ঈদের নামাজ আদায়ের পদ্ধতি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৪, ০৮:৪৪ PM , আপডেট: ১৬ জুন ২০২৪, ০৮:৪৮ PM
আগামীকাল ঈদ-উল-আযহা। সবাইকে ঈদ মোবারক। ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব তথা আবশ্যক। জামাত ব্যতীত এই নামাজ আদায় করা যায় না। ঈদের নামাজে কোনো আযান নেই, কোনো ইকামতও নেই। রয়েছে ছয়টি অতিরিক্ত তাকবির। যার তিনটি প্রথম রাকাতে এবং পরের তিনটি তাকবির দ্বিতীয় বা শেষ রাকাতে।
ঈদের নামাজ আদায় করার পর দুটি আরবি খুতবাহ রয়েছে। যা শ্রবণ করা প্রত্যেক মুসল্লির জন্য আবশ্যক। অনেক মুসল্লিরা খুতবাহ না শুনে চলে যান; খুতবাহ না শুনে চলে গেলে অবশ্যই গুনাহগার হবেন।
বছরে মাত্র দু’বার করে আমাদের দুয়ারে আসে দুই ঈদের নামাজ। যে নামাজগুলো আমাদের জীবনে সাধারণত কম আসে, আমাদের অনেকেরই সেই নামাজগুলোর নিয়ম মনে থাকে না। ঈদের নামাজ একদিকে যেমন সারাবছর কম পড়া হয়, জানাযার নামাজও তেমনই কম পড়া হয়। ঈদের নামাজ এবং জানাযার নামাজ দুটোই সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী নামাজ।
ঈদ জামাতের নিয়ম
প্রথমেই কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে নিয়ত করবেন। আরবি নিয়ত জানা থাকলে আরবিতেই বলবেন। আর জানা থাকলে বাংলায় বা নিজ ভাষায় নিয়ত করবেন এই বলে, ‘আমি একমাত্র আল্লাহর জন্য কিবলামুখী হয়ে উক্ত ইমামের পেছনে ঈদ-উল-ফিতর/ ঈদ-উল-আযহার দুই রাকাত নামাজ, ছয় তাকবিরে আদায় করার নিয়ত করলাম। আল্লাহু আকবার।’
আরবি নিয়ত, ‘নাওয়াইতুআন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকআতাই ছালাতি ঈদীল ফিতরি মায়া সিত্তাতি তাকবীরাতিন ইকতাদাইতু বিহাজাল ইমামি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি, আল্লাহু আকবার।’
আল্লাহু আকবার বলেই দুই হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে অন্য নামাজের মতোই নাভীর নিচে হাত বেঁধে নেবেন। হাত বেঁধে সানা পড়বেন। সানা শেষে অতিরিক্ত ছয় তাকবিরের প্রথম তাকবির দেয়া হবে। আল্লাহু আকবার বলে প্রথম তাকবির দেয়া মাত্রই দুই হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। এরপর দ্বিতীয় তাকবির হবে। এবারও দুই হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। এরপর হবে তৃতীয় তাকবির। এই তাকবিরে দুই হাত কান পর্যন্ত উঠানোর পর ছেড়ে দেবেন না; বরং নাভীর নিচে হাত বেঁধে নেবেন। এভাবে অতিরিক্ত তিনটি তাকবির শেষ হবার পর ইমাম উচ্চস্বরে কেরাত পড়বেন। এসময় মুক্তাদিগণ নীরবে কেরাত শ্রবণ করবেন। কেরাত শেষে অন্যান্য নামাজের মতোই যথারীতি রুকু, সিজদা করে দ্বিতীয় রাকাতের জন্যে দাঁড়িয়ে যাবেন এবং নাভীর নিচেই হাত বাঁধবেন।
ইমাম সাহেব আবারও উচ্চস্বরে কেরাত পড়বেন এবং মুক্তাদিগণ তা মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করবেন। কেরাত শেষ করে বাকী অতিরিক্ত তিন তাকবির হবে। দ্বিতীয় রাকাতের প্রথম অতিরিক্ত তাকবির বলার সাথে সাথেই দুই হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে ছেড়ে দেবেন। এভাবে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় অতিরিক্ত তাকবির বলার পর সবাই আগের নিয়মে দুই হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে ছেড়ে দেবেন। এরপর চতুর্থ যে তাকবিরটা হবে, সেটা অতিরিক্ত তাকবির নয়, বরং সেটা রুকুর নির্ধারিত তাকবির। চতুর্থ তাকবির বলার সাথেসাথে সবাই রুকুতে চলে যাবেন এবং যথারীতি রুকু, সিজদা, বৈঠকের আত তাহিয়্যাত, দোয়া ও দরুদ পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করবেন।
এরপর খুতবাহ শ্রবণ করবেন এবং দোয়া-মোনাজাতে শরীক হবেন। নামাজ শেষে সবার সাথে কোলাকুলি করবেন। সম্ভব হলে মুরব্বিদের কবর জিয়ারত করে বাড়ি ফিরবেন। বাড়ি ফেবার ক্ষেত্রে যে রাস্তা দিয়ে এসেছিলেন, সেটা ভিন্ন অন্যকোনো রাস্তায় বাড়ি ফেবার চেষ্টা করবেন।