ইউনাইটেড হাসপাতালের ৩০ কোটি টাকা কর বকেয়া: ডিএনসিসি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, ১০:০৬ AM , আপডেট: ১৬ মে ২০২৫, ০৭:৪১ PM
কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে কর প্রদান করেন না। ইউনাইটেড হাসপাতালের প্রায় ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকা কর বকেয়া পরে আছে বলে জানান ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। এসময় তিনি বলেন, একইভাবে রেনেসাঁস হোটেল, ওয়েস্টিন হোটেল ও বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেও এমন পরিমান কর বকেয়া আছে। তারা সিটি কর্পোরেশন থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা গ্রহণ করেও কর প্রদান করে না, এটা অনৈতিক।
আজ রোববার (১১ মে) ডিএনসিসি’র পৌরকর মেলা ২০২৫ উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, প্রভাবশালী যারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কর দেন না, যাদের কাছে অনেক বকেয়া তারা এবার আর কোনো ছাড় পাবে না। তাই স্বপ্রোণদিত হয়ে কর প্রদান করেন, না হলে সিটি কর্পোরেশনের লোকজন তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিরক্ত করবে ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আরও পড়ুন: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য অ্যাকাডেমিক শাটডাউন ঘোষণা
ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, সাধারণ লোক কর দিতে চায় কিন্তু মানুষের ভ্রান্ত ধারণা আছে কর দেওয়ার প্রক্রিয়ার জটিলতা নিয়ে, তাই তারা কর দিতে আসে না। এবার আমরা এই সমস্যার সমাধান করেছি। ডিএনসিসি’র পৌরকর অনলাইনে প্ৰদান প্রক্রিয়া সহজীকরণ করা হয়েছে। ঘরে বসেই কর প্রদান করা যাবে।
তিনি বলেন, আমরা ডিএনসিসির অঞ্চলগুলোতে গণশুনানি করে দেখেছি নাগরিকদের রাস্তা, ড্রেনেজ ও সড়কবাতির চাহিদা অনেক সে অনুপাতে রাজস্ব আদায় নেই। রাজস্ব আদায় না হওয়ায় কারণ হিসেবে তিনি তিনটি বিষয় চিহ্নিত করেছি, প্রথমত ডিএনসিসির নতুন সংযুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের বেশিভাগ এলাকায় কর তালিকার অন্তর্ভুক্ত নেই। আবাসিক এলাকাগুলোতেও বাণিজ্যিক ব্যবহার হচ্ছে সেখান থেকে আমরা কোনো রাজস্ব পাচ্ছি না। নতুন করে হওয়া প্রচুর দোকান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে কর প্রদানের তালিকার আওতায় আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যারা কর দেওয়া বা যারা কর দেয় না সবাইকেই সিটি কর্পোরেশনের নাগরিক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, আমাদের জনবল সংকট রয়েছে স্থায়ী লোকবল নিয়োগ করতে গেলে সেখানে তাদের বেতন ভাতা দিতে রাজস্ব ব্যয় হচ্ছে, অবকাঠামো উন্নয়নে রাজস্বের বড় অংশ ব্যয় হয়। এই ব্যয়কে মাথায় রেখে আদায়ের লক্ষ্য পূরণ ও পৌরকর প্রদান সহজিকরণ করতে এই পৌরকর মেলার আয়োজন।
আরও পড়ুন: সাবেক রাষ্ট্রপতির বিদেশ গমন তদন্তে উচ্চপর্যায়ের কমিটি
প্রশাসক বলেন, আমরা লক্ষ্য করে দেখেছি ডিএনসিসির এমন কিছু জায়গা আছে যেগুলো থেকে কর আদায় করা গেলে আমাদের উন্নয়ন ব্যয় এর চেয়ে আদায় বেশি হতো। উদাহরণসরূপ, তিনি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার কথা বলেন। বসুন্ধরার সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি তারা কর দিতে রাজি হয়েছে। ১৮টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের আমরা গনশুনানির মাধ্যমে তাদেরকে কর প্রদান উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছি। মেলায় এসে কর দিলে তারা সুযোগ সুবিধা পাবে এবং এক টেবিলে বসে তাদের সকল সমস্যা সমাধান করতে পারবে। তারাও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
আক্ষেপ করে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, কর তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে নূন্যতম এক লাখ টাকা বকেয়া আছে প্রায় পঁচিশ হাজার লোকের কাছে। কর তালিকার বাইরে আছে এর প্রায় পাঁচগুনেরও বেশি। মেলা পরবর্তী সময়ে কর তালিকায় সকল নাগরিকদের আনার জন্য এসেসমেন্টের জন্য লোক পাঠানো হবে। তাই, নাগরিকদের কাছে অনুরোধ আপনারা নিজেরা স্বপ্রোণদিত হয়ে কর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে পৌরকর প্রদান করেন। মেলায় আমরা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ রিবেটের ব্যবস্থা রেখেছি। কোনো হয়রানি যেন না হয়, সেজন্য অনলাইন পোর্টাল খোলা রাখা হয়েছে। ট্রেড লাইসেন্স যেমন ঘরে বসে পাচ্ছেন তেমনি হোল্ডিং ট্যাক্স ও ঘরে বসে দেওয়া যাবে।
প্রশাসক বলেন, নাগরিকদের কর দেওয়া দেশের প্রতি তাদের কর্তব্য। তাই সবাই কর প্রদান করুন। যাদের নিকট অনেক বেশি বকেয়া তাদেরকে অতিশিগ্রই ক্রোকের নোটিস প্রদান করা হবে। ঢাকাকে যদি আমারা পরিবর্তন করতে চাই, তাহলে সিটি কর্পোরেশনকে সাবলম্বী হতে হবে। অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হলে সিটি কর্পোরেশন, যেমন ২৪ ঘণ্টা আপনাদের পাশে আছে, তেমনি আপনাদেরও কর দিয়ে আমাদের সাথে থাকতে হবে।