ঢাবি ক্যাম্পাসে এমন হামলার শিকার হব ভাবতে পারিনি: গোলাম মাওলা রনি

হামলার শিকার গাড়ি
হামলার শিকার গাড়ি  © ফেসবুক থেকে নেওয়া

সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির গাড়িতে দুর্বৃত্তরা হামলা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গাড়িতে হাতুড়ি দিয়ে হামলা করে পালিয়ে যায় তারা। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত না হলেও গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা যায়। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ নেতার মাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (২১ মে) বিকেলে হামলার বিষয়টি নিয়ে গোলাম মাওলা রনি তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ঢাবি ক্যাম্পাসে সাবেক এমপি গোলাম মাওলা রনির গাড়িতে হামলা

ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, জল্লাদের কবলে পড়ে আজ আর একটু হলেই মরতে বসেছিলাম। প্রাণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আমার প্রাণের উপর আঘাত আসবে অমন চিন্তা কোনো দিন মাথায় ঢোকেনি। তাই রাত বিরেতে একাকী, পায়ে হেঁটে, বা রিকশা বা উবারের মোটর সাইকেলে করে মনের আনন্দে দোয়েল চত্বর হয়ে কখনো টিএসসি বা কখনো শহীদ মিনার হয়ে নীলক্ষেত দিয়ে বাসায় ফিরেছি। অফিসে আসার ক্ষেত্রেও সর্বদা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হয়েই আসতেই শান্তি অনুভব করি!

তো আমার সেই শান্তির যাত্রায় আজ কি ঘটেছে সেই কথা বলার চেষ্টা করবো! আমার গাড়ি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রো রেলের স্টেশন পাড়ি দিয়ে পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের উল্টো দিক দিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখন ইউটার্ন নেয়ার জায়গায় ৪/৫ জন যুবক হাতুড়ি এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আমার গাড়ির উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে ফেললো। হতচকিত ড্রাইভার প্রথমে গাড়ি ব্রেক করলেন। তারপর আবার দ্রুত টান মেরে জল্লাদদের কবল থেকে বাঁচার চেষ্টা করলেন। হাতুড়ি বাহিনী পেছনে ছুটল আর অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিতে লাগলো।

অফিসে এসে আমি বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানালাম। তারা বেশ আন্তরিকতা নিয়ে প্রতিকারের আশ্বাস দিলেন। আমি ছাত্রলীগ সভাপতি জনাব সাদ্দামকেও ফোন করে ঘটনা জানালাম। তিনিও সান্ত্বনা দিলেন।

উল্লিখিত অবস্থায় আমার কপালে আগামীদিনে কি ঘটবে তা আমি জানি না। এটা নিয়ে আমার কোন উদ্বেগ বা উৎকণ্ঠাও নেই। কারণ আমি জন্ম থেকেই ছন্নছাড়া মানুষ। জীবনের প্রতি মায়া, বেঁচে থাকার স্বপ্ন বা কোন কিছু পাওয়ার লোভ কোনো দিন আমাকে তাড়িত করেনি। সুতরাং মরে যাওয়া বা কেউ আমাকে মেরে ফেলবে এটা নিয়ে হৈচৈ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।

বর্তমানে আমার ব্যবসা বাণিজ্য প্রায় বন্ধ। চলমান দুর্বিষহ সময়, চারিদিকের হাহাকার, অভাব অভিযোগ, মানুষের আর্তনাদ ইত্যাদি বিষয় আমাকে যেভাবে আহত করে সেখানে কেউ যদি কষ্ট করে আমাকে মারতে আসে এবং মেরে ফেলে তাহলে অনেক ঝামেলা থেকেই বেঁচে যাই।

সুতরাং আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার জন্য আজ আক্রমণ করে যারা ব্যর্থ হয়েছেন তাদের যেন আগামীতে কোন কষ্ট করতে না হয় এই জন্য আমার সম্পর্কে কিছু তথ্য পেশ করলাম:

আমার অফিস ৩৩ তোপখানা রোড। বাসা ১০ নায়েম রোড ধানমণ্ডি। সকাল ১১ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত অফিস থাকি। রোজ রাতে টকশো থাকে এবং গভীর রাতে একা একা বাসায় ফিরি। বিকালে রমনা পার্কে একা হাঁটি। শুক্রবার ধানমণ্ডি ৭ নম্বর সড়কের বাইতুল আমান মসজিদে নামায পড়ি। সুতরাং কেউ যদি আমাকে মেরে ফেলতে চান তাহলে একটু কষ্ট উল্লিখিত ঠিকানায় এলেই হবে ।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়েত দান করুন!


সর্বশেষ সংবাদ