জন্মদিনের কথামালা

  © টিডিসি ফটো

রাত্রি হল ভোর
আজি মোর
জন্মের স্মরণ পূর্ণবানী
প্রভাতের রৌদ্রে-লেখা লিপিখানি
হাতে করে আমি
দ্বারে আসি দিলো ডাক
তেরোই শ্রাবণ
জীবনের তব বাঁক।

হ্যাঁ আজ আমার জন্মদিন। বাইশ কে বিদায় তেইশ তম বছরে পদার্পণ। মানব ইতিহাসের শতাব্দী চিহ্নিত বেড়ার ভেতর থেকে এভাবেই বেরিয়ে যাই একটি একটি করে বছর।

কয়েক বছর ধরে আমি লক্ষ করছি এই রাত অথবা দিনটি আসলে আমার আর ঘুম হয় না।এই যেমন এখন রাত ১.৪০ বাজে কিন্তু চোখে ঘুম নেই;নেই কোনো ঐন্দ্রজালিক সুর যাতে আচ্ছন্ন থাকা যাই।

আজ বিচ্ছিন্নতায় আচ্ছন্ন হয়ে বুধ হয়ে থাকতে ইচ্ছা করছে। পাওয়া-না পাওয়ার সমীকরণ মিলানোর জন্য মাথার নিউরন গুলো শুরু করেছে অদৃশ্য সাইক্লোন। তাদের একটিই চাওয়া,একটিই ইচ্ছা তারা মিলাইতে চাই অনিঃশেষ ভিড়ের মাঝে ভাসমান যন্ত্রণার মুগ্ধ ব্যাকরণ।

আসলে প্রত্যেকটি মানুষের ভেতরেই সুখের পাশাপাশি কিছু যন্ত্রণা আছে ;আছে সেই যন্ত্রণার বেদনাদায়ক কিছু নোটেশন যা নিজেরটা নিজেকেই বহন করতে হয়।অন্য কারো দ্বারা বহন করানো সম্ভব নয়।আর এই হাহাকারময় যন্ত্রণাটা আমার ক্ষেত্রে একটু বেশি কিনা জানি না! কারণ আমার জীবন, আমার ব্যক্তিত্ব, আমার স্বপ্ন, আমার দর্শন সেই নৈঃসঙ্গ্য-তাড়িত শবযাত্রার মতো যার পরানে-পিঞ্জরে কেবলি কিছু বিমূর্ত অশকের ডাক আমার বাস্তুহারা মনকে কখনো অমানিশার অন্ধকারে কখনো আলোর উৎসাহে উদ্বেলিত করে।

বলতে গেলে ভালো-মন্দ মিলিয়েই মানুষের জীবন। আমার, আপনার, আমাদের কারও জীবন স্বচ্ছ নয়। যদি সচ্ছই থাকতো তাহলে সেতা জীবন হতো না।আমার আবেগ তাড়িত হৃদয়ের গোপন বিজন ঘরে এ উদাহরণ বারং বার ধাক্কা দেই- আচ্ছা ধরুন, আপনার জীবনে কোন দুঃখ, কষ্ট, ব্যর্থতা, গ্লানি কিছুই নেই। সুখ, শান্তির মধ্যেই চলছে আপনার জীবন। একটু খেয়াল করে দেখেন আপনার শান্তির মাঝে বসবাস করতে করতে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছেন। একটা সময় মনে হবে শান্তিটাই দুঃখে পরিণত হচ্ছে।

জগতের সকল ব্যাপারের মধ্যে দ্বৈততা রয়েছে।  জীবনতো সেটাই যেখানে দুঃখের পাশাপাশি সুখ থাকবে। ভালোর পাশে মন্দ থাকবে। কান্নার পাশে হাসি থাকবে। সকল কিছুই সেই মহান সৃষ্টিকর্তার সাজানো নকশায় এগিয়ে যাচ্ছে। সকল কিছুর সমাধানও তিনি দিয়ে রেখেছেন যা মানব হৃদয়ে কিছু বোধগম্য আর কিছু বোধগম্য নয়..।

আমি জানি না আমার এই জন্মদিনে কে আনন্দিত হচ্ছেন আর কে আমার একটি লিখা,একটি কবিতা, একটি প্রবন্ধ প্রাণ উজাড় করে পড়ছেন।

‘চলো... আজকে...
ডীপ ফ্রিজের হিমায়িত কষ্ট গুলোকে একটু ঘৃণা কর’

কিংবা...

‘কুহেলী তুমি তো আমার হৃদয়ে সুললিত পদাবলী
শত গালিবের গহিন গজল, মুগ্ধ গীতাঞ্জলী’

‘তুমি তো আমার হৃদয়ের গান,গানে গানে কথা বলা
কাজী নজরুল গীতমালা তুমি,হৃদয়ের পাঠশালা।’

কিংবা...

‘স্বাধীনতা,
তুমি চেতনা, তুমি উন্মেষ
তুমি রক্ত প্রদীপ শিখা!
স্বাধীনতা,
তুমি নই শুধু ২৬-শে মার্চ
কিংবা ১৬-ই ডিসেম্বর
তুমি আলোকিত, তুমি অমৃত
তুমি অবিনাশী কীর্তি সবার!’

অথবা...

কন্ডেম সেলের বাসিন্দা

যাও-তুমি বরং কৃষ্ণের কাছে যাও
লহরীত বাঁশির সুরে সুরে জেনে এসো
মায়াবী প্রেমিক মেঘের অভিমান, আখ্যান...

খুব পাগল হওয়ার আগে একটু
দেওয়ানা হও...

শোনো
তোমার চলার পথ কখনো শেষ হলে
একটু পড়ে নিয়ো,আমার ভালবাসা।

কন্ডেম সেলের বাসিন্দা হয়েও একটু বলি-
ভালবাসা পড়তে সবায় পারে না
একটু ভাষা শিখে নিও...

হয়তো হাসছেন মনের অজান্তে সংগোপনে; তবে যারা আমাকে ভালোবাসেন তারা নিশ্চয় আনন্দিত এটা বলতে আমার কোনো বাধা নেই আর নেই কোনো সংকোচ। আমি তাদের সম্বন্ধে এতোটু বলতে চাই- আজ এই চন্দ্রগ্রহণ রজনীতে অনুভবের পোষ্টারের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে নিজেকে নিজে লক্ষ করেছি তোমাদের/আপনাদের আনন্দই আমার আনন্দ যা ভোর ও ঊষার মাঝখানে উদিত অরণ্যের দিকে বয়ে যাওয়া সুগন্ধির চেয়ে কম না।

১৩ শ্রাবণ আমার জন্ম।শ্রাবণের সাদা মেঘের ভেলায় হয়তো আমাকেই এঁকেছিলেন আমার পিতা-মাতা তাদের আলোকসঞ্চারী মনের চিত্রকল্পে এই হতভাগা সন্তানটিকে।যা প্রবহমান জীবনে চিরন্তন সত্য হিসেবে আবর্তন করছে ১৩ শ্রাবণে;

শ্রাবণের প্রতিটি সন্ধ্যায় আমি লক্ষ করি আলোর স্রোতে পাল তুলেছে হাজার প্রজাপতি আর সেই পালতোলা প্রজাপতির ডানায় আমার ঝুড়ি ভর্তি স্বপ্ন ও আমার দর্শন। যা বেদনায় আকীর্ণ হয়ে নিঃসঙ্গের আড়ালে না গেলে কেও বুঝতে পারবে না।

আমি একটির পর একটি স্বপ্ন বুনে যাচ্ছি আর কিছু অপ্রতিষ্ঠিত দর্শন আমার মাথার নিউরন গুলি কুরে কুরে খাচ্ছে। এর থেকে বেরোনোর উপায় আমার জানা নেই। আমি চৈতন্যের নির্জনতা ধরে অনাগত কালের ক্রন্দনের দিকে হাটি আর লক্ষকরি বিষাদ বেণীতে ঝুলে আছে কালপূরাণের কথিকা।

আমি আর লিখতে পারছি না।ক্ষুধাভর্তি এই অনাথ জ্ঞানহীনের কলম থেমে যাচ্ছে কাগজের ভাঁজে।
বাইস তম বছর পার করেছে এটায় সত্য শ্রবণেন্দ্রিয় আলোড়নে।কিছু স্মৃতি আমাকে খুব করে কাঁদায়; কেনো জানি না... দূর কিসের মধ্যে কি নিয়ে আসছি।ক্ষমা করবেন,দোয়া প্রার্থী নিরন্তর;

ও পরিশেষ একটি কথা-
দিন গুলো মোর সোনার খাঁচায় রইলো না...

লেখক: শিক্ষার্থী বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence