দেশেই ভবিষ্যৎ গড়ার মতো শিক্ষাব্যবস্থা চান উপদেষ্টা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩১ PM , আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫, ১২:৫৭ PM
অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার বলেছেন, `আমি এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখি, যেখানে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের ভেতরেই তাদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারে। বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থীরা পুরো বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে।'
আজ শনিবার (২৬ এপ্রিল) বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, `সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সির কনভোকেশনে যোগদান করে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। নারীদের শিক্ষায় অগ্রগতির একটি বড় মাইলফলক এটি। অবস্থানের দিক থেকে এমন একটি স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা পুরান ঢাকার বিশাল জনগোষ্ঠীর নারীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এমন একটি স্থানে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাচ্ছি।'
তিনি বলেন, `আজকের এই সমাবর্তন এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন আমরা অধিকারবঞ্চিত প্রজন্মকে অধিকারসমৃদ্ধ নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি—যা সম্ভব হয়েছে হাজারো তাজা প্রাণের আত্মত্যাগের বিনিময়ে। আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি একাত্তরের শহীদদের, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শহীদদের এবং ২০২৪-এর অভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি নতুন বাংলাদেশ। সেই দীপ্ত অঙ্গীকার নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই।'
“শিক্ষকরা যে প্রজ্ঞা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ নাগরিকদের কারিগর হিসেবে গড়ে তুলেছেন, তার জন্য আমি তাদের অভিনন্দন জানাই।”
উচ্চশিক্ষার প্রতিবন্ধকতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, `যে প্রতিবন্ধকতাগুলো রয়েছে, সেগুলো দূর করতে আমরা পদ্ধতিগত পরিবর্তনের উদ্যোগ শুরু করবো এবং তা বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাব। আশা করছি, পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারবো।'
অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, `আপনারা যে আশা নিয়ে সন্তানকে এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেছিলেন, আমি আশা করি তারা সেই আশার প্রতিফলন ঘটাবে এবং ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গড়ার জন্য নিজেদের নিয়োজিত করবে।'
স্নাতকদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, 'বর্তমান চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে একদিকে যেমন প্রযুক্তির উৎকর্ষতা ও নতুন সম্ভাবনা রয়েছে, অন্যদিকে রয়েছে নানাবিধ চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই তোমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।'
`আমি এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করে যেতে চাই, যা সামগ্রিক উন্নয়নের পাশাপাশি আত্মউন্নয়নের পথ রচনা করবে। যা হবে আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষে সহায়ক এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক তৈরির উপযোগী।'
শেষে তিনি বলেন, `আমি এমন শিক্ষা ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখি, যেখানে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের ভেতরেই তাদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারবে এবং বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে পারবে।'
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস. মুরশিদ। এছাড়া ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যবৃন্দ, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।