অভিনেত্রী হিমুর মৃত্যুতে বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

হুমায়রা হিমু ও তার প্রেমিক জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফি ওরফে উরফি
হুমায়রা হিমু ও তার প্রেমিক জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফি ওরফে উরফি   © সংগৃহীত

অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর মৃত্যুর ঘটনায় মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফি ওরফে উরফি জিয়া (৩৭)-কে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তাকে বংশাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসায় হিমু আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়।

র‍্যাব এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। পরে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতেই র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর বংশাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে আত্মহত্যার প্ররোচণার দায়ে অভিযুক্ত জিয়াকে গ্রেপ্তার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জিয়া হিমুর আত্মহত্যার বিষয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে র‍্যাব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, ২০১৪ সালে হিমুর খালাতো বোনের সাথে গ্রেপ্তারকৃত জিয়ার বিয়ে হয়। তবে কিছুদিনের মধ্যে পারিবারিক সমস্যায় তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পারিবারিক আত্মীয়ের সম্পর্কের সুবাদে জিয়ার সাথে ভিকটিম হিমুর পরিচয় হয়। হিমুর খালাতো বোনের সাথে জিয়ার বিবাহ বিচ্ছেদ হলেও হিমু ও জিয়ার মধ্যে যোগাযোগ ছিল।

তিনি আরো বলেন, চার মাস আগে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। এক পর্যায়ে জিয়া হিমুকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়মিত তার বাসায় যাতায়াত করতেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া ও বাকবিতণ্ডা হতো। এছাড়াও বিগত ২/৩ বছর ধরে ভিকটিম হিমু ভিগো লাইভ অ্যাপসে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ হারিয়েছে বলে জানিয়েছে গ্রেপ্তার জিয়া। এসব বিষয় নিয়েও বিভিন্ন সময় তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও মনোমালিন্যের হতো।

আরও পড়ুন: ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা, উত্তপ্ত ক্যাম্পাস

গতকাল বৃহস্পতিবার আনুমানিক বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে জিয়া হিমুর উত্তরার বাসায় যান উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরবর্তীতে অনলাইন জুয়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হিমু ও তার মধ্যে বাকবিতণ্ডার একপর্যায় হিমু জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে হিমু রুমের বাইরে থেকে একটি মই এনে রুমের সিলিং ফ্যান লাগানো লোহার সাথে পূর্ব থেকে বেঁধে রাখা প্লাস্টিকের রশিতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করবেন বলে তাকে জানান।

র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার বলেন, ‘জিয়া জানিয়েছেন, হিমু পূর্বেও ৩/৪ বার আত্মহত্যা করবেন বললেও পরবর্তীতে করেননি। তাই এবার জিয়া বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। কিন্তু হিমু একটু পর বেঁধে রাখা রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ফেলেন। জিয়া তাকে নামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এ সময় সে পাশের রুমে থাকা হিমুর মেকআপ আর্টিস্ট মিহিরকে ডেকে আনেন। পরবর্তীতে মিহির রান্নাঘর থেকে একটি বটি এনে রশি কেটে তাকে নিচে নামান। পরে জিয়া বাসার দারোয়ান এবং মিহিরের সহায়তায় হিমুকে বাসা থেকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হিমুকে মৃত ঘোষণা করেন।

র‍্যাব জানিয়েছে, জিয়া ‘ও’ লেভেল শেষ করে টেক্সটাইল কেমিক্যালের ব্যবসা করতেন। ঘটনার দিন হিমুকে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করার পরে তিনি হিমুর ২টি আইফোন ও ব্যবহৃত গাড়ি নিয়ে দ্রুত হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। পরে গাড়িটি হিমুর উত্তরার বাসার পার্কিংয়ে রেখে দেন এবং মোবাইল ফোন ২টি বিক্রির উদ্দেশ্য নিয়ে রাজধানীর বংশাল এলাকায় পালিয়ে যান।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence