এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা

বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ হলো না ঢাকা কলেজছাত্র মাসুদের

মাসুদ খান
মাসুদ খান  © সংগৃহীত

আশা ছিল বড় কোন চাকরি করে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করবে। পরিবারকে সুখে রাখবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হলো না মাসুদ খানের। গতকাল রোববার (১৯ মার্চ) সকালে পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকার দুর্ঘটনায় নিহত হন তিনি। 

গোপালগঞ্জের আদমপুর গ্রামের আমজেদ আলী খানের ছেলে মাসুদ খান (২৭)। তিনি ঢাকা কলেজের দর্শন বিভাগ থেকে অর্নাস-মাস্টার্স পাস করেন।

জানা যায়, গত তিন দিন আগে ঢাকা থেকে মা-বাবা ও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বাড়িতে আসেন মাসুদ খান। রোববার খুব ভোরে ইমাদ পরিবহনে ঢাকা যাচ্ছিলেন। কিন্তু ঢাকা আর যাওয়া হলো না। বাস খাদে পড়ে সমাধি হলো একজন স্বপ্নবাজ তরুণের। মরদেহ নিতে এসে মাসুদের বড় ভাই শফিক খান বার বার ভাইয়ের জন্যে মূর্ছা যাচ্ছিলেন। কোনো ভাবেই ভাইয়ের এমন করুণ মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না। কান্নায় ভেঙে পড়ছেন শফিক খান।

মাসুদ খানের ভাই শফিক খান বলেন, কথা ছিল কিছু পরে বড় চাকরি করে পরিবারের দায়িত্ব নিবেন মাসুদ। মাস্টার্স পাস করে ঢাকাতেই ছোটখাটো কম্পিউটারের কাজ করতো। যা ইনকাম করতো তা দিয়ে নিজে চলে বাড়িতেও টাকা-পয়সা পাঠাতেন। আর মাঝে মাঝে বড় চাকরিতে যোগ দিতে পরীক্ষা দিতেন। অল্প দিনের মধ্যেই চাকরি পাবার কথা ছিল। কিন্তু সেই চাকরি আর করা হলো না। কিভাবে এই শোক মেনে নিবো। আমার প্রাণের ছোট ভাইকে আর পাবো না, এটা মানতে পারছি না।

মাসুদের বন্ধু শাকিব হোসেন বলেন, আমরা একই গ্রামে ছোট থেকে বড় হয়েছি। মাসুদ আমার চেয়েও অনেক মেধাবী ছিল। সে মুকসেদপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা কলেজে দর্শন বিভাগের অর্নাস ও মাস্টার্স শেষ করে। আমাকে মাঝে মাঝেই বলতো, বড় চাকরি করে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেই চাকরি আর হলো না। এর জন্যে বুকটা ভেঙে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ