শাবিপ্রবির বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের মতবিনিময়
- শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৭ AM , আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৭ PM
জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ উপলক্ষে জুলাই বিপ্লবের চেতনা সমুন্নত রাখা ও জাতীয় ঐক্যকে সুসংহত করার লক্ষ্যে বন্ধুপ্রতিম ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রশিবির।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাতে সিলেটের আম্বরখানায় ব্রিটানিয়া হোটেলে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আয়োজনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিমিয় সভায় শাবিপ্রবি শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মাসুদ রানা তুহিনের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি তারেক মনোয়ার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র সমন্বয়ক আবু সালেহ মুহাম্মদ নাসিম, সমন্বয়ক পলাশ বখতিয়ার, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি জুনায়েদ আহমদ, এইচআরডি সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি ওয়াসিম মুহাম্মদ শামস, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি ইবরাহীম সৌরভ, জহিরুল ইসলাম ইমন প্রমুখ।
আরও পড়ুন: এবার প্রকাশ্যে এলো শাবিপ্রবি ছাত্রশিবির, উপাচার্যকে দিল ৫২ দফা প্রস্তাব
সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি তারেক মনোয়ার বলেন, ‘দেশের প্রয়োজনে ছাত্রশিবির ফ্যাসিবাদবিরোধী সবার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে প্রস্তুত। ভারতীয় আগ্রাসন প্রতিরোধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগ দেশে নানা অরাজকতা করার চেষ্টা করছে। এসব অরাজকতা প্রতিরোধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র সমন্বয়ক আবু সালেহ মুহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘জুলাইয়ের আন্দোলনে আমাদের সবার ঐক্যের ভিত্তি ছিল আমরা সবাই আওয়ামী লীগবিরোধী। এই ভিত্তির ওপরই আমরা আমাদের ঐক্য বজায় রাখব। জুলাইয়ের আন্দোলনে সবার অংশগ্রহণ রয়েছে, আমরা সবাই মিলেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পলাশ বখতিয়ার বলেন, ‘ছাত্রশিবির গত ১৬ বছর যে জুলুমের শিকার হয়েছে, তা খুবই দুঃখজনক। আওয়ামী লীগ গত ১৬ বছর যে টাকা পাচার করেছে, সেই টাকা এখন কথা বলছে। তারা এসবের মাধ্যমে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। এসবের বিরুদ্ধে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে অর্ধশতাধিক ‘জিয়া ট্রি’ রোপণ
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি জুনায়েদ আহমদ বলেন, ‘স্বাধীনতা অর্জনের চেয়েও রক্ষা করা কঠিন। আমরা ’৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জন করেও রক্ষা করতে পারিনি বলে ’২৪ সালে আবারও স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। সুতরাং আবারও কেউ স্বাধীনতা নস্যাৎ করতে চাইলে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিরোধ করতে হবে।’
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, “স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে জাতীয় ঐক্য অনেক বেশি জরুরি ছিল। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রাহ্য করে একদল দেশকে নিজের সম্পত্তি সাব্যস্ত দেশকে দুরবস্থায় নিয়ে এসেছে। আমরা ’২৪-এ যে নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি, তা যেন ঐক্যের অভাবে হাতছাড়া না হয়। আগে রাজনীতির নীতি ছিল ‘উইনার টেইক্স অল’। ফলে রাজনীতি নিয়ে ছাত্রদের মধ্যে নেগেটিভ ধারণা তৈরি হয়েছে। আমাদের এ অবস্থা থেকে নতুন রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে। ছাত্রদের মূল কাজ হবে পড়াশোনা, পরে রাজনীতি। নতুন রাজনীতি হবে জবাবদিহিতামূলক, শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য।’
জাতীয় ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ওয়াসিম মুহাম্মদ শামস বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রতিটি আন্দোলনে ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা ছিল। কিন্তু আন্দোলন সফল হওয়ার পর ঐক্য ধরে রাখতে না পারায় আন্দোলনের ফসল ঘরে তোলা যায়নি। ক্ষমতাসীনরা ছাত্রদের ঐক্যকে নষ্ট করে আন্দোলনের অর্জনকে ধ্বংস করেছে। ফলে বর্তমানেও ঐক্যবদ্ধ থাকার বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন: তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহার চান শাবিপ্রবির সাবেক ও বর্তমান ছাত্রদল নেতারা
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “একসময় তরুণ প্রজন্ম বলত, ‘আই হেইট পলিটিকস’। কিন্তু ’২৪-এর আন্দোলন ‘আই লাভ পলিটিকস’র ফসল। এটা এখনো জারি রাখা দরকার। রাজনীতিতে ভালো মানুষ না এলে সেখানে খারাপ মানুষ আসবে। রাজনীতির প্রতি অনীহা দূর করার জন্য ছাত্রসংগঠনগুলোর উচিত সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে বসা।’
বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম ইমন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের সব চেষ্টাকে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। পুলিশ বাহিনীতে এখনো রিফর্ম না হওয়ায় একে একে ঝামেলাগুলো ঘটেই যাচ্ছে। ছাত্ররা সব সময় মাঠে থাকতে পারবে না। গুম, খুন, হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে পুলিশ বাহিনীকে রিফর্ম করতে হবে।’