কড়াইল বস্তিতে হাইটেক পার্ক নির্মাণের প্রস্তাব ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’, বললেন ফয়েজ আহমদ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:১১ PM , আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:১১ PM
কড়াইল বস্তিতে হাইটেক পার্ক নির্মাণসংক্রান্ত এক ‘অনভিপ্রেত প্রস্তাব’ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) ফাইজ় তাইয়েব আহমেদ। তিনি বলেছেন, হাজার হাজার মানুষ যখন আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অসহায় ও গৃহহীন, তখন এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য থেকে বিরত থাকা উচিত সফ্টওয়্যার খাতের বেসরকারি উদ্যোক্তাদের।
বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, কড়াইল বস্তিতে হাইটেক পার্ক নির্মাণের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আলমাস কবির মানে এক ব্যক্তি মৌখিক ও লিখিতভাবে এমন প্রস্তাব দিয়ে আসছেন। ‘সংগত কারণেই সরকার উনার প্রস্তাবনা আমলে নেয়নি,’ বলেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন, কড়াইল বস্তির প্রায় ৪৩ একর জায়গা বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের। হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কখনোই এই জায়গা বুঝে পায়নি। অতীতে জায়গাটির মালিকানা ছিল টিএন্ডটি'র (বর্তমান বিটিসিএল)। আদালতে মামলা রয়েছে, মামলা নিস্পত্তি হয়নি বলে আইসিটি সেখানে এমনকি দখলে যাবার চেষ্টাও করেনি।
তিনি আরও জানান, কারওয়ান বাজারে জনতা টাওয়ারে একটি সফ্টওয়্যার পার্ক ছিল যেখানে শ খানেক আইটি কোম্পানি ফ্লোর স্পেইস ভাড়া নিয়েছিল, মূলত আইটি অফিস চালাচ্ছিল (রাজনৈতিক বিবেচনার বাইরের কিছু কোম্পানিও ছিল)। কিন্তু ভবনটির অবস্থা এতই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল যে এর জরুরি মেরামতের দরকার পড়ে, এতে করে সফ্টওয়্যার কোম্পানি গুলোকে আপাতত সরিয়ে মেরামত কাজ শুরু করতে হয়েছে। তখন সফ্টওয়্যার ইন্ডাস্ট্রির জন্য দীর্ঘমেয়াদি বিকল্প খোঁজার উদ্যোগ নেই। আমরা কারওয়ান বাজারে সফ্টওয়্যার পার্ক তৈরির জন্য নতুন একটি ভবন নির্মাণ করছি।
তিনি বলেন, গত বছরের শেষের দিকে এই বিশাল প্লটের বনানী কর্নারের যে অংশে কোনো স্লাম নাই, তার ছোট অংশে একটি সফ্টওয়্যার পার্ক ভবন নির্মাণের একটি কথা উঠেছিল। এর প্রেক্ষিতে আমরা কয়েকজন মানবাধিকার কর্মীর সাথে আলাপ করি। ওনাদের পরামর্শ মতে কড়াইল বস্তিতে যে-কোনো ধরনের অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে আইসিটি বিভাগ বিরত থাকে।
আমরা সুস্পষ্টভাবে জানাতে চাই, বর্তমানে কড়াইল বস্তিতে যে-কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণের কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। বরং আমরা গণপূর্ত এবং রাজউককে আলাদা আলাদা ভাবে চিঠি পাঠিয়েছি যাতে সফ্টওয়্যার পার্ক নির্মাণের জন্য ঢাকার আগারগাঁও, পূর্বাচল কিংবা অন্যান্য এলাকায় জমি প্রদান করা হয়। সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোকে অফিস স্পেইস তৈরি করে দেয়া গেলে তারা আইটি খাতে এক্সপোর্ট বাড়াতে ভূমিকা রাখবেন। সে মতে বাংলাদেশ হাইটেক পার্কে আগারগাঁও একটি প্লট বরাদ্দ নিয়ে এখন পেপারওয়ার্ক আগাচ্ছে। এই প্লটে সফ্টওয়্যার পার্ক, হাইটেক পার্ক এর হেড অফিস সহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের জন্য সবুজ পাতা একটি প্রকল্প উঠানো হচ্ছে। গণপূর্ত তাতে সায় দিয়েছে।
অর্থাৎ কড়াইল বস্তিতে অবকাঠামো তৈরির কোন পরিকল্পনা আমাদের নেই, চলমান কোন প্রকল্পও নাই, এমনকি সবুজ পাতায়ও কোন প্রস্তাবনা নাই। সরকারের পরিকল্পনার সাথে আদৌ সংশ্লিষ্ট নয়, এমন বক্তব্য প্রদানে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সচেতন ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।
বিশেষভাবে হাজার হাজার মানুষ যখন আগুনে বিপর্যস্ত হয়ে নিরাপত্তাহীন অসহায় পরিস্থিতিতে রয়েছে, তখন হাই-টেক পার্ক স্থাপনের আজগুবি বিষয় সামনে এনে সরকারকে বিব্রতকরার এমন অপচেষ্টার নিন্দা জানাই।