উপদেষ্টা পরিষদের আকার বাড়তে পারে শিগগির

সচিবালয়
সচিবালয়  © সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা পরিষদের আকার শিগগির বাড়তে পারে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাজে অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা উপদেষ্টা পরিষদে আসতে পারেন বলে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে একজন চিকিৎসক ও দুজন সাবেক সচিব উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত হতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কালের কণ্ঠ।

সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্প্রতি তৃতীয় দফা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দ্রুত নির্বাচন কিংবা নির্বাচন কবে হবে, সেই রোডম্যাপ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো চাপ দিয়েছে।

যদিও সরকারের তরফ থেকে আগেই বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের জন্য যে কমিশন গঠন করা হয়েছে, তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও আলোচনার পর নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করা হবে।

তবে রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, সংস্কারসহ অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজ দ্রুত শেষ করতে প্রয়োজনে উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে। ফলে শিগগিরই উপদেষ্টা পরিষদে তিন-চারজন নতুন উপদেষ্টা যুক্ত হবেন।

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি) আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী দল থেকে পদত্যাগের পর আলোচনা হচ্ছে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান হতে পারেন।

আরও পড়ুন: চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার সুপারিশ, নারীদের ৩৭

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, সরকারের উচ্চ পদে নিয়োগের বিষয়ে তিনি অনেকের কাছে শুনেছেন। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কিছু জানেন না।

তিনি বলেন, ‘আমাকে রাষ্ট্রের কোনো দায়িত্ব দেওয়া হলে পালন করতে সমস্যা নেই।’

দল থেকে পদত্যাগের বিষয়ে সোলায়মান চৌধুরী বলেন, তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেননি। এবি পার্টির চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আহ্বায়কের পদ ছেড়েছেন। আগামী ডিসেম্বরে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি এবি পার্টির চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন।

নির্বাচনকে পক্ষপাতমুক্ত রাখার জন্য আহ্বায়কের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এখন কাউন্সিলররা আমাকে ভালো মনে করলে ভোট দেবেন।’

অন্তর্বর্তী সরকারের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টাসহ এই সরকারের সদস্যসংখ্যা ছিল ১৭। এরপর এক সপ্তাহের ব্যবধানে গত ১৬ আগস্ট আরও চার উপদেষ্টাকে যুক্ত করা হয়। তবে আলোচনায় ছিল ১৬ আগস্ট পাঁচজন উপদেষ্টা যুক্ত হচ্ছেন। এরপর থেকে অন্তর্বর্তী সরকারে আরও নতুন উপদেষ্টা যুক্ত হওয়ার বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদসচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে একটা সরকার যে কাজ করে, সেটা তো করছেই। এর সঙ্গে সংস্কারের জন্য আরও কিছু উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ফলে কাজ তো অনেক। এই চাপটা যদি আরও কয়েকজন শেয়ার করেন, তাহলে তারা সহজে আরও অনেক কাজ করতে পারবেন। তাই আমার মনে হয়, সরকারে আরও কয়েকজন উপদেষ্টা যুক্ত হলে ভালোই হবে। তবে এটা প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা পরিষদ ভালো বলতে পারবে।’

আরও পড়ুন: পাবনায় আওয়ামী লীগের হামলায় বিএনপির ২৫ নেতাকর্মী আহত

আলোচনায় যেসব মন্ত্রণালয়
সরকারের মন্ত্রণালয়-বিভাগ রয়েছে ৫৮টি। এসব মন্ত্রণালয়-বিভাগে সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদের মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ছিলেন ৪৫ জন। একাদশ সংসদের মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী ছিলেন ৪৭ জন। ড. ফখরুদ্দীন আহমদ সরকারের আমলে উপদেষ্টার সংখ্যা ছিল ১৬। এরপর নানা কাজের সংস্কারের পরিকল্পনা নিয়ে গঠন করা সরকারে উপদেষ্টা আছেন ২১ জন। স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন লে. জে. (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বর্তমানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনেক কাজ। একই সঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয়েও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। পরিকল্পনা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কাজ করছেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এর মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আওয়ামী লীগের অনেক রাজনৈতিক প্রকল্পসহ নানামুখী চ্যালেঞ্জ আছে।

এদিকে তিনটি করে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন অর্থ ও বাণিজ্য এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে সালেহউদ্দিন আহমেদ; আসিফ নজরুল আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

সহজে কাজ করার জন্য এসব মন্ত্রণালয়ে নতুন মুখ যুক্ত হতে পারে। আবার গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোতেও পরিবর্তন আসতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ