‘মেয়েরা রাত দখল করো’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ‘রাত দখল করো নারী’ কর্মসূচি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ‘রাত দখল করো নারী’ কর্মসূচি  © সংগৃহীত

বিভিন্ন সময়ে ঘটা ধর্ষণের বিচারসহ নানা দাবিতে ‘মেয়েরা রাত দখল করো’ কর্মসূচি পালন করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এ সময় তনু ও মুনিয়াসহ ঘটে যাওয়া প্রতিটি ধর্ষণ মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, বিচার দাবি এবং কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে সংহতি জানানো হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচিতে কয়েকজন শিক্ষক ও বিশিষ্টজন একাত্মতা প্রকাশ করেন। সমাবেশে বক্তব্যের ফাঁকে সংগীত পরিবেশনও চলে। এর আগে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন। তারা, ‘গুঁড়িয়ে দেব পিতৃতন্ত্র, কেঁপে উঠবে রাষ্ট্রযন্ত্র,’ ‘প্রশ্ন যখন স্বাধীনতার, বাংলা জুড়ে ওয়েদ্দেদার’, ‘পোশাকের বাহানায়, পার পাবে না কোনো পিশাচ’-সহ নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড বহন করেন।

বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পরও ভারত এবং বাংলাদেশ নারী বান্ধব নয়। প্রীতিলতার মতো নারী যোদ্ধারা পুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছেন। তারা কি এই স্বাধীনতা চেয়েছিলেন? বাংলাদেশে নারী প্রধানমন্ত্রী থাকলেও তারা নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। অর্ন্তর্বতীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা, নতুন বাংলাদেশে নারীদের সমান অধিকারের আইন থাকবে। 

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক তানিয়া মাহমুদা তিন্নি বলেন, সরকার প্রধানরা কখনো নারীদের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করেননি। এমন একটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকতে হবে, যারা ইয়াসমিনের মতো মেয়েকে হত্যা করবে না। আইন এখনো বৈষম্য জিইয়ে রেখেছে, ফলে তারা সমান সুযোগ পায় না। নতুন দেশে এমন আইন চাই, যা নারীদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করবে। মানবাধিকার পেলে নারীদের রাস্তায় নামতে হতো না।

এতে একাত্মতা প্রকাশ করেন সরকারের সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। তিনি বলেন, ‘নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই। তোমাদের পাশে আছি আমি।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক রেহনুমা আহমেদ ভারতে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে যত ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, সবগুলোর বিচার হতে হবে। এটা হতেই হবে, কোনো টালবাহানা নয়।’

আরো পড়ুন: চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার দাবিতে চাকরিপ্রার্থীদের সমাবেশ আজ

সমাবেশের উদ্যোক্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নূজিয়া হাসিন রাশা প্রশ্ন তোলেন, ‘কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কেন যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল কার্যকর করা হয় না? নিরাপত্তার অজুহাতে ছাত্রীদের রাত ১০টার মধ্যে হলে ঢুকতে হয় কেন? নতুন উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ, এ বিষয়গুলো যেন ভালোভাবে দেখা হয়।’

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আনিয়া ফাহমিনের ভাষ্য, দেশে অসংখ্য ধর্ষণের ঘটনার মামলা হয় না। অনেক মামলা হলেও বিচার হয় না। অনেক ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল না হলে কেউ জানতে পারে না। ভুক্তভোগী নারী যেন তার বিচার পায়। ধর্ষণের ঘটনা সামনে আসলেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি সামনে আসে না বলে অভিযোগ তার।


সর্বশেষ সংবাদ