কমিশনে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

এ বছরের জুলাই থেকেই নতুন পে স্কেল কার্যকরের প্রস্তাব

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © টিডিসি ফটো

সরকারি চাকরির বয়স ৩৫ বছর করা ও রেশন প্রদানসহ ২০টি প্রস্তাব পে কমিশনে জমা দিয়েছে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ। রোববার সচিবালয়ে কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব প্রস্তাব জমা দেয় পরিষদের প্রতিনিধিরা। পাশাপাশি নতুন পে স্কেল এই বছরের ১ জুলাই থেকেই কার্যকর করারও প্রস্তাব করা হয়েছে।

এতে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত ১:৪ করে সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা করা, বিদ্যমান ২০টি গ্রেডের পরিবর্তে ১২টি গ্রেডে পুননির্ধারণেরও দাবি করেছে পরিষদ। লিখিত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল, প্রতিটি পদে সমান সময় ও সমহারে প্রদান অথবা, বিদ্যমান ২টি উচ্চতর গ্রেডের পরিবর্তে চারটি উচ্চতর গ্রেড এবং প্রতি ৪ বছর অন্তর অন্তর প্রদান করতে হবে। 

শিক্ষা সহায়ক ভাতায় সন্তানপ্রতি বিদ্যমান ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৪টি স্তরে বৃদ্ধির দাবি করেছে নেতারা। তারা বলেন, প্রাইমারি লেভেল ২ হাজার টাকা, মাধ্যমিক স্কুল লেভেলে ৪ হাজার টাকা, কলেজ লেভেলে ৬ হাজার এবং বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলে ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে। চিকিৎসা ভাতা বিদ্যমান দেড় হাজার টাকার পরিবর্তে চাকরিতে প্রবেশকালীন ৪ হাজার, চাকরি ১০ বছর পূর্তিতে ৬ হাজার এবং চাকরি ২০ বছর পূর্তিতে ৮ হাজার টাকা প্রস্তাব করেছে তারা। এছাড়া ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মাসিক চিকিৎসা ভাতা ২৫০০ পরিবর্তে ১৫ হাজার টাকা ও অন্যান্য পেনশনভোগীর ক্ষেত্রে মাসিক চিকিৎসা ভাতা ১৫০০ টাকার পরিবর্তে ১০ হাজার টাকা অথবা ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা বীমা সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

টিফিন ও যাতায়াত ভাতা বৃদ্ধি এবং গ্রেড-১০ এর কর্মচারীদের এতে অন্তর্ভুক্তকরণের দাবিও করেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পাশাপাশি সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রেশন ও সচিবালয় ভাতা প্রদানের প্রস্তাব তাদের।

চাকরিজীবীদের বয়স ও প্রবেশের বয়স বৃদ্ধির প্রস্তাব করে পরিষদের নেতারা বলেছেন, সরকারের হিসেব অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ৭০ বছর থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩ বছর হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৪০ বছর বা তারও উপরে রয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ বছরের পরিবর্তে ৩২ বছর করা হয়েছে। তবে, এই ২ বছর বৃদ্ধি প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি এবং বর্তমান পেক্ষাপট বিবেচনায় সরকারি চাকরিজীবীদের অবসরের বয়স ৫৯ বছরের পরিবর্তে ৬২ বছর এবং চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ বছরের পরিবর্তে ৩৫ বছর নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া শ্রান্তি বিনোদন ছুটি ৩ বছরের স্থলে ২ বছরে প্রদান এবং চাকরি হতে স্বেচ্ছায় অবসরের বয়স ২৫ বছরের পরিবর্তে ১৫ বছর নির্ধারণের দাবিও করেছেন তারা।

এছাড়া ৯ম জাতীয় বেতন কমিশন ১ জুলাই ২০২৫ তারিখ থেকে কার্যকরের ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ মনে করে, ইতোমধ্যে ১০ বছর অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া, ইতোপূর্বের বেতনস্কেল ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হয়েছে। কর্মচারীদের বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট শুরু হয় ১ জুলাই এবং অর্থবছর শুরু হয় ১ জুলাই থেকে। তাই সার্বিক বিবেচনায় ৯ম জাতীয় বেতনস্কেল ১ জুলাই, ২০২৫ তারিখ থেকে কার্যকর করে, ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে বকেয়া সুবিধা প্রদান করতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ