ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের বিরোধে উত্তপ্ত আনন্দমোহন কলেজ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৩ AM , আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৮ AM
ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া, হামলা ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কলেজের পরিবেশ। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ পরস্পরকে অভিযুক্ত করেছে। ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর কলেজ রোড ও মীরবাড়ি এলাকায় সর্বশেষ ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া, হামলা, ভাঙচুর হয়। এ সময় গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান শিক্ষার্থী ও নেতা-কর্মীরা। এই ঘটনায় উভয় গ্রুপের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের স্থানীয় রাজনৈতিক বিভেদের প্রভাব আনন্দ মোহন কলেজ শাখা ছাত্রলীগেও রয়েছে। এক গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু এবং অপর গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সংসদ সদস্য মোহিত উর রহমান শান্ত।
মেয়র টিটু গ্রুপে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শেখ সজল নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। শান্ত এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর কলেজে তার অনুসারী নাজমুল হোসেন নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে শুরু করেন। নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শেখ সজল গ্রুপের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে।
গত শুক্রবার নাজমুলের অনুসারী জুয়েল ও সজলের অনুসারী শরীফের মধ্যে পূর্ব বিরোধের জেরে বাগবিতণ্ডা ও মারামারি হয়। ওই বিবাদকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যার পর কলেজের পল্লিকবি জসীমউদদীন হলের ৩০৫ নম্বর কক্ষে নাজমুলকে খুঁজতে যায় সজলের অনুসারীরা। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এতে কয়েকজন আহত হন। কক্ষটিতে তালা লাগিয়ে দেয় সজলের অনুসারীরা।
এ ঘটনায় মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন রানা, আনন্দ মোহন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শেখ সজলসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন নাজমুল। এরপর শনিবার সন্ধ্যায় নাজমুলের অনুসারীর মিছিল নিয়ে কলেজ এলাকায় যায়। তারা কলেজের সামনে শেখ সজলের দোকান ও তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শেখ সজল বলেন, গত শুক্রবার কলেজের পল্লিকবি জসীমউদদীন হলের ছেলেদের মধ্যে সামান্য ঝামেলা হয়। নাজমুলের রুমে মাদক সেবন ও বিক্রি করায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা তার কক্ষে তালা দেয়, আমরা যাইনি। ওই ঘটনার জের ধরে শনিবার নাজমুলের নেতৃত্বে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমাদের বাড়িতে ভাঙচুর এবং দোকান লুটপাট করে। এ সময় নাজমুল ও তার লোকজন গুলি ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হোসেন বলেন, শনিবার রাতে আমি ক্যাম্পাসে ছিলাম না। এই হামলা বা ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে আমার বা আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। মামলা থেকে বাঁচতে এটা তাদের সাজানো নাটক।
কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা শেখ সজলের দোকান ও তাদের বাড়িতে হামলা করেন নাজমুল ও তাঁর লোকজন। তবে কোনো গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি বা কেউ আহত হয়নি।
ওসি আরও বলেন, শুক্রবারের ঘটনায় নাজমুল বাদী আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শেখ সজলসহ ১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।