আজ ডায়াবেটিস দিবস, নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ ৯২ শতাংশ রোগী

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ ৯২ শতাংশ রোগী
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ ৯২ শতাংশ রোগী  © সংগৃহীত

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস হলো ডায়াবেটিস সম্পর্কে বিশ্বময় সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি ক্যাম্পেইন যা প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও জনসচেতনতার লক্ষ্যে দিবসটি পালিত হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘ডায়াবেটিসের ঝুঁকি জানুন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। অর্থাৎ, ডায়াবেটিস সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারলে একে প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা যায়।। 

ডায়াবেটিস রোগের চারটি বিষয়ে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম এখনো মোট রোগীর ৬১ দশমিক ৫ শতাংশই জানেন না তারা রোগী। এমন রোগীর বড় অংশ তরুণ। দ্বিতীয় উদ্বেগ হলো কম বয়সী রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তৃতীয় উদ্বেগ গর্ভকালীন ডায়াবেটিস। বর্তমানে গর্ভধারণকারীর ২৭ শতাংশই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, যা বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। 

সর্বশেষ উদ্বেগ অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস নিয়ে। দ্রুত নগরায়ণ ও জীবনযাপনের ধরন বদলে যাওয়ায় দিন দিন ডায়াবেটিক রোগী বাড়ছে। বর্তমানে ৯২ শতাংশ রোগীর ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত। এতে সংক্রামক ও অসংক্রামক দুটি রোগেই মৃত্যু বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে মৃত্যুর ৬৮ শতাংশ কারণ সংক্রামক রোগ। যেসব রোগে ডায়াবেটিসের ক্ষতিকর ভূমিকা রয়েছে এর মধ্যে হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনির সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ ও দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসতন্ত্রের রোগ উল্লেখযোগ্য। এসব উদ্বেগ থেকে মুক্ত হতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ডায়াবেটিস প্রতিরোধের ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন।

পরিসংখ্যান বলছে, গ্রামের চেয়ে শহরে ডায়াবেটিক রোগীর হার বেশি। কিন্তু প্রি-ডায়াবেটিস শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি। এর কারণ মানুষের হাঁটাচলা কমে যাওয়া, ডিভাইসের বেশি ব্যবহার ও ফাস্ট ফুড খাওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠা।

ডায়াবেটিসের একজন রোগী সব ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। সবচেয়ে বেশি ৮০ শতাংশ রোগী মারা যান হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক করে। যাদের কিডনি খারাপ হয়ে গেছে, তাদের ৫০ শতাংশেরই কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হচ্ছে ডায়াবেটিসের কারণে। অন্ধত্বের সবচেয়ে বড় কারণ এই রোগ। 

আরও পড়ুন: হৃদরোগ মুক্ত থাকতে একজন ব্যক্তির কতটুকু পরিশ্রম দরকার

যারা বন্ধ্যত্বের শিকার, বাচ্চা নিতে পারছেন না, তাদের দুজনের একজন অথবা দুজনেরই ডায়াবেটিস আছে। ডায়াবেটিসের কারণে মানুষের স্নায়বিক সমস্যা হচ্ছে ও মানসিক অবসাদ দেখা দিচ্ছে। ঘন ঘন সংক্রমণ হচ্ছে। এক কথায় বলতে গেলে, ডায়াবেটিস এসে গেছে মানে অন্য সব রোগ অপেক্ষা করছে কে কখন আক্রমণ করবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর ১০ দশমিক ৮ শতাংশ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। সেই হিসাবে দেশের ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। বছরে মোট মৃত্যুর ১০ শতাংশের কারণও ডায়াবেটিস। এদের ৯২ শতাংশ রোগটি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ।


জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (নিপোর্ট)-এর একটি জরিপে দেখা গেছে, দেশে মোট ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দেড় কোটিরও বেশি। এদের মধ্যে ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা ৩০ লাখ আর বাকিরা ৩৫ বছরের বেশি বয়সী।

যে সব লক্ষণ দেখলে সতর্ক হতে হবে-

ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া ও পিপাসা লাগা, দুর্বল লাগা, ঘোর ঘোর ভাব আসা, ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া, সময়মতো খাওয়া-দাওয়া না হলে রক্তের শর্করা কমে হাইপো হওয়া, মিষ্টি জাতীয় জিনিসের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া, কোনো কারণ ছাড়াই অনেক ওজন কমে যাওয়া, শরীরে ক্ষত বা কাটাছেঁড়া হলে দীর্ঘদিনেও সেটা না সারা, চামড়ায় শুষ্ক, খসখসে ও চুলকানি ভাব, বিরক্তি ও মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠা এবং চোখে কম দেখতে শুরু করা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence