ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে কেন পড়বেন?

মুহাইমিনুল ইসলাম ফরহাদ
মুহাইমিনুল ইসলাম ফরহাদ  © টিডিসি ফটো

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগকে কোনোভাবেই ছোট মনে করার উপায় নেই। কেননা মানবিক বিভাগের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মতো ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়ে প্রশাসন, পুলিশ ও বিভিন্ন সরকারি কলেজে অধ্যাপনা সহ আরও অন্যান্য সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত আছেন।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে পড়াশোনা করে প্রফেসর আখতারুজ্জামান স্যার যদি দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাবির ভিসি হতে পারেন তাহলে আপনি কেন এই সাবজেক্ট নিয়ে পড়াশোনা করে নিজেকে দুর্বল মনে করবেন? আপনি/আমি কেন বড় ধরনের স্বপ্ন দেখতে পারিনা?

আমরা যদি লক্ষ্য করি প্রশাসনের অনেক বড় বড় পদে দায়িত্বরত কর্মকর্তা যারা আছেন তারাও কিন্তু ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আমরা যদি আরও লক্ষ্য করি, দক্ষিণ বঙ্গের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ সরকারি বিএম কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া স্যার এই ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগেরই শিক্ষার্থী ছিলেন।

আমি বিশ্বাস করি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে পড়াশোনা করে শুধু ডাক্তার এবং ইঞ্জিনিয়ার ব্যতীত প্রায় সবকিছু হওয়া সম্ভব।

এই বিভাগের যে শিরোনাম "ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি" তা তিনটি ভাগে বিভক্ত যেমন, একটি হচ্ছে ইসলাম, একটি হচ্ছে ইতিহাস এবং একটি হচ্ছে সংস্কৃতি। অতএব আমরা বুঝতেই পারছি। এই বিভাগে একজন শিক্ষার্থী অনার্স-মাস্টার্স কোর্স শেষ করে সে ইসলাম সম্পর্কে জানবে। ইতিহাস সম্পর্কে জানবে এবং সংস্কৃতির একটা সুন্দর কম্বিনেশন এই সাবজেক্টে রয়েছে।

এছাড়াও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে চার বছরের অনার্স ও এক বছরে মাস্টার্সে যে কোর্স গুলো পড়ানো হয় তা অত্যন্ত যুগোপযোগী ও আধুনিক। এ বিভাগ থেকে অনার্স অথবা মাস্টার্স কোর্স শেষ করে বিদেশের অনেক বড় বড় বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করা যেতে পারে।

আমি যদি প্রপারলি পরিশ্রম করি। আমি যদি ক্লাশটাকে গুরুত্ব দেই। আমি যদি নিজেকে তৈরি করতে পারি। তাহলে কোন সাবজেক্টে পড়ছি সেটা মাথায় না রেখে যে সাবজেক্টে পড়ছি সেটাকে আন্তরিকভাবে নেয়া। সেটাকে আন্তরিকভাবে গঠন করা। এবং সেটাকে জানার জন্য পড়া।

অনেক গভীরে চলে যাওয়া। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কোনো সাবজেক্ট-ই ফেলে দেয়ার না। প্রত্যেকটি সাবজেক্ট ই গুরুত্ব আছে। এবং গুরুত্ব আছে বলেই অনার্স মাস্টার্স এবং বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষার জন্য এটি রাখা হয়েছে। তাই যখন যে জিনিসটা করব তা যদি আন্তরিকভাবে করি, আন্তরিকভাবে নেই। যখন আমি পেপার পড়ব, পেপারটাই ভালোভাবে পড়ব। তখন অন্য বিষয় গুলো মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। যখন ক্লাস করব। তখন শুধু ক্লাসে অত্যন্ত আন্তরিক হব। অন্য কোনো বিষয় মাথায় আসবে না।

এমনকি যখন আমি খেলাধুলা করব। ক্রিকেট খেলব, ব্যাটিং, বোলিং বা ফিল্ডিং করব, তখন আমার সেটাতে মনযোগী হতে হবে। অর্থাৎ যখন যে কাজটি করব অত্যন্ত আনন্দের সাথে করব। যে সাবজেক্টেই পড়িনা কেন। এটাকে আনন্দময় করতে হবে। এটাকে উপভোগ্য করতে হবে। তাহলে বিষয়টা সহজলভ্য মনে হবে। খুব সহজেই বিষয়টা আয়ত্ত করা যাবে।

এর সাথে সম্পৃক্ত যে বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলো যদি সমান্তরালে আয়ত্ত করতে পারি। সে চর্চা গুলো যদি আমরা রাখতে পারি। যেমন সাধারণ জ্ঞানের যে বিষয়গুলো রয়েছে, আন্তর্জাতিক যে বিষয়াবলী, বাংলাদেশের বিষয়াবলী, তারপর কম্পিউটার, ইংরেজি, গণিত এবং বাংলা সাহিত্যের যে বিষয়গুলো রয়েছে, এগুলো আমাদের সাবজেক্টের সাথে সমান্তরালে যদি মোটামুটি চালিয়ে যেতে পারি। তাহলে যেকোনো জায়গায় আমরা নিজেদেরকে সেট করতে পারব।

এছাড়া যেকোনো জায়গায় আমরা নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারব। বিসিএসসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারব। সর্বোপরি সফল নাগরিক হিসেবে, সুশিক্ষিত নাগরিক হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় নিজেকে গঠন করতে পারব। দেশ, জাতী, দশের সেবা করতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করি।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, সরকারি বিএম কলেজ


সর্বশেষ সংবাদ