তার পাশে ময়লার ভাগাড়ও বড় হচ্ছে। নষ্ট শাক-সবজি, হোটেলের পচা-বাসি খাবার, মুরগির উচ্ছিষ্ট এবং বাসা-বাড়ির ময়লাসহ সব ধরনের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। 

নষ্ট শাক-সবজি, হোটেলের পচা-বাসি খাবার, মুরগির উচ্ছিষ্ট এবং বাসা-বাড়ির ময়লাসহ সব ধরনের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যেই এগুলো পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। উৎকট গন্ধের কারণে ক্লাসরুমে বসে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীদের জন্য। পাশাপাশি নাক চেপে পার হচ্ছেন সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা পথচারীরাও।

অল্প সময়ের মধ্যেই এগুলো পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। উৎকট গন্ধের কারণে ক্লাসরুমে বসে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীদের জন্য। পাশাপাশি নাক চেপে পার হচ্ছেন সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা পথচারীরাও। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রুদেসা ও রিমির ভাষ্য, তারা স্কুলে যতক্ষণ থাকে, ততক্ষণ দুর্গন্ধের মধ্যে কাটাতে হয়। এ রকম অবস্থা অনেক দিন থেকে চলছে। এ স্কুলে ক্লাস করা অনেক কষ্টকর। 

অভিভাবক মো. আল আমিন ও জিয়াউল হক বলেন, দুর্গন্ধে টেকা যায় না। তারপরও জোর করে সন্তানদের স্কুলে পাঠান তারা। কর্তৃপক্ষের কাছে জোর আবেদন থাকবে, এখানকার ভাগাড় সরিয়ে অন্য কোথাও বসানো হোক। এমন চলতে থাকলে সন্তানদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে বলে মত তাদের।

পথচারী রেজাউল করিম বলেন, এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করলে দুর্গন্ধে বমি ভাব হয়। এ ভাগাড়ের পাশে বিদ্যালয় ছাড়াও পৌর ভবন ও দুধ মহাল রয়েছে। তাই দ্রুত এখান থেকে ময়লার ভাগাড় অন্যত্র সরানো প্রয়োজন।

 

বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, পৌরসভায় বারবার অভিযোগ জানানোর পরও এখান থেকে ময়লার ভাগাড় সরানো হয়নি। তাদের ক্লাস নিতে অনেক কষ্ট হয়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চান তারা। 

দুর্গন্ধের কারণে শিশুর মানসিক ও শারীরিক ঝুঁকি বাড়ে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অরুপ কুমার সরকার। তিনি  বলেন, ময়লায় মশা-মাছিসহ নানা ধরনের পোকামাকড় থাকে। এ কারণে শিশুদের পেটের পীড়া, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে। 

আরো পড়ুন: ডিমের দাম কমেছে ডজনে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা

সাবেরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোখলেছুর রহমান বাঙ্গালী বলেন, ‘দুর্গন্ধের কারণে দরজা-জানালা বন্ধ করে ক্লাস নিতে হয়। তারপরও সম্ভব হয় না। এত দুর্গন্ধ! এভাবে চলতে থাকলে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে যাবে। আমি মাসিক আইন শৃঙ্খলা কমিটিতে বারবার বলার পরেও কোন সুরাহা হয়নি। বিষয়টির দ্রুত সমাধান চাই।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দুয়া উপজেলার সমন্বয়ক দিলশাদ নাসিম প্লাবন বলেন, ‘আমরা পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। আশা করি খুব দ্রুতই বিষয়টির সমাধান হবে।’

এ বিষয়ে কেন্দুয়া  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, ‘আপনার মাধ্যমে আমি এব্যাপারে জানতে পারলাম। শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য শিগগির ব্যবস্থা নেব। বিভিন্ন ফেস্টুন, ব্যানার ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে সবাইকে সচেতন  করতে হবে। স্কুলের আঙিনার আশপাশে কেউ যেন কোনো ধরনের ময়লা ফেলতে না পারে, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ